E-Paper

পরিযায়ী শ্রমিক সংগঠন পোক্ত করতে মন বামের

সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার শুধু যোগাযোগ রক্ষা করাই নয়, শুরু হয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদের নবগঠিত সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহণ করানোর কর্মসূচি।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:৩২
—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

লোকসভা নির্বাচনের আগে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে আলাদা সংগঠন গড়েছে সিপিএম। জেলার পরিযায়ী শ্রমিকেরা যাতে সেই সংগঠনে যোগ দেন তার জন্য সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়েছে সিপিএম। চেষ্টা চলছে বিভিন্ন সমস্যায় পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে থাকার। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এ ভাবে পরিযায়ী শ্রমিকদের ভোট নিশ্চিত চাইছে সিপিএম। যদিও সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, এই সংগঠনের কাজকর্মের সঙ্গে নির্বাচন বা রাজনীতির সরাসরি কোনও
যোগ নেই।

সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার পরিযায়ী শ্রমিকদের নামের তালিকা, ঠিকানা ও ফোন নম্বর সংগ্রহ করার কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। শুরুটা হয়েছিল করোনার সময় থেকে। অতিমারিতে কাজ হারিয়ে বাড়ি ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবার বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে। সেই সময় পরিযায়ী শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন সিপিএম কর্মী-সদস্যেরা। সেই সময় থেকে জেলার পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে সিপিএমের নেতা-কর্মীদের যোগাযোগের জায়গা তৈরি হয়। অতিমারির পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও যোগাযোগ একেবারে মুছে যায়নি। গঠিত হয় ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল মাইগ্রেন ওয়ার্কাস ইউনিয়ন’।

সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার শুধু যোগাযোগ রক্ষা করাই নয়, শুরু হয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদের নবগঠিত সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহণ করানোর কর্মসূচি। সংগঠনের দাবি, এই মুহূর্তে জেলায় সদস্য সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। যাঁদের মাধ্যমে অন্য পরিযায়ী শ্রমিকদের এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা চলছে।

সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, জেলার মোট পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় আড়াই লক্ষ। সংগঠনের পক্ষ থেকে দু’ভাবে জেলার শ্রমিকদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। স্থানীয় নেতৃত্বের কাছ থেকে পাওয়া তালিকার পাশাপাশি যে সব পরিযায়ী শ্রমিক সংগঠনের সদস্য হয়েছেন তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য থেকেও তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এই সব সদস্য যেখানে কর্মরত সেই এলাকায় কর্মরত নদিয়া জেলার অন্যান্য পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর সংগ্রহ করে পাঠাচ্ছেন। দুটো তালিকা মিলিয়ে একটি চুড়ান্ত তালিকা তৈরি করা হচ্ছে বলে সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে। সেই তালিকা অনুযায়ী কর্মরত পরিযায়ী শ্রমিকদের কর্মস্থানের সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে
নেতৃত্বের দাবি।

সিপিএমের এক জেলা নেতার কথায়,“অনেক ক্ষেত্রেই কর্মস্থানে বেতন নিয়ে মালিকের সঙ্গে সমস্যা হয়। কাজ করিয়ে বেতন না-দেওয়া বা কম বেতন দেওয়ার ঘটনা আকছার ঘটে থাকে। আমরা সেই সব ক্ষেত্রে আমাদের সদস্যদের মাধ্যমে মালিক পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেই সমস্ত সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করছি। বহু ক্ষেত্রেই সাফল্য আসতে শুরু করেছে।”

জেলার রাজনৈতিক মহলের অনুমান, দীর্ঘদিন পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে থেকেছে সিপিএম। লোকসভা নির্বাচনের আগে তাঁদের ভোট যাতে সিপিএমের ঝুলিতে আসে, এখন সেই চেষ্টা চলছে।জেলার অনেক বাম নেতাই সে কথা আড়ালে মানছেন। যদিও সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর অন্যতম সদস্য তথা ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল মাইগ্রেন ওয়ার্কাস ইউনিয়ন’-এর নদিয়া জেলা কমিটির সম্পাদক দেবাশিস আচার্য বলছেন, “নির্বাচনের জন্য নয়, আমরা পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে থেকে তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে লড়াই করছি। এ বার তাঁরা তাঁদের অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে শত্রু-মিত্র চিনে নিয়ে সেই মতো
ভোট দেবেন।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 CPIM migrant labour

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy