Bangladesh Situation

খুলনায় সাংবাদিককে গুলি করে খুন! ঢাকায় সংবাদপত্রের জ্বলতে থাকা অফিসের কর্মীদের ক্রেন নিয়ে উদ্ধার করল দমকলবাহিনী

বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের পর ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় ‘দ্য ডেলি স্টার’ নামে ওই দৈনিকের কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়। ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বহুতলে। আগুন লাগানো হয় ঢাকার কারওয়ান বাজারে ‘প্রথম আলো’-র অফিসেও।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:৪৬
সংবাদপত্র ‘দ্য ডেলি স্টার’-এর অফিস থেকে ক্রেনের সাহায্যে উদ্ধার করা হচ্ছে সাংবাদিকদের।

সংবাদপত্র ‘দ্য ডেলি স্টার’-এর অফিস থেকে ক্রেনের সাহায্যে উদ্ধার করা হচ্ছে সাংবাদিকদের। ছবি: সংগৃহীত।

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর থেকে উত্তাল বাংলাদেশ। জনরোষ থেকে রেহাই পাননি সাংবাদিকেরাও। বৃহস্পতিবার রাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় সে দেশের দুই জনপ্রিয় সংবাদপত্র ‘প্রথম আলো’ ও ‘ডেলি স্টার’-এর দফতরে। ভিতরে আটকে পড়েন সাংবাদিকেরা। দীর্ঘ ক্ষণের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর শেষমেশ ক্রেন এনে দগ্ধ বহুতল থেকে নামানো হয় তাঁদের। অন্য দিকে, বৃহস্পতিবার খুলনায় আততায়ীদের গুলিতে খুন হয়েছেন ইমদাদুল হক মিলন (৪৫) নামে এক সাংবাদিক। তবে নাম একই হলেও ইনি বর্ষীয়ান সাহিত্যিক ও সাংবাদিক ইমদাদুল হক মিলন নন। ‘বর্তমান সময়’ নামে এক পত্রিকায় কর্মরত ইমদাদুল শলুয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি ছিলেন।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাতে ইংরেজি দৈনিক ‘ডেলি স্টার’-এর প্রধান দফতরে অগ্নিসংযোগ করে উন্মত্ত জনতা। কিছু ক্ষণেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে বহুতলে। ভিতরে আটকে পড়েন অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক। প্রাণ বাঁচাতে সকলে বহুতলের ছাদে গিয়ে আশ্রয় নেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় দমকল। আগুন নেবানোর পর ক্রেন এনে আটকে পড়া সাংবাদিকদের নামানো হয়। সেই ঘটনার বিভিন্ন ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)। তাতে দেখা যাচ্ছে, অগ্নিদগ্ধ বহুতলের সামনে বিশাল ক্রেন আনা হয়েছে। তার সাহায্যে ধীরে ধীরে নামানো হচ্ছে সাংবাদিকদের।

এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের পর ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় অবস্থিত ওই দৈনিকের কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়। ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বহুতলে। আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় ঢাকার কারওয়ান বাজারে ‘প্রথম আলো’-র অফিসেও। ভিতরে ঢুকে তছনছ করা হয় কাগজপত্র, কম্পিউটার। ‘ডেলি স্টার’-এর এক মহিলা সাংবাদিক জ়াইমা ইসলাম সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে লেখেন, “আমি ঠিক করে শ্বাস নিতে পারছি না। এখানে খুব বেশি ধোঁয়া। আমি ভিতরে রয়েছি। আপনারা আমাকে হত্যা করছেন।” পরে দমকল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। রাত ২টো নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে সব সাংবাদিককে নিরাপদে উদ্ধার করে আনা হলেও শুক্রবার দুই সংবাদপত্রের কোনও মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশিত হয়নি। নিরাপত্তাজনিত কারণে শুক্রবার বেশির ভাগ সাংবাদিককে ছুটি দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ফলে ডিজিটাল সংস্করণেও কাজের গতি মন্থর।

সংবাদপত্রের দফতরে হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের ইংরেজি সংবাদপত্র ‘নিউ এজ’-এর সম্পাদক নুরুল কবির। বিক্ষোভকারীরা তাঁকেও হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। চুলের মুঠি ধরে বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে। সেই ঘটনারও একাধিক ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ঘুরছে।

বৃহস্পতিবার রাতে হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই ঢাকার শাহবাগে জমায়েত করেছিলেন বহু মানুষ। তার পরেই দেশের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ শুরু হয়। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি নিয়ে চিন্তিত মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারও। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে শনিবার ঢাকায় উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডাকা হয়েছে।

Advertisement
আরও পড়ুন