পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ। —ফাইল চিত্র।
সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমন করতে শনিবার আবার বৈঠকে বসেছে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান। তুরস্কের ইস্তানবুলে সেই বৈঠক হচ্ছে। তার মাঝেই যুদ্ধের আশঙ্কার কথা শোনালেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ। তাঁর দাবি, ইস্তানবুলে চলমান আলোচনায় আফগানিস্তানের সঙ্গে যদি একটি শান্তিচুক্তিতে পৌঁছোনো না যায়, তবে ‘খোলাখুলি’ যুদ্ধ শুরু হতে পারে। আসিফকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স বলে, ‘‘আফগানিস্তান শান্তি চায়, তবে কোনও চুক্তিতে পৌঁছোতে ব্যর্থতা মানেই খোলাখুলি যুদ্ধ।’’
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে পাকিস্তানের বিমান হামলা এবং তার পরবর্তী সময়ে তালিবান সরকারের জবাব দুই দেশের সীমান্তকে উত্তপ্ত করে তুলেছিল। বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি নিয়ে সমঝোতা হয়েছে। তবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এখনও তলানিতে।
গত শনিবার কাতারের রাজধানী দোহাতে প্রথম দফার বৈঠকে বসেছিল পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান। ওই বৈঠকের নেতৃত্বে ছিলেন আফগানিস্তান ও পাকিস্তান দুই দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মৌলবি মহম্মদ ইয়াকুব মুজাহিদ ও খোয়াজা আসিফ। তবে দীর্ঘ বৈঠকের পরেও কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছোতে পারেনি কাবুল এবং ইসলামাবাদ। তার মধ্যেই মাঝে মাঝে সীমান্তে উত্তেজনার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
প্রথম দফার বৈঠকে রফাসূত্র বার না-হলেও শনিবার থেকে শুরু হওয়া দ্বিতীয় দফার আলোচনা দিকে তাকিয়ে পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান। শুধু তা-ই নয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলির নজরও রয়েছে এই বৈঠকের দিকে। সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে খবর, সীমান্তে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার উপর জোর দেবে দুই দেশই। তালিবান সরকার চায় আফগানিস্তানের আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষা করতে। অন্য দিকে, ইসলামাবাদের দাবি, আফগানিস্তানের মাটি থেকে সংগঠিত সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ পাকিস্তানের কাছে হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই হুমকি মোকাবিলা করতে পদক্ষেপ করা হবে। যদিও পাকিস্তানের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তালিবান সরকার। তারা বার বার স্পষ্ট করেছে, আফগানিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাসবাদীদের কোনও জায়গা নেই।
পাকিস্তানে দীর্ঘ দিন ধরে সক্রিয় তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা টিটিপি। আফগানিস্তানে যে তালিবান ক্ষমতাসীন, তাদেরই একটি শাখা পাকিস্তানি তালিবান। ইসলামাবাদের দাবি, আফগানিস্তান এবং ভারতের মদতে এই গোষ্ঠী পাকিস্তানের মাটিতে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালায়। কাবুল এবং নয়াদিল্লি বার বার এই দাবি অস্বীকার করেছে। সেই আবহে সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে শনিবারের বৈঠক খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত অনেকের।