Rabies

দুধেল মোষকে কামড়াল ‘পাগলা’ কুকুর! আতঙ্ক উত্তরপ্রদেশের গ্রামে, জলাতঙ্কের টিকা নিতে হুড়োহুড়ি গ্রামবাসীদের

জলাতঙ্কের জন্য দায়ী র‌্যাবিস ভাইরাস। মূলত লালার মাধ্যমে তা ছড়ায়। র‌্যাবিস আক্রান্ত কুকুর কিংবা অন্য কোনও প্রাণী মানুষকে কামড়ালে সেই ভাইরাস মানুষের দেহেও সংক্রামিত হয়।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:৪৩

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

কুকুরে কামড়ানোর দিনকয়েকের মধ্যেই মৃত্যু হয়েছিল মহিষের। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আতঙ্ক ছড়াল উত্তরপ্রদেশের গ্রামে। বদায়ুঁ জেলার ওই গ্রামে জলাতঙ্কের টিকা নিতে রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে। টিকা নেওয়ার জন্য লাইন দিয়েছেন প্রায় ২০০ জন গ্রামবাসী। যাঁরা গত কয়েক দিনে ওই মোষের দুধ খেয়েছিলেন, টিকা নিতে ছুটেছেন সকলেই।

Advertisement

বদায়ুঁর পিপরাউল গ্রামের ঘটনা। গত সপ্তাহের ২৩ ডিসেম্বর গ্রামের একটি অনুষ্ঠানে গ্রামবাসীদের সকলকে মহিষের দুধ থেকে তৈরি রায়তা খাওয়ানো হয়েছিল। কিন্তু দিন কয়েক পর জানা যায়, আগেই একটি কুকুরে কামড়েছিল মহিষটিকে। গ্রামবাসীদের কথায়, অনুষ্ঠানের দিন কয়েক পর মহিষটির শরীরে জলাতঙ্কের উপসর্গ দেখা দেয়। ২৬ ডিসেম্বর মৃত্যু হয় তার। এর পরেই আতঙ্ক ছড়ায় গ্রামে। যাঁরা যাঁরা সেই অনুষ্ঠানে মহিষের দুধের রায়তা খেয়েছিলেন, সকলে পড়িমড়ি করে জলাতঙ্কের টিকা নিতে ছোটেন।

জানা গিয়েছে, শনিবার থেকেই উঝানি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জলাতঙ্কের টিকা নিতে লাইন দিয়েছেন বিপুল সংখ্যক গ্রামবাসী। এমনই এক স্থানীয় বাসিন্দা যশোদা সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে-কে বলেন, ‘‘গোটা গ্রামের প্রায় সকলেই ওই দিন ভোজ খেতে গিয়েছিলাম। রায়তাও খেয়েছিলাম। কিন্তু এর মধ্যে কুকুরের কামড়ে মহিষটি মারা যাওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।’’ আর এক গ্রামবাসী ধর্মপাল বলেন, ‘‘কুকুরে কামড়ানোর পর মহিষটি উন্মাদ হয়ে গিয়েছিল। জলাতঙ্কে তার মৃত্যু হয়। তাই সংক্রমণের ঝুঁকির কথা ভেবে আমরাও টিকা নিতে বাধ্য হয়েছি।’’

খবর পেয়ে স্বাস্থ্য দফতরের একটি দল ওই গ্রামে পৌঁছেছে। গ্রামবাসীদের পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি টিকাও দিয়েছে তারা। দলের প্রধান চিকিৎসক রামেশ্বর মিশ্রের কথায়, আক্রান্ত পশুর দুধ ফোটানোর পর তা থেকে র‌্যাবিস ভাইরাসের সংক্রমণ হওয়া কার্যত অসম্ভব। তবে সন্দেহ থাকলে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া ক্ষতিকর নয়। চিকিৎসক বলেন, ‘‘সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে গ্রামবাসীদের জলাতঙ্কের টিকা দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকির সামান্যতম সম্ভাবনা থাকলেও সতর্কতা অবলম্বন করাই উচিত। প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ভাল।’’

জলাতঙ্কের জন্য দায়ী র‌্যাবিস ভাইরাস। মূলত লালার মাধ্যমে তা ছড়ায়। র‌্যাবিস আক্রান্ত কুকুর কিংবা অন্য কোনও প্রাণী মানুষকে কামড়ালে সেই ভাইরাস মানুষের দেহেও সংক্রামিত হয়। প্রায় ৮০-৮৫ শতাংশ ক্ষেত্রে কামড় থেকেই জলাতঙ্ক ছড়ায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আক্রান্ত প্রাণীর দুধ কিংবা মাংস খাওয়া থেকেও জলাতঙ্ক ছড়াতে পারে বলে জল্পনা রয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত এর সপক্ষে কোনও প্রামাণ্য উদাহরণ নেই। কিন্তু একবার জলাতঙ্কে আক্রান্ত হলে বাঁচার সম্ভাবনা থাকে না বললেই চলে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রত্যেক বছর জলাতঙ্ক বা র‌্যাবিসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে প্রায় ৫৯ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। তাই এ ধরনের যে কোনও ক্ষেত্রে সব রকম সাবধানতা মেনে চলা উচিত। যদিও বদায়ুঁর স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ওই গ্রামে এখনও পর্যন্ত কোনও গ্রামবাসীর অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর পাওয়া যায়নি। সকলে সুস্থ রয়েছেন।

Advertisement
আরও পড়ুন