—প্রতীকী ছবি।
গত লোকসভা ভোটের দ্বিতীয় দফার তুলনায় এ বার কমেছে ভোটদানের হার। নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে সংশ্লিষ্ট তিনটি আসন মিলিয়ে ভোটদানের হার ছিল ৮০.৬২ শতাংশ। এ বার দ্বিতীয় দফায় দার্জিলিং, রায়গঞ্জ এবং বালুরঘাট মিলিয়ে ভোট পড়েছে ৭৬.৫৮ শতাংশ। কেন চার শতাংশ ভোট কম পড়ল, তা নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলি। ধন্দে নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকেরা। রায়গঞ্জ, বালুরঘাট, চোপড়া, শিলিগুড়িতে তীব্র গরমের জন্য যেমন ভোট কম পড়তে পারে, তেমনই প্রযুক্তি-নির্ভর নজরদারিতে ভুয়ো ভোট কমেছে কি না, তা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে।
কমিশনের খবর, শুক্রবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত বালুরঘাটে ভোটদানের হার ছিল ৭২.৩০%, দার্জিলিংয়ে ৭১.৪১% এবং রায়গঞ্জে ৭১.৮৭%। শনিবার বিকেল পর্যন্ত কমিশনের দেওয়া তথ্যে ওই তিন কেন্দ্রে ভোটদানের হার বেড়ে হয়েছে যথাক্রমে ৭৯.০৯%, ৭৪.৭৬% ও ৭৬.১৮%। দার্জিলিংয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত স্ক্রুটিনি চলেছে বলে খবর। অথচ ২০১৯ সালে বালুরঘাটে ভোট পড়েছিল ৮৩.৬০%, দার্জিলিংয়ে ৭৮.৭৩% এবং রায়গঞ্জে ৭৯.৫৪%।
প্রশাসনিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ভোটে কারচুপি রুখতে একশো শতাংশ বুথে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই)-যুক্ত ‘ওয়েবকাস্ট’ পদ্ধতি চালু করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। প্রতি বুথে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভোট প্রক্রিয়া সরাসরি কমিশনের কন্ট্রোল রুমে সম্প্রচারিত হয়। এআই থাকার কারণে বিশেষ কোনও ঘটনার ইঙ্গিত মিললে তৎক্ষণাৎ সঙ্কেত যায় কমিশনে। তাই পরিস্থিতির সামান্যতম হেরফেরেই সঙ্কেত এসেছে, ঘটনাস্থলে যেতে হয়েছে ‘কুইক রেসপন্স টিম’-কে। ভোট চলাকালীন এক প্রিসাইডিং অফিসারকে কমিশন ওই প্রযুক্তির সূত্রেই সরিয়েছে এবং কারণ দর্শানোর নোটিস ধরানো হয়েছে। এর উপর রয়েছে মাইক্রো অবজ়ারভার, সাধারণ পর্যবেক্ষক, পুলিশ পর্যবেক্ষক ও খরচ সংক্রান্ত পর্যবেক্ষকদের নজর। তাই ভুয়ো ভোট এড়ানো অসম্ভব নয়।
আছে তীব্র দহনও। গৌড়বঙ্গে প্রবল গরম চলছে। শুক্রবার কোনও কোনও এলাকায় তাপপ্রবাহ চলেছে। দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত পাহাড়ি এলাকা বাদ দিলে সমতলেও তাপের দাপট আছে। তাই অনেকে ভোট দিতে বেরোতে উৎসাহ পাননি বলেও মনে করা হচ্ছে। তবে কেউ কেউ মনে করাচ্ছেন, প্রতি বছর গ্রীষ্মে লোকসভা, বিধানসভা ভোট হয়। গরম উপেক্ষা করে ভোটের লম্বা লাইনের সচিত্র প্রমাণও আছে। ভোটদানের হারেও তা প্রতিফলিত হয়। তবে কি জনকল্যাণ নীতির বদলে রাজনৈতিক অভিসন্ধির তরজায় আম-জনতা কষ্ট করে ভোটদান থেকে মুখ ফেরাচ্ছেন?
সেই প্রশ্নও তুলছেন অনেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy