Advertisement
Back to
Presents
Associate Partners
সিএএ আবহে কাঠগড়ায় তৃণমূলের প্রধান
Lok Sabha Election 2024

পঞ্চায়েত থেকে হাতে লেখা জন্মের শংসাপত্র!, সিএএ আবহে কাঠগড়ায় তৃণমূলের প্রধান

পঞ্চায়েতের প্রধান হলেন এলাকার জন্ম ও মৃত্যুর উপ নিবন্ধক। অভিযোগ, ‘প্রণামীর বিনিময়ে’ অন্তত দেড়শো জনকে জন্মের শংসাপত্র পাইয়ে দিয়েছেন মানিকপাড়ার প্রধান শত্রুঘ্ন মাহাতো।

জন্মতারিখ ২০১৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। মানিকপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে জন্মের শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে ২০২৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি।

জন্মতারিখ ২০১৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। মানিকপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে জন্মের শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে ২০২৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি। নিজস্ব চিত্র।

কিংশুক গুপ্ত
 ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৪ ০৮:৫১
Share: Save:

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কার্যকর হওয়ায় প্রতিবাদ মুখর তৃণমূল। অথচ সেই তৃণমূলেরই এক পঞ্চায়েত প্রধান নিয়ম বহির্ভূতভাবে গত কয়েক মাসে প্রায় দেড়শো জন্মের শংসাপত্র বিলি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

২০২২ সাল থেকে এ রাজ্যে জন্ম-মৃত্যুর নিবন্ধীকরণ অনলাইনে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ওই শংসাপত্র অনলাইনে তৈরির পর তা ডাউনলোড করে নিতে হয়। অথচ ঝাড়গ্রাম ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত মানিকপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে চলতি মাসেও বেশ কয়েকজনকে ছাপানো ফরম্যাটে হাতে লেখা জন্মের শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের একাংশই এ নিয়ে মহকুমাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। দাবি, ওই সব শংসাপত্রের কোনও তথ্যই রাজ্যের জন্ম-মৃত্যু পোর্টালে নেই। এমনকি যাদের শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে, তারা কেউই সদ্যোজাত নয়। কমপক্ষে ১০-১১ বছর আগে তাদের জন্ম হয়েছে।

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

পঞ্চায়েতের প্রধান হলেন এলাকার জন্ম ও মৃত্যুর উপ নিবন্ধক। অভিযোগ, ‘প্রণামীর বিনিময়ে’ অন্তত দেড়শো জনকে জন্মের শংসাপত্র পাইয়ে দিয়েছেন মানিকপাড়ার প্রধান শত্রুঘ্ন মাহাতো। তা দেখিয়ে কেউ স্কুলে ভর্তি হয়েছে, কেউ আবার সরকারি সুবিধা পেতে ওই শংসাপত্র দাখিল করেছেন। কয়েক মাস আগে মানিকপাড়া পঞ্চায়েত কার্যালয়ে আধার কার্ড তৈরির শিবির হয়েছিল। তখনও তড়িঘড়ি কয়েকজনকে পঞ্চায়েত অফিস থেকে নিয়ম ভেঙে জন্মের শংসাপত্র দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তা দেখিয়ে কয়েকজন আধার কার্ডের আবেদনও করেছেন।

গোটা ঘটনায় সরব গেরুয়া শিবির। মানিকপাড়া পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য চন্দন পাত্র বলছেন, ‘‘জন্মের শংসাপত্র নিয়ে জালিয়াতি করা হচ্ছে। যাঁরা ওই শংসাপত্র নিয়েছেন, প্রশাসনিকস্তরে ভেরিফিকেশন হলে তাঁরাও সমস্যায় পড়বেন।’’ ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডুর খোঁচা, ‘‘পুরনো অভ্যাস ভুলতে পারছে না রাজ্যের শাসকদল। এক সময় এ ভাবেই জাল শংসাপত্র দিয়ে ভোটের স্বার্থে বহিরাগতদের নাগরিক বানানো হয়েছে।ভোটের প্রচারে বিষয়টি তুলে ধরা হবে। আমরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নজরেও আনব।’’

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভুবনচন্দ্র হাঁসদা মানছেন, ২০২২ সালের ১ মে থেকে রাজ্যে জন্ম ও মৃত্যুর শংসাপত্র কেবলমাত্র অনলাইনে দেওয়া হচ্ছে। এখন হাতে করে শংসাপত্র দেওয়ার কোনও বিধান নেই। কেউ যদি এমনটা দিয়ে থাকেন তা বৈধ নয়।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এখন সরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরে জন্ম-মৃত্যু পোর্টালে বাবা ও মায়ের আধার কার্ড, হাসপাতালের ডিসচার্জ সার্টিফিকেট-সহ প্রয়োজনীয় নথিপত্র আপলোড করলে মোবাইলে অ্যাকনলেজমেন্ট নম্বর আসে। পোর্টালে ওই নম্বর দিয়ে শংসাপত্র ডাউনলোড করতে হয়। শিশু বাড়িতে জন্মালেও পুরসভা অথবা গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে অনলাইনে প্রয়োজনীয় নথি দিয়ে পোর্টালে তথ্য আপলোড করতে হয়। প্রতিটি পঞ্চায়েতে লগ ইন আইডি দেওয়া আছে।

তাহলে এমনটা হল কী করে? ঝাড়গ্রামের মহকুমাশাসক শুভ্রজিৎ গুপ্ত বলছেন, ‘‘যে সময়ে শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে সেই সময় ওই ফরম্যাট চালু ছিল কি-না খতিয়ে দেখা হবে।’’ তবে দোষ স্বীকার করছেন তৃণমূলের প্রধান শত্রুঘ্ন। তাঁর দাবি, ‘‘ভুল হয়ে গিয়েছে। ভুল সংশোধন করে নেওয়া হবে।’’

ভোটের মুখে গোটা ঘটনায় অস্বস্তিতে তৃণমূল। প্রসঙ্গ এড়িয়ে জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু বলছেন, ‘‘পঞ্চায়েতস্তরের বিষয় আমার জানা নেই।’’ তবে মানিকপাড়া অঞ্চলের যুব তৃণমূল নেতা হেমন্ত মাহাতো মানছেন, ‘‘শংসাপত্রের বিষয়টি নজরে এসেছে। এতে বিরোধীরা রাজ্য সরকারকে বদনাম করার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে।’’

২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের 'দিল্লিবাড়ির লড়াই' -এর পাতায়।

চোখ রাখুন

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2024 Jhargram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE