E-Paper

‘ইন্ডিয়া’য় থেকেই নতুন সমান্তরাল জোটে তৃণমূল? মমতার বার্তায় আবার জল্পনা ‘তৃতীয় বিকল্পের’

রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, অ-কংগ্রেসি এবং অ-বাম একটি ‘জিঞ্জার’ গোষ্ঠীর সঙ্গেই নিজেদের সংযোগ রাখতে চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। অর্থাৎ বিরোধী জোটের মধ্যে জোট।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:২৩
রাহুল গান্ধী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

রাহুল গান্ধী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) প্রধান তথা ঝাড়খণ্ডের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের গ্রেফতার নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই গ্রেফতারির প্রতিবাদে দলনেত্রী নির্দেশে আজ লোকসভা এবং রাজ্যসভায় কক্ষত্যাগ করলেন তৃণমূল সাংসদেরা। অন্য বিরোধীরাও একই কারণে কক্ষত্যাগ করলেও, কিন্তু তৃণমূল ‘ইন্ডিয়া’র সঙ্গে এক ছাতার তলায় আসতে চাইল না। মমতার দল জানাচ্ছে, তারা নিজেদের মতো করে কক্ষত্যাগ করেছে। রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, অ-কংগ্রেসি এবং অ-বাম একটি ‘জিঞ্জার’ গোষ্ঠীর সঙ্গেই নিজেদের সংযোগ রাখতে চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। অর্থাৎ বিরোধী জোটের মধ্যে জোট।

জমি দুর্নীতি মামলায় গত পরশু হেমন্তকে গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তার প্রতিবাদে মমতা এক্স হ্যান্ডলে আজ লেখেন, ‘একজন শক্তিশালী জনজাতি নেতা হেমন্ত সোরেনের অন্যায় গ্রেফতারের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বিজেপি সমর্থিত কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি সুপরিকল্পিত ভাবে এই কাজ করছে, যার উদ্দেশ্য জনতার রায়ে জিতে আসা সরকারগুলিকে টেনে নামানো। তিনি আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু, আর নির্দ্বিধায় তাঁর পাশে আছি। এই কঠিন সময়ে তিনি গণতন্ত্রকে রক্ষার কাজে ব্রতী’।

হেমন্তের পাশে দাঁড়িয়ে বিজেপি-বিরোধিতা করলেও আজ কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের সংসদীয় কক্ষে যায়নি তৃণমূল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে অনুপস্থিত সমাজবাদী পার্টি (এসপি), আপ-এর সংসদীয় নেতারাও। রাজনৈতিক শিবিরের মতে এসপি, আপ, জেএমএম এমনকি শিবসেনাও তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপি বিরোধিতার প্রশ্নে সংযোগ রেখে চলছে, কংগ্রেসের সঙ্গে তারা স্বচ্ছন্দ নন। আজ ফের সেই ছবিটাই উঠে এল বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। তবে আজ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ ঝাড়খণ্ডে প্রবেশ করলে রাজ্যের নতুন মুখ্যমন্ত্রী চম্পাই সোরেনকে দেখা গিয়েছে সেখানে উপস্থিত থেকে রাহুলকে স্বাগত জানাতে।

তৃণমূল নেত্রী লাগাতার অভিযোগ করছেন, তাঁরা পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা চেয়েছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস রাজি হয়নি। বরং, তারা সিপিএমের সঙ্গে গিয়েছে। এই প্রসঙ্গে এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ আজ বলেন, “মমতা বার বার বলছেন, তাঁর
লক্ষ্য বিজেপিকে হটানো। কংগ্রেসের লক্ষ্যও তা-ই। ‘ইন্ডিয়া’ তৈরি হচ্ছে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রের জন্য। বাংলা, মহারাষ্ট্র বা কোনও রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য এই জোট নয়। রাজ্যে রাজ্যে ‘ইন্ডিয়া’র শরিকেরা একে অপরের বিরুদ্ধে লড়তে পারে। কিন্তু জাতীয় স্তরে তারা সকলে এক।” জয়রাম মনে করিয়ে দিয়েছেন, পটনা, বেঙ্গালুরু, মুম্বই বা দিল্লি— যেখানেই এখনও পর্যন্ত ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠক হয়েছে, সেখানে কংগ্রেসের পাশাপাশি, তৃণমূল ও সিপিএম, দু’দলই উপস্থিত ছিল।

কিন্তু মমতা যে এখন কংগ্রেসের দিকে নির্দিষ্ট অভিযোগ করছেন, তা নিয়ে জয়রামের প্রতিক্রিয়া, “নির্দিষ্ট অভিযোগের উত্তর দেওয়ার জায়গা এটা নয়। এখন আমরা ন্যায় যাত্রায় আছি। এই নিয়ে পরে কথা হবে।” সংসদেও বিরোধী দলের বৈঠকে তৃণমূল হাজির না থাকা নিয়ে জয়রামের মন্তব্য, “ওই বৈঠকে তো ছিলাম না। তাতে কী এসে গেল।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC Congress Mamata Banerjee Rahul Gandhi

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy