জয়রাম রমেশ। —ফাইল চিত্র।
নির্বাচনী বন্ড নিয়ে ফের সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে বিশেষ দলের মাধ্যমে (সিট) তদন্ত দাবি করল কংগ্রেস। সেই সঙ্গে তাদের দাবি, ‘অস্বচ্ছ’ এই প্রকল্পের মাধ্যমে কাজের বরাত পাওয়ার আগে, পরে এমনকি কেন্দ্রীয় সংস্থার হানার পরে ঘুষ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিল বিজেপি সরকার।
আজ এক সাংবাদিক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কড়া সমালোচনা করেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ। তাঁর দাবি, যিনি কালো টাকা ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনিই দুর্নীতিকে আইনি রূপ দিয়েছেন। এখন আবার তা প্রাণপণে লুকোনোর চেষ্টা করছেন।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করেছে এই প্রকল্পের নোডাল আর্থিক প্রতিষ্ঠান এসবিআই। সুপ্রিম কোর্টে এসবিআইয়ের তরফে জানানো হয়েছিল, কোন দল কোন দাতার কাছ থেকে কত টাকা পেয়েছে তা জানাতে কয়েক মাস সময় লাগবে। রমেশের দাবি, মাত্র ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে ‘পাইথন’ সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে এসবিআই প্রকাশিত তথ্যভান্ডার থেকে এই তথ্য খুঁজে পেয়েছে কংগ্রেসের বিশ্লেষক দল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এসবিআইয়ের দাবি একেবারেই অবিশ্বাস্য। তারা ভোট না শেষ হওয়া পর্যন্ত পূর্ণ তথ্য প্রকাশ রুখতে চেয়েছিল।’’
রমেশের মতে, নির্বাচনী বন্ডে চার ধরনের লেনদেনের কথা জানতে পেরেছেন তাঁরা। তাঁর কথায়, ‘‘এই চারটি ধরন হল চান্দা দো, ধান্দা লো (বরাত পাওয়ার আগে অনুদান),
ঠেকা লো, রিশবত দো (বরাত পাওয়ার পরে অনুদান), হাফতা উসুলি (তদন্তকারী সংস্থার হানার পরে চাপ দিয়ে নেওয়া অনুদান) ও ফরজ়ি কোম্পানি (ভুয়ো কোম্পানি)।’’
রমেশের দাবি, ৩৮টি কর্পোরেট গোষ্ঠী বন্ডের মাধ্যমে বিজেপিকে অনুদান দিয়ে ১৭৯টি বড় কাজের বরাত বা প্রকল্পে কাজ শুরুর অনুমতি পেয়েছে। সেই কাজের অর্থমূল্য ৩.৮ লক্ষ কোটি টাকা। তার বদলে তারা বন্ডের মাধ্যমে ২,০০৪ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে।
রমেশের দাবি, ৫৫১ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার তিন মাসের মধ্যে কেন্দ্র বা নানা রাজ্যের বিজেপি সরকার ওই সংস্থাগুলিকে ১.৩২ লক্ষ কোটি টাকার বরাত দিয়েছিল। আবার ৬২ হাজার কোটি টাকার কাজের বরাত পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে বিভিন্ন সংস্থা বন্ডে ৫৮০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছিল। কংগ্রেস মুখপাত্রের দাবি, এর পরে রয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থার হানার পরে চাপ দিয়ে পাওয়া অর্থ। তাঁর কথায়, ‘‘৪১টি কর্পোরেট সংস্থায় ৫৬ বার ইডি, সিবিআই ও আয়কর দফতর হানা দিয়েছে। তারা বিজেপিকে বন্ডের মাধ্যমে ২,৫৯২ কোটি টাকা দিয়েছিল। তার মধ্যে ১,৮৫৩ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্থার হানার পরে।’’
রমেশের দাবি, এর পরে রয়েছে ১৬টি ভুয়ো সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া ৪১৯ কোটি টাকা। ভুয়ো সংস্থাগুলি বিভিন্ন দলকে ৫৪৩ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে। রমেশের বক্তব্য, ‘‘এই সংস্থাগুলির মধ্যে অনেকগুলি অর্থ মন্ত্রকের টাকা পাচার সংক্রান্ত নজরদারি তালিকায় রয়েছে। কয়েকটি কোম্পানি আবার তৈরি হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যে কোটি কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে। আবার কয়েকটি তাদের মূলধনের চেয়ে অনেক বেশি টাকা অনুদান খাতে ব্যয় করেছে।’’
রমেশের দাবি, ইন্ডিয়া মঞ্চের সরকার হলে নির্বাচনী বন্ড নিয়ে তদন্ত করবে বিশেষ দল। অন্য একটি বিশেষ দল খতিয়ে দেখবে পিএম-কেয়ার্স তহবিলের কার্যকলাপ। আদানি গোষ্ঠীর কার্যকলাপ খতিয়ে দেখতে গঠন করা হবে যৌথ সংসদীয় কমিটি।
সংবাদ সংস্থা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy