E-Paper

লোকসভা ভোটেও হাওড়ায় প্রচারের কেন্দ্রে পুরসভা, চলছে দোষারোপ

গত ছ’বছর ধরে নির্বাচন বকেয়া রয়েছে হাওড়া পুরসভায়। এ বার তাই লোকসভা নির্বাচনের আগে সেটাই অন্যতম হাতিয়ার বিরোধীদের। তাঁদের অভিযোগ, নির্বাচন না হওয়ার পিছনে দায়ী প্রধানত রাজ্য সরকারই।

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:৪৫
হাওড়া পুরসভা

হাওড়া পুরসভা —ফাইল চিত্র।

হাওড়া সদর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে পাঁচটি রয়েছে হাওড়া পুরসভা ও বালি পুরসভা এলাকায়। গত ছ’বছর ধরে নির্বাচন বকেয়া রয়েছে হাওড়া পুরসভায়। এ বার তাই লোকসভা নির্বাচনের আগে সেটাই অন্যতম হাতিয়ার বিরোধীদের। তাঁদের অভিযোগ, নির্বাচন না হওয়ার পিছনে দায়ী প্রধানত রাজ্য সরকারই। এ দিকে, নির্বাচিত বোর্ড ‌না থাকায় পরিষেবার ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বিরোধীদের দাবি, হাওড়ায় পুর পরিষেবা কার্যত তলানিতে ঠেকেছে। আবার শাসকদল তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপির জন্যই পুরসভার নির্বাচন এত দিন ধরে আটকে আছে। বিজেপি নেতাদের নির্দেশেই রাজ্যপালেরা বালি পুরসভা সংক্রান্ত বিলে এখনও সই করেননি। তাই পুর নির্বাচন করা যায়নি।

হাওড়া সদর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে বালি, উত্তর হাওড়া, মধ্য হাওড়া, শিবপুর ও দক্ষিণ হাওড়া বিধানসভা কেন্দ্র। পাঁচলা ও সাঁকরাইল বাদ দিলে হাওড়া সদর লোকসভা কেন্দ্রের ৭০ শতাংশ ভোটারই এই পাঁচটি কেন্দ্রের বাসিন্দা। অর্থাৎ, লোকসভা নির্বাচনে এই পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রের মানুষের মতামত খুব বড় ‘ফ্যাক্টর’ হতে চলেছে। আর তাই এ বারের লোকসভা ভোটে পুরসভার সাফাই বিভাগের ব্যর্থতার পাশাপাশি, শহর জুড়ে চলা বেআইনি নির্মাণ এবং অবাধে জলাশয় বুজিয়ে বহুতল তৈরির মাফিয়া-রাজকেই প্রচারের মূল হাতিয়ার করছেন বিরোধীরা। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির বক্তব্য, লোকসভা ভোট হলেও প্রচারে পুরসভার ব্যর্থতাও তুলে ধরা হচ্ছে। তাঁদের দাবি, রাজ্যের অন্য সব পুরসভায় নির্বাচন হয়ে গেলেও হাওড়া পুরসভার নির্বাচন রাজ্য সরকার ইচ্ছাকৃত ভাবে করছে না। এ বিষয়ে হাওড়া সদরের বিজেপি প্রার্থী রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের জন্য বালি ও হাওড়া পুরসভার সীমা চিহ্নিতকরণ (ডিলিমিটেশন) আটকে রয়েছে। নির্বাচন না হওয়ায় পুর পরিষেবা বলতে কিছুই নেই। জঞ্জালে ভরেছে গোটা শহর। অবাধে বেআইনি নির্মাণ ও পুকুর ভরাট হচ্ছে। এ সবের জন্য বিজেপি দায়ী হবে কেন? শাসকদল হেরে যাবে ভেবে রাজ্য সরকারই ইচ্ছে করে নির্বাচন করছে না।’’

হাওড়ার বেলগাছিয়া ভাগাড়ের কাছে প্রচারে গিয়েছিলেন সিপিএম প্রার্থী সব্যসাচী চক্রবর্তী। তিনি জানান, ওই ভাগাড়ের পাশে মানুষ কী ভাবে আছে, তা-ই দেখতে এসেছিলেন। এসে দেখেন, ভাগাড়ের পাশে একটি পুকুর বোজানোর চেষ্টা চলছে। সেখানকার মূল নিকাশি নালায় ভাগাড়ের সমস্ত আবর্জনা এসে পড়ায় সেটি প্রায় বুজে গিয়েছে। সেখান থেকে পাঁক তুলে পরিকল্পিত ভাবেই পাশের পুকুরটি বোজানো হচ্ছে। সব্যসাচী বলেন, ‘‘এ সব দেখে বলাই যায়, হাওড়া পুরসভা বলে আর কিছু নেই। গোটা ব্যবস্থা আমলারা চালালে যা হওয়ার, তা-ই হচ্ছে। আমলারা তো এ সব দেখবেন না। পুরপ্রতিনিধিরা থাকলে তবু তাঁরা হয়তো দেখতেন বিষয়গুলি। কিন্তু নির্বাচন হচ্ছে না। আমরা তাই পুরসভার প্রতিটি সমস্যাকে এ বারের প্রচারে তুলে ধরছি।’’

শাসকদল তৃণমূল অবশ্য এই সব প্রচারে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তৃণমূলের দাবি, বিজেপির জন্যই হাওড়া পুরসভার নির্বাচন আটকে গিয়েছে। দলের জেলা সভাপতি তথা ডোমজুড়ের বিধায়ক কল্যাণ ঘোষ বলেন, ‘‘বিজেপি-ই তো রাজ্যপালের কাছে গিয়ে নির্বাচন আটকেছে। আমরা ২০২১ সালে নির্বাচন করতে উদ্যোগী হয়েছিলাম। মানুষকে পুর পরিষেবা দেওয়ার জন্যই নির্বাচন করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু রাজ্যের বিরোধী দলনেতা থেকে শুরু করে সকলে গিয়ে রাজ্যপালের মাধ্যমে নির্বাচন আটকেছেন।’’ তৃণমূল জেলা সভাপতির দাবি, হাওড়া শহরে সময় মতো জঞ্জাল অপসারণ ছাড়া অন্যান্য পুর পরিষেবার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। বিরোধীরা এ সব প্রচার করেও কিছু করতে পারবেন না।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 Howrah Howrah Municipality

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy