১৯৩৭ সালে এলাকার সার্বিক উন্নয়নের সার্থে ১৫ অগস্ট প্রতিষ্ঠা করা হয় বেলগাছিয়া যুব সম্মিলনীর। কী অদ্ভুত তার ১০ বছর বাদে, ১৯৪৭ সালে এই দিনেই ভারতের ইতিহাসে ঘটে যায় এক বিশালাকার রদবদল। মাতৃ আরাধনা শুরু সরস্বতী পুজো দিয়ে। ১৯৪৫ সাল থেকে শুরু হয় দুর্গা পুজোর।
থিম পুজোর রমরমার মধ্যেও ৭৯ বছর ধরে নিষ্ঠা ভরে প্রাচীন রীতি পালন করেই মা পূজিত হন এখানে। পাড়ার ছোট থেকে বড় সবাই এক সঙ্গে হাতে হাত দিয়ে এগিয়ে নিয়ে চলেছে এই পুজো। ১৯৩৭ সালে এলাকার সার্বিক উন্নয়নের তাগিদে ১৫ই অগস্টে প্রতিষ্ঠা করা হয় ক্লাবের। তার পর ১৯৪৫ সালে শুরু হয় দুর্গা পুজোর। দেখতে দেখতে আজ পুজোর বয়স ৭৯ বছর। আজও এই পুজো ধরে রেখেছে তাদের বনেদিয়ানার স্বাদ। উত্তর কলকাতার ঐতিহ্যবাহী বারোয়ারি পুজোগুলির মধ্যে বেলগাছিয়া যুব সম্মিলনীর পুজো অন্যতম। এক দু’বছর থিম পুজো করলেও আবার ফিরে আসে সাবেকি পুজোতেই। পাড়ার সবাই মিলে এক সঙ্গে জাতি, ধর্ম, ভাষা নির্বিশেষে মাতৃ আরাধনায় মেতে ওঠাই প্রধান লক্ষ এই বেলগাছিয়া যুব সম্মিলনীর। পুজোয় সপ্তমী থেকে দশমী দু’বেলা থাকে সর্ব সাধারণের জন্য ভোগ বিতরণের ব্যবস্থা। নিষ্ঠা ভরে প্রাচীন রীতির পালন করে মা পূজিত হন এখানে। আজও কেবল ব্রাহ্মণরাই রান্না করেন মায়ের ভোগ। দশমীতে রয়েছে সিঁদুর খেলা। কেবল পাড়ার মেয়েরা নয়, সিঁদুর খেলার আনন্দে মেতে ওঠেন পাড়ার পুরুষেরাও। নবমীতে ঢাক বাজানো থেকে ধুনুচি নাচ রয়েছে আরও অনেক কিছু। এত অশান্তির মধ্যেও উত্তর কলকাতার বেলগাছিয়া যুব সম্মিলনীর এই পুজো যেন সম্প্রীতির প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আজ।
পুজোর সম্পাদক শুভঙ্কর চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘আমাদের পুজো বনেদিয়ানার আরেক নাম। স্বাধীনতার আগে থেকে আমাদের পুজোর শুরু। চিরকাল নবীন এবং প্রবীণ মিলে এক সঙ্গে পুজোর আয়োজন করে। তবে শুধু পুজো নয়, সঙ্গে সারা বছর নানা সামাজিক কাজ কর্মেও লিপ্ত থাকে আমাদের ক্লাব। কলকাতার বারোয়ারি পুজোয় বনেদিয়ানার স্বাদ অনুভব করতে হলে আসতে হবে এই পুজোয়।’’
কী ভাবে যাবেন শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় থেকে আরজিকর হাসপাতালের দিকে এগোতে হবে। মিনিট ছয়েক হাঁটলেই আরজিকর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিল্ডিঙের ঠিক বিপরীতেই ভৈরব মুখার্জি লেন। সেখানেই পুজা মণ্ডপ।
প্রতিমা শিল্পী মহাদেব পাল
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy