Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
Lok Sabha Election 2024

ইউসুফকে নিয়ে তর্ক পক্ষে-বিপক্ষে

এমনিতেই মুর্শিদাবাদে তৃণমূলে গোষ্ঠী কোন্দল নতুন কিছু নয়। আর গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছিল।

Yousuf Pathan

ব্রিগেডের র‌্যাম্পে ইউসুফ পাঠান। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৪ ০৮:৫৭
Share: Save:

গত লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে অধীর চৌধুরীর জয়ের মার্জিন অনেকটাই কমিয়ে দিতে পেরেছিল তৃণমূল। তিন লাখের জায়গায় মাত্র ৮০ হাজার ৬৯৬ ভোটে তৃণমূল প্রার্থীকে পরাজিত করেছিলেন অধীর। অধীরকে চাপে রাখতে এ বার প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানকে বহরমপুর কেন্দ্রে প্রার্থী করে তৃণমূল শুধু চমকই দেয়নি, এক ঢিলে একাধিক পাখি মারতে চেয়েছে, এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

এমনিতেই মুর্শিদাবাদে তৃণমূলে গোষ্ঠী কোন্দল নতুন কিছু নয়। আর গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছিল। বিশেষ করে বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের আওতায় থাকা নওদা, রেজিনগর ও ভরতপুর বিধানসভা এলাকায় ব্লক সভাপতিদের সঙ্গে সেখানকার দলের স্থানীয় বিধায়কদের কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছিল। আর সেই কোন্দলে নাম জড়িয়েছিল তৎকালীন বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শাওনি সিংহরায়েরও। শাওনি সিংহরায়কে জেলা সভাপতি পদ থেকে সরানো হলেও ওই সব এলাকার পুরনো ব্লক সভাপতিরা স্বপদে থেকে গিয়েছেন। শুধু রেজিনগরের ক্ষেত্রে ব্লক সভাপতি বদল হলেও তাঁরই অনুগত এক জন ব্লক সভাপতি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে দলেরই অপর গোষ্ঠী। এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় কোনও প্রার্থী হলে এই গোষ্ঠী কোন্দল ফের মাথা চাড়া দিতে পারত বলে অনেকে মনে করছেন। শুধু তাই নয়, প্রাক্তন জাতীয় ক্রিকেটারকে প্রার্থী করে তৃণমূল যুব সমাজকে যেমন কাছে টানার চেষ্টা করছে, তেমনই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদের বহরমপুর কেন্দ্রের সংখ্যালঘু ভোটারদের কাছে টানতে ইউসুফ পাঠানের মতো সংখ্যালঘু মুখকে তৃণমূল কাজে লাগাতে চেয়েছে।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

তবে ইউসুফ পাঠানকে বহিরাগত প্রার্থী বলে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। তা নিয়ে সমাজ মাধ্যমে লেখালেখিও হচ্ছে। শুধু তাই নয়, দলের কেউ কেউ সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ইতিমধ্যে কান্দির কুমারসন্ডের মাত্র ৭০ জন তৃণমূল কর্মী প্রার্থী অপছন্দের অভিযোগে কংগ্রেসে যোগ গিয়েছেন। ইউসুফকে প্রার্থী করায় বেসুরো হয়েছেন তৃণমূলের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরও। ফলে ইউসুফ পাঠানকে নিয়ে বহরমপুর কেন্দ্রে প্রার্থী করায় তৃণমূলকে বহিরাগত তত্ত্বকে খণ্ডন করে সামাল দিতে হবে। তবে সেটা তৃণমূল কতটা পারবে সেই প্রশ্নই উঠেছে।

প্রদেশ কংগ্রেস মুখপাত্র সৌম্য আইচ বলেন, ‘‘অধীরবাবু চেয়েছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী বহরমপুর কেন্দ্রে দাঁড়ান। আসলে তৃণমূল ভয় পেয়েছে।’’ সৌম্য বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলকে মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বাস করেন না, তাই বাইরে থেকে প্রার্থী আমদানি করতে হয়েছে। তবে তাতে লাভ হবে না। আমরা লক্ষাধিক ভোটে ওকে হারাব।’’

বিজেপির বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শাখারভ সরকারও বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ দূরে থাক, বাংলা থেকেও দিদি কাউকে প্রার্থী খুঁজে পেলেন না। দিদিকে দলের প্রার্থীর জন্য মোদীর সেই গুজরাট পাড়ি দিতে হল।’’ তাঁর দাবি, ‘‘তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল এতটাই প্রকট যে সেই কোন্দল থামাতে তাঁদের গুজরাট পাড়ি দিতে হল।’’ সোমবার ইউসুফ পাঠান, শত্রুঘ্ন সিংহকে তৃণমূলের প্রার্থী করা নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছেন, ‘‘এতদিন তৃণমূল বাংলা, বাঙালি বলে লাফাচ্ছিল। এখন গুজরাত থেকে ইউসুফকে বহরমপুরে দাঁড় করাল। শত্রুঘ্ন ছাড়া আসানসোলে হিন্দিভাষী নেতা কি ছিলেন না।’’

যদিও বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘ইউসুফ পাঠান ভারতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য ছিলেন। তাঁর বাড়ি গোটা ভারতবর্ষেই। তাই তাঁকে যাঁরা বহিরাগত বলছেন ঠিক বলছেন না। গোটা ভারতবর্ষ তো বটেই পৃথিবীর সকলের কাছে ইউসুফ পাঠান পরিচিত মুখ।’’

তবে জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘স্থানীয় কোনও নেতা প্রার্থী হলে পুরনো গোষ্ঠী কোন্দল ফের মাথাচাড়া দিত। অনেকে স্থানীয় প্রার্থীর হয়ে ভোট করতে চাইত না। গোপনে হারানোর চেষ্টা করত। আর ইউসুফ পাঠান প্রার্থী হওয়ায় সকলে তাঁর হয়ে ভোট করতে নামবেন। কারণ লোকসভা নির্বাচনের পরে বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট পাওয়ার তাড়া যেমন থাকবে, তেমনই দলের পদ ধরে রাখতে হবে। তাই দল এক ঢিলে একাধিক পাখি মেরেছে বলে মনে হচ্ছে।’’

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Yousuf Pathan TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE