Maoists Surrender

ছত্তীসগঢ়ের বস্তার ডিভিশনে আত্মসমর্পণ ১৬ মাওবাদীর! সংগঠন নিয়ে হতাশ ছিলেন সকলে, জানালেন পুলিশ সুপার

নারায়ণপুর জেলার পুলিশ সুপার রবিনসন গুড়িয়া জানান, আত্মসমর্পণকারী ওই মাওবাদীরা মাওবাদের ‘ফাঁপা’ আদর্শের প্রতি বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন। নিরীহ আদিবাসীদের উপর মাওবাদীদের অত্যাচর এবং নিষিদ্ধ ওই সংগঠনে ‘ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ বিরোধ’-এর কারণেও হতাশ হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:১১
ছত্তীসগঢ়ের জঙ্গলে নিরাপত্তাবাহিনীর নজরদারি।

ছত্তীসগঢ়ের জঙ্গলে নিরাপত্তাবাহিনীর নজরদারি। —ফাইল চিত্র।

ছত্তীসগঢ়ের বস্তার ডিভিশনে আত্মসমর্পণ করলেন ১৬ জন মাওবাদী। বুধবার সন্ধ্যায় ছত্তীসগঢ়ের নারায়ণপুর জেলায় পুলিশকর্তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন তাঁরা। এই ১৬ জনের মধ্যে খুব উঁচু পদের কোনও নেতা নেই। তাঁদের কেউ জনতা সরকার, কেউ চেতনা নাট্যমণ্ডলী আবার কেউ মাওবাদীদের পঞ্চায়েত স্তরের বাহিনীর মতো নিচুতলার বিভিন্ন ইউনিটের সদস্য। তবে মাওবাদী কার্যকলাপে তাঁদের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।

Advertisement

নারায়ণপুর জেলার পুলিশ সুপার রবিনসন গুড়িয়া জানান, আত্মসমর্পণকারী ওই মাওবাদীরা মাওবাদের ‘ফাঁপা’ আদর্শের প্রতি বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন। নিরীহ আদিবাসীদের উপর মাওবাদীদের অত্যাচার এবং নিষিদ্ধ ওই সংগঠনে ‘ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ বিরোধ’-এর কারণেও হতাশ হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। সেই কারণেই আত্মসমর্পণের পথ বেছে নিয়েছেন ওই ১৬ জন মাওবাদী। পুলিশ সুপার আরও জানান, মাওবাদী সংগঠনে সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন তাঁরা। মাওবাদীদের সশস্ত্র বাহিনীকে খাবার, ওষুধ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ করতেন আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীরা। পাশাপাশি, অস্ত্র এবং বিস্ফোরক পাচার, কোথাও আইইডি বসানোর কাজেও সাহায্য করতেন তাঁরা। নিরাপত্তাবাহিনীর গতিবিধির বিষয়ে মাওবাদীদের খবর দেওয়ার দায়িত্বও ছিল এই আত্মসমর্পণকারীদের উপরে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়ে দিয়েছেন, ২০২৬ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে মাওবাদীদের নির্মূল করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। সেই মতো মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে ধারাবাহিক অভিযান চালাচ্ছে নিরাপত্তাবাহিনী। এই আবহে সাম্প্রতিক সময়ে আত্মসমর্পণের ঢল নেমেছে বস্তারের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে। মাওবাদীদের হিংসার পথ থেকে সরিয়ে সমাজের মূল স্রোতে ফেরানোর জন্য দীর্ঘ দিন ধরেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ছত্তীসগঢ় সরকার। গত বছর সেই লক্ষ্যে ছত্তীসগঢ় পুলিশ ‘নিয়া নার নিয়া পুলিশ’ (আমাদের গ্রাম, আমাদের পুলিশ) প্রচার কর্মসূচি শুরু করেছিল। তার আগে ২০২০ সালের জুনে শুরু হয়েছিল ‘লোন ভারাতু’ (গোন্ড ভাষায় যার অর্থ ‘তোমার বাড়ি ফিরে যাও’) পুনর্বাসন কর্মসূচি।

ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই গত মার্চে ‘নকশাল আত্মসমর্পণ এবং আক্রান্তদের পুনর্বাসন নীতি ২০২৫’ ঘোষণা করেছেন। আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের পুনর্বাসন, চাকরি, আর্থিক সহায়তা এবং আইনি সুরক্ষা প্রদান করার মতো নানা বিষয় রয়েছে ওই প্রকল্পে। নতুন আত্মসমর্পণ নীতিতে মাওবাদী সংগঠনের রাজ্য কমিটি, আঞ্চলিক কমিটি, কেন্দ্রীয় কমিটি এবং পলিটব্যুরোর সদস্যদের মতো উচ্চপদস্থ ক্যাডারদের অনুদানের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। বুধবার যে ১৬ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছেন, তাঁদেরও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে প্রাথমিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এর পরে সরকারি নীতি অনুসারে তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার।

Advertisement
আরও পড়ুন