—প্রতীকী ছবি।
শিক্ষা আনে চেতনা আর চেতনার ছাপ পড়ে জীবনধারায়। তাই নাবালিকা বিবাহ রুখতে শিক্ষার প্রসার অত্যন্ত জরুরি। দেশে ১৮ বছর পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হলে ২০৩০ সালের মধ্যে নাবালিকা বিবাহ মুক্ত ভারত গড়ে তোলা সম্ভব। এমনটাই উঠে এসেছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সমীক্ষায়। ওই সংগঠনটি দাবি করেছে, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের ইস্তাহারে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করুক।
রাষ্ট্রপুঞ্জের সুস্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রায় বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে নাবালিকা বিবাহ নির্মূল করতে হবে। নাবালিকা বিবাহ অনেকটাই নির্ভর করে শিক্ষা এবং আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির উপরে। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির দাবি, ১৮ বছরের কম বয়সিদের যদি বিনামূল্যে ও বাধ্যতামূলক ভাবে শিক্ষার ব্যবস্থা করা যায়, তা হলে তা নাবালিকা বিবাহ নির্মূলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। কারণ, শিক্ষা এবং নাবালিকা বিবাহের মধ্যে একটি ব্যস্তানুপাতিক সম্পর্ক রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে ওই সংস্থাটি তুলে ধরেছে কেরলের পরিস্থিতি। ওই দক্ষিণী রাজ্যে নারী শিক্ষার হার ৯৬ শতাংশ। কেরলে নাবালিকা বিবাহের হার ৬ শতাংশের নীচে। যেখানে জাতীয় স্তরে নাবালিকা বিবাহের হার ২৩.৩ শতাংশ। বিহারে নারী শিক্ষার হার ৬১ শতাংশ। পশ্চিমবঙ্গের ওই পড়শি রাজ্যে নাবালিকা বিবাহের হার ৪১ শতাংশ দাঁড়িয়ে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ১৬০টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন একজোট হয়ে একটি গবেষণা পত্র প্রকাশ করেছে। তারা দেশ জুড়ে নাবালিকা বিবাহ-বিরোধী প্রচারে শামিল হয়েছে। ওই গবেষণা পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে নাবালিকা বিবাহ একটি ‘সামাজিক অপরাধের সমতুল্য’।
‘চাইল্ড ম্যারেজ ফ্রি ইন্ডিয়া’র পলিসি অ্যান্ড রিসার্চের অধিকর্তা জ্যোতি মাথুরের কথায়, ‘‘কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয়ই যদি নাবালিকা বিবাহ বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ করে, প্রতিটি শিশুকে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত বিনামূল্যে ও বাধ্যতামূলক ভাবে শিক্ষা প্রাঙ্গণে নিয়ে আসতে পারে তা হলে নাবালিকা বিবাহ রোখার গতি ত্বরান্বিত হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশ নাবালিকা বিবাহ মুক্ত হবে।’’
ওই সমীক্ষায় পশ্চিমবঙ্গের ছবিটা একটু ভিন্ন। বালিকাবধূর সংখ্যাবৃদ্ধিতে দেশে ‘এগিয়ে বাংলা’। এ রাজ্যে নারী শিক্ষার হার ৭৭ শতাংশ। কিন্তু নাবালিকা বিবাহের হার বিস্ময়কর ভাবে ৪২ শতাংশের উপরে। তা হলে প্রশ্ন উঠছে, শিক্ষার প্রসার বাংলায় নাবালিকা বিবাহ আটকাতে পারছে না কেন? ওই সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ‘নাবালিকা বিবাহ রুখতে শিক্ষার একটি অগ্রণী ভূমিকা আছে ঠিকই। কিন্তু শিক্ষার পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি এবং ওই অঞ্চলের সাংস্কৃতিক প্রভাবও নাবালিকা বিবাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকে’।
সর্বশেষ জাতীয় পারিবারিক স্বাস্থ্য সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, দেশে ২০-২৪ বছর বয়সি ২৩.৩ শতাংশ মেয়ের ১৮ বছরের আগে বিয়ে হয়েছিল। ২০১১ সালের জনগণনার রিপোর্টে উল্লেখ, যে প্রতি ৩ জনের মধ্যে ২ জন মেয়েকে ১৫-১৭ বছর বয়সের মধ্যে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy