গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুং। —ফাইল চিত্র।
গোর্খাল্যান্ড বা আলাদা রাজ্যের দাবি শুধু নয়, কেন্দ্র ও রাজ্যকে পাহাড় নিয়ে আলোচনায় বসার কথা বললেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুং। গত কয়েকদিন ধরে সংগঠন চাঙ্গা করতে পাহাড়ে ঘুরে ঘুরে দলকে সংগঠিত করার কাজে নেমেছেন গুরুং। সেখানে নতুন করে আলাদা রাজ্য, ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের দাবি তুলছেন। আবার কারও নাম না করলেও গোর্খাদের দাবির সঙ্গে তিনি কোনও সমঝোতা করেননি বলেও জানাচ্ছেন। গত দু’দিন ধরে পানিঘাটা, চেঙ্গা, লোহাগড়, বেলগাছি থেকে নেপানিয়ার মতো বেশ কিছু তরাই এলাকায় ঘুরছেন।
সভায় মোটামুটি সাড়া মিলছে বলে গুরুংপন্থীদের দাবি। তাই বড় সভার চেয়ে এলাকাভিত্তিক পথসভা, গ্রামসভার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। সেখানে নতুন করে গোর্খাদের দাবিকে সামনে এনে তিনি দলকে মজবুত করতে চাইছেন বলে পাহাড়ের নেতারা মনে করছেন। গুরুংয়ের বিরোধীরা বলছেন, ভোট এলেই গুরুংয়ের এ সব প্রতিবার মনে পড়ে। আসলে দল বাঁচাতে গুরুং ভোটের আগে চরকি পাক খাচ্ছেন বলে তাঁরা জানাচ্ছেন। তবে গুরুং বলেছেন, ‘‘আমি জাতির দাবি কোথাও বিক্রি করিনি। গোর্খাদের স্বাভিমান বজায় রাখার কাজ করি। আমাদের গোর্খাল্যান্ড পেতেই হবে। কেন্দ্র ও রাজ্যকে বলব এই নিয়ে বৈঠকে বসতে। দিনের পর দিন গোর্খাদের দাবি উপেক্ষা করা হচ্ছে।’’
দলীয় সূত্রের খবর, ২০১৭ সালের পর থেকে গুরুংয়ের দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা দুর্বল হতে শুরু করে। বিধানসভা, পুরসভা ভোটে লড়াই করেই গুরুং বুঝে যান, তাঁর আর সেই জনভিত্তি নেই। তাই জিটিএ-র বিরোধিতা করে তিনি জিটিএ ভোটে সরাসরি অংশ নেননি। যদিও নির্দল প্রার্থীদের নিয়ে তিনি চেষ্টা চালিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। তাতেও খুব সাড়া পাননি। আদতে এক সময়কার দলের নাম করা নেতানেত্রীরা এখন সবই প্রায় প্রজাতান্ত্রিক মোর্চায়। দলের সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরিকেও সময়ে সময়ে মাঠে-ময়দানে দেখা যায় না। তাঁর কিছু শারীরিক অসুবিধাও রয়েছে। সেখানে যুব এবং নারী মোর্চার কিছু নেতানেত্রীকে নিয়ে গুরুং দল চালাচ্ছেন বলে খবর।
ভোটের আগে পাহাড়ের পুরনো দাবি তুলে তিনি প্রাসঙ্গিক হতে চাইছেন বলেই নেতারা মনে করছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, তৃণমূল এবং প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার দিক থেকে গুরুংয়ের জন্য দরজা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অজয় এডওয়ার্ড, বিনয় তামাংদের সঙ্গে গুরুংকে বিভিন্ন সময়ে দেখা গেলেও ভোটে তাঁরা কতটা গুরুংকে পাশে নেবেন তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। আবার বিজেপি-জিএনএলএফও এখন গুরুংয়ের জনভিত্তি দেখে কতটা উৎসাহিত তা পরিষ্কার নয়। গেরুয়া শিবিরে গুরুং অবশ্য পঞ্চায়েত ভোটে ছিলেন। পরে নিজেই সেখান থেকে বার হয়ে আসেন।
মোর্চার এক পুরনো নেতার কথায়, ‘‘এক সময় কোনও এলাকায় গিয়ে গুরুং হুট করে ডাকলেও শতাধিক মানুষ আসতেন। এখন আগাম বলার পরেও হাতেগোনা মানুষ শুনছেন। আসলে দলের সাংগঠনিক ভিত্তি অনেকটা নষ্ট হয়েছে। ভোটের আগে সেটা ফের চাঙ্গা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy