E-Paper

খরচ তুলতে হবে বুথ থেকে, পথে কর্মীরা

সিপিএমের দাবি, ওই টাকায় বুথের দেওয়াল রং করা থেকে লেখা, পতাকা-ফেস্টুন, মাইক, ভোটের দিনের বুথ খরচ পর্যন্ত ধরা আছে।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:৫৮
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নির্বাচনী-বন্ড আর তার টাকার অঙ্ক নিয়ে তোলপাড় সারা দেশ। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের স্বামী, অর্থনীতিবিদ পরাকলা প্রভাকর নির্বাচনী বন্ড বিশ্বের ‘সবচেয়ে বড় দুর্নীতি’ বলে দাবি করেছেন। সিপিএমও নির্বাচনী বন্ডের টাকা বাজেয়াপ্ত করার দাবি তুলেছে। এ বার পূর্ব বর্ধমান জেলা সিপিএম জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় ভাবে নয়, বুথের নির্বাচনী খরচ সংশ্লিষ্ট বুথ বা গ্রাম থেকেই তুলতে হবে। কোনও বুথ তুলনামূলক বেশি চাঁদা আদায় করলেও তা নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি খরচ করা যাবে না। বিভিন্ন এরিয়া কমিটি গ্রামীণ এলাকায় বুথ পিছু তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা খরচ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। আবার শহরাঞ্চলে খরচের লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা বেশি।

সিপিএমের দাবি, ওই টাকায় বুথের দেওয়াল রং করা থেকে লেখা, পতাকা-ফেস্টুন, মাইক, ভোটের দিনের বুথ খরচ পর্যন্ত ধরা আছে। শুধু কৌটো হাতে নয়, কুপন ছাপিয়ে নির্বাচনী তহবিলের অর্থ সংগ্রহ শুরু হয়েছে। গত নভেম্বর-ডিসেম্বরে প্রচারপত্র দিয়ে অর্থ সাহায্যের আবেদন করেছিল দল। জেলা সিপিএমের সম্পাদক সৈয়দ হোসেন বলেন, “বুথের নির্বাচনী খরচ বুথ থেকেই তুলতে হবে। কোনও বুথ কম, আবার কোনও বুথ বেশি অর্থ সংগ্রহ করতেই পারে। সামঞ্জস্যের ব্যাপারে এরিয়া কমিটিগুলি সিদ্ধান্ত নেবে।” পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৩১টি এরিয়া কমিটি রয়েছে। সিপিএম সূত্রে জানা যায়, গ্রামের চেয়ে শহরাঞ্চলে বুথের নির্বাচনী খরচ বেশি। সেই কারণে শহরের এরিয়া কমিটিগুলি বুথের খরচ বেশি তোলার নির্দেশ দিয়েছে। যে সব এরিয়া কমিটি খরচের লক্ষ্যমাত্রার বেশি অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে, তার একটা অংশ জেলা নির্বাচনী তহবিলে দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

সিপিএমের দাবি, প্রতিটি বুথের অন্তত ৮০ শতাংশ পরিবারের কাছে পৌঁছতে হবে। চাপ দিয়ে নয়, যে যেমন সাহায্য দেবে, সেটাই নিতে হবে। তার সঙ্গে কেন তাঁরা নির্বাচনী তহবিল জোগাড় করছেন, সেটাও বোঝাতে হবে। নির্বাচনী বন্ডের দুর্নীতিতে বিজেপি-তৃণমূল একসূত্রে বাঁধা বলে প্রচারও করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচনের জন্য অর্থ সংগ্রহ সিপিএমের নতুন নয়। এ বারও দলের সদস্যদের একদিনের রোজগার নির্বাচনী তহবিলে দিতে বলা হয়েছে। সিপিএমের জেলার এক নেতার কথায়, “এ বার বুথের খরচ সংশ্লিষ্ট বুথ থেকেই তুলতে হবে। তা করতে গিয়ে অনেক বুথের কর্মীরা হাঁপিয়ে উঠছেন। লাল রঙের দাম এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। অনেক বুথে অপটু-শিল্পীরাই দেওয়াল লিখছেন।” নির্বাচনী তহবিল গড়তে ১০, ২০, ৫০ টাকার কুপন ছাপা হয়েছে। এ ছাড়াও রসিদ বই রয়েছে।

বিরোধীদের কটাক্ষ, ১৩ বছর আগে সিপিএমকেও রাস্তায় নেমে চাঁদা তুলতে দেখা যেত না। এখন দলের সদস্য কমছে, লেভি আদাযও কমছে। আবার ক্ষমতায় না থাকায় দলের তহবিলে ‘দান’ ও কমেছে। তাই বাধ্য হয়েই বুথের উপরে ‘চাপ’ বাড়িয়েছে সিপিএম। বিজেপির মুখপাত্র সৌম্যরাজ বন্দ্যাপাধ্যায় বলেন, “বুথের খরচ বুথ থেকে তোলা সম্ভব নাকি? ও সব লোক দেখানো। সবাই সব বোঝেন।” তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাসের কটাক্ষ, “২০১১ সালের আগে তো এ সব শোনা যায়নি। ক্ষমতায় থেকে তখন দেদার খরচ করত। কৌটো নাড়িয়ে যে সেই টাকা আসত না, সেটা মানুষ জানেন।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকের যদিও দাবি, “সাধারণ মানুষের দানেই আমরা নির্বাচনে লড়ি। তাই কমিশনের বেঁধে দেওয়া খরচের অর্ধেকও খরচ করতে পারব না।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 Bardhaman CPIM

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy