Advertisement
Kumarakom Shikara Ride

কেরলের কুমারাকোম! আলোড়ন ফেলে দেওয়া এই পর্যটন কেন্দ্রে না গেলে জীবন বৃথা

কুমারাকোম! কেরলের কোচি থেকে সড়কপথে ৪৮ কিলোমিটার দূরে। ইতিহাস, প্রকৃতি, ‘হাউস বোট’য়ের রোমাঞ্চ পায়ে পায়ে। এখানেই বসে নাকি অরুন্ধতী রায় লিখেছিলেন তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস।

আনন্দ উৎসব ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:২৯
Share: Save:
০১ ১৫
কেরলের জন্য কোন প্রতিশব্দটা একদম যথার্থ তা নিয়ে যেন ধন্দে পড়তে হয়! দাক্ষিণাত্যের এই অপরূপ রাজ্যের বহু প্রাচীনকাল থেকে আরেকটি নাম ‘ঈশ্বরের আপন দেশ’।

কেরলের জন্য কোন প্রতিশব্দটা একদম যথার্থ তা নিয়ে যেন ধন্দে পড়তে হয়! দাক্ষিণাত্যের এই অপরূপ রাজ্যের বহু প্রাচীনকাল থেকে আরেকটি নাম ‘ঈশ্বরের আপন দেশ’।

০২ ১৫
আবার কেরল বা খাঁটি মালয়ালম ভাষায় কেরলম-এর ‘কের’  মানে নারকেল। মালয়ালিতে নারকেলকে ‘কের’ বলে। এবং ‘আলয়ম’ শব্দের অর্থ দেশ। অর্থাৎ কেরলের আরেকটা নাম 'নারকেলের দেশ'ও।

আবার কেরল বা খাঁটি মালয়ালম ভাষায় কেরলম-এর ‘কের’ মানে নারকেল। মালয়ালিতে নারকেলকে ‘কের’ বলে। এবং ‘আলয়ম’ শব্দের অর্থ দেশ। অর্থাৎ কেরলের আরেকটা নাম 'নারকেলের দেশ'ও।

০৩ ১৫
কিন্তু যত দিন গিয়েছে,  কেরল গোটা পৃথিবীর কাছে বিখ্যাত থেকে কিংবদন্তি স্থান হয়ে উঠেছে এই দক্ষিণী ভারতীয় রাজ্যের অতুলনীয় ‘ব্যাক ওয়াটার ট্যুরিজম’য়ের জন্য।

কিন্তু যত দিন গিয়েছে, কেরল গোটা পৃথিবীর কাছে বিখ্যাত থেকে কিংবদন্তি স্থান হয়ে উঠেছে এই দক্ষিণী ভারতীয় রাজ্যের অতুলনীয় ‘ব্যাক ওয়াটার ট্যুরিজম’য়ের জন্য।

০৪ ১৫
এ বছরেরই জানুয়ারিতে ‘নিউইয়র্ক টাইমস’ গোটা পৃথিবীর ৫২টি অবশ্যই দেখার পর্যটন গন্তব্যের অন্তর্ভুক্ত করেছে কেরলের বৃহত্তম হ্রদ ভেম্বানাদের পটভূমিতে অবস্থিত কুমারাকোমের বিখ্যাত ‘ব্যাক ওয়াটার ট্যুরিজম’কে।

এ বছরেরই জানুয়ারিতে ‘নিউইয়র্ক টাইমস’ গোটা পৃথিবীর ৫২টি অবশ্যই দেখার পর্যটন গন্তব্যের অন্তর্ভুক্ত করেছে কেরলের বৃহত্তম হ্রদ ভেম্বানাদের পটভূমিতে অবস্থিত কুমারাকোমের বিখ্যাত ‘ব্যাক ওয়াটার ট্যুরিজম’কে।

০৫ ১৫
আরেক ঐতিহ্যবাহী ‘ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ম্যাগাজিন’ এই পর্যটন গন্তব্যকে স্বীকৃতি দিয়েছে সারা জীবনে দেখার মতো অবশ্যই গন্তব্যস্থান।

আরেক ঐতিহ্যবাহী ‘ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ম্যাগাজিন’ এই পর্যটন গন্তব্যকে স্বীকৃতি দিয়েছে সারা জীবনে দেখার মতো অবশ্যই গন্তব্যস্থান।

০৬ ১৫
ব্যাক ওয়াটার পর্যটনের জন্য বিখ্যাত এহেন কুমারাকোম কেরলের অন্যতম বড় শহর কোচি থেকে সড়কপথে ৪৮ কিলোমিটার দূরত্বে।  কুমারাকোমের সবচেয়ে আশপাশের শহর বলতে কোট্টায়াম। ১৩ কিলোমিটার দূরে।

ব্যাক ওয়াটার পর্যটনের জন্য বিখ্যাত এহেন কুমারাকোম কেরলের অন্যতম বড় শহর কোচি থেকে সড়কপথে ৪৮ কিলোমিটার দূরত্বে। কুমারাকোমের সবচেয়ে আশপাশের শহর বলতে কোট্টায়াম। ১৩ কিলোমিটার দূরে।

০৭ ১৫
 কেরলের বৃহত্তম হ্রদ যেমন ভেম্বানাদ হ্রদ, তেমনই এই দক্ষিণী রাজ্যের নয় নয় করে ৯০০ কিলোমিটার দীর্ঘ খাড়িপথ! যেখানে একমাত্র যানবাহন নৌকা। মালয়ালম ভাষায় নৌকাকে বলে ‘কেট্টুভালম’। পুরাণ এবং ইতিহাস দুয়েতেই কেরলের জলভূমি এবং নৌকার তাৎপর্য গুরুত্বপূর্ণ।

কেরলের বৃহত্তম হ্রদ যেমন ভেম্বানাদ হ্রদ, তেমনই এই দক্ষিণী রাজ্যের নয় নয় করে ৯০০ কিলোমিটার দীর্ঘ খাড়িপথ! যেখানে একমাত্র যানবাহন নৌকা। মালয়ালম ভাষায় নৌকাকে বলে ‘কেট্টুভালম’। পুরাণ এবং ইতিহাস দুয়েতেই কেরলের জলভূমি এবং নৌকার তাৎপর্য গুরুত্বপূর্ণ।

০৮ ১৫
পুরাণে কথিত আছে, দেবতা পরশুরাম তাঁর শিষ্য তথা নাম্বুদ্রিপাদ ব্রাহ্মণদের পৃথিবীতে বসবাসের জায়গা খুঁজতে খুঁজতে সহ্যাদ্রি পর্বতশৃঙ্গ থেকে দেবত্ব কুঠার ছুঁড়ে মারেন। পরশুরামের কুঠার সমুদ্রে পড়লে স্বয়ং সমুদ্র সরে গিয়ে মালাবার উপত্যকা সৃষ্টি হয়। যার থেকে উৎপত্তি আজকের কেরলের।

পুরাণে কথিত আছে, দেবতা পরশুরাম তাঁর শিষ্য তথা নাম্বুদ্রিপাদ ব্রাহ্মণদের পৃথিবীতে বসবাসের জায়গা খুঁজতে খুঁজতে সহ্যাদ্রি পর্বতশৃঙ্গ থেকে দেবত্ব কুঠার ছুঁড়ে মারেন। পরশুরামের কুঠার সমুদ্রে পড়লে স্বয়ং সমুদ্র সরে গিয়ে মালাবার উপত্যকা সৃষ্টি হয়। যার থেকে উৎপত্তি আজকের কেরলের।

০৯ ১৫
আবার ঐতিহাসিকগত ভাবে দেখা যায়,  এখানকার জলভূমিতে রাজাদের মধ্যে যুদ্ধে ছোট ছোট নৌকা ব্যবহার হত। যে যুদ্ধ-নৌকাদের বলা হত ‘চুন্দমভালম’ ও ‘কেত্তুভালম’। ১০ নদীর জলে পুষ্ট ভেম্বানাদ হ্রদ সে যুগে ভয়ঙ্কর বিপজ্জনক জায়গা ছিল। যার জন্য রাজা এই কুমারাকোমে সেনাবাহিনী রাখেন। কোত্তাথোড়ুর বা আজকের কোট্টায়ামের তৎকালীন প্রবেশপথে একটা দুর্গও গড়েছিলেন।

আবার ঐতিহাসিকগত ভাবে দেখা যায়, এখানকার জলভূমিতে রাজাদের মধ্যে যুদ্ধে ছোট ছোট নৌকা ব্যবহার হত। যে যুদ্ধ-নৌকাদের বলা হত ‘চুন্দমভালম’ ও ‘কেত্তুভালম’। ১০ নদীর জলে পুষ্ট ভেম্বানাদ হ্রদ সে যুগে ভয়ঙ্কর বিপজ্জনক জায়গা ছিল। যার জন্য রাজা এই কুমারাকোমে সেনাবাহিনী রাখেন। কোত্তাথোড়ুর বা আজকের কোট্টায়ামের তৎকালীন প্রবেশপথে একটা দুর্গও গড়েছিলেন।

১০ ১৫
সেই কুমারাকোম আসলে সুবিশাল ভেম্বানাদ হ্রদের ছোট ছোট দ্বীপের সমষ্টি। খাঁড়ি-নদী-হ্রদের অসামান্য ত্রিবেণী সঙ্গম। খাঁড়িপথে হাউসবোটে ঘোরা,  রাত্রিবাসের অভিজ্ঞতা মানুষের সারা জীবনেও ভোলার নয়। সে জন্যই কুমারাকোমের জলবিভাজিকা ভ্রমণ অর্থাৎ ব্যাক ওয়াটার ট্যুরিজম এক কথায় অনির্বচনীয় সৌন্দর্যের এক প্রতিভূ।

সেই কুমারাকোম আসলে সুবিশাল ভেম্বানাদ হ্রদের ছোট ছোট দ্বীপের সমষ্টি। খাঁড়ি-নদী-হ্রদের অসামান্য ত্রিবেণী সঙ্গম। খাঁড়িপথে হাউসবোটে ঘোরা, রাত্রিবাসের অভিজ্ঞতা মানুষের সারা জীবনেও ভোলার নয়। সে জন্যই কুমারাকোমের জলবিভাজিকা ভ্রমণ অর্থাৎ ব্যাক ওয়াটার ট্যুরিজম এক কথায় অনির্বচনীয় সৌন্দর্যের এক প্রতিভূ।

১১ ১৫
হাউসবোটগুলি বাইরে থেকে দেখতে ময়ূরপঙ্খী নাওয়ের মতো। ভেতরটা তাক লেগে যাওয়ার মতো! সাধারণ হাউসবোট-ই যেন জলে ভাসমান এক বাড়ি! আর বিলাসবহুল হাউসবোটগুলির চমকের তো শেষই নেই যেন! ভেতরটা পুরো শীতাতপ। দুটো শোবার ঘর,  একটা বসার ঘর, রান্নাঘর, বাথরুম,  টিভি,  রেফ্রিজেরেটর, ইন্টারনেট। গোটাটা কাঁচের জানালায় ঘেরা, যাতে হাউসবোটের যেকোনও জায়গা থেকে বাইরের খাঁড়ির অপরুপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। সবমিলিয়ে ভরপুর বিনোদন।

হাউসবোটগুলি বাইরে থেকে দেখতে ময়ূরপঙ্খী নাওয়ের মতো। ভেতরটা তাক লেগে যাওয়ার মতো! সাধারণ হাউসবোট-ই যেন জলে ভাসমান এক বাড়ি! আর বিলাসবহুল হাউসবোটগুলির চমকের তো শেষই নেই যেন! ভেতরটা পুরো শীতাতপ। দুটো শোবার ঘর, একটা বসার ঘর, রান্নাঘর, বাথরুম, টিভি, রেফ্রিজেরেটর, ইন্টারনেট। গোটাটা কাঁচের জানালায় ঘেরা, যাতে হাউসবোটের যেকোনও জায়গা থেকে বাইরের খাঁড়ির অপরুপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। সবমিলিয়ে ভরপুর বিনোদন।

১২ ১৫
কুমারাকোমের আরেক সমান বিখ্যাত হল, ১৪ একর বিস্তৃত পাখির অভয়ারণ্য। ১৮০ প্রজাতির বিভিন্ন পরিযায়ী পাখির মেলা এই অভয়ারণ্যে। সাইবেরিয়া থেকেও পরিযায়ী পাখি আসে কুমারাকোম পাখি অভয়ারণ্যে। এই সুবিশাল জায়গা আবিষ্কার করেছিলেন আলফ্রেড জর্জ হেনরি বেকার নামে এক ব্রিটিশ আধিকারিক। যার জন্য এই স্থানকে 'বেকার'স এস্টেট' বলা হয়। পাখিরালয়ের পাশাপাশি ভেম্বানাদ হ্রদে অসংখ্য সামুদ্রিক ও মিষ্টি জলের মাছ আছে।

কুমারাকোমের আরেক সমান বিখ্যাত হল, ১৪ একর বিস্তৃত পাখির অভয়ারণ্য। ১৮০ প্রজাতির বিভিন্ন পরিযায়ী পাখির মেলা এই অভয়ারণ্যে। সাইবেরিয়া থেকেও পরিযায়ী পাখি আসে কুমারাকোম পাখি অভয়ারণ্যে। এই সুবিশাল জায়গা আবিষ্কার করেছিলেন আলফ্রেড জর্জ হেনরি বেকার নামে এক ব্রিটিশ আধিকারিক। যার জন্য এই স্থানকে 'বেকার'স এস্টেট' বলা হয়। পাখিরালয়ের পাশাপাশি ভেম্বানাদ হ্রদে অসংখ্য সামুদ্রিক ও মিষ্টি জলের মাছ আছে।

১৩ ১৫
কুমারাকোমের আবহাওয়া মাঝারি হওয়ায় সারা বছরই এখানে পর্যটকেরা আসে। তবে এখানে বছরে দু’বার বর্ষাকাল। একবার দক্ষিণ-পশ্চিম,  অন্য বার উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর জেরে। এবং এহেন জলবায়ুতে পর্যটন, মাছ ধরা কুমারাকোমের প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। তার মধ্যেও নৌকাবিহার এবং ভেম্বানাদ হ্রদের পিছনের জলের চারপাশে হ্রদের তীরে সারিবদ্ধ বেশ কিছু বিলাসবহুল ও বাজেটের রিসর্ট কুমারাকোমের প্রধান আয়ের উৎস।

কুমারাকোমের আবহাওয়া মাঝারি হওয়ায় সারা বছরই এখানে পর্যটকেরা আসে। তবে এখানে বছরে দু’বার বর্ষাকাল। একবার দক্ষিণ-পশ্চিম, অন্য বার উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর জেরে। এবং এহেন জলবায়ুতে পর্যটন, মাছ ধরা কুমারাকোমের প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। তার মধ্যেও নৌকাবিহার এবং ভেম্বানাদ হ্রদের পিছনের জলের চারপাশে হ্রদের তীরে সারিবদ্ধ বেশ কিছু বিলাসবহুল ও বাজেটের রিসর্ট কুমারাকোমের প্রধান আয়ের উৎস।

১৪ ১৫
জায়গাটি সাহিত্য ক্ষেত্র হিসেবেও বিখ্যাত। কুমারাকোমের সঙ্গে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন লেখিকা অরুন্ধতী রায়ের নাম জড়িত। এখানকার এক গ্রাম আয়ামানমে বসেই নাকি তিনি তাঁর বহু পুরস্কৃত উপন্যাস 'দ্য গড অফ স্মল থিঙ্কস' লিখেছিলেন।

জায়গাটি সাহিত্য ক্ষেত্র হিসেবেও বিখ্যাত। কুমারাকোমের সঙ্গে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন লেখিকা অরুন্ধতী রায়ের নাম জড়িত। এখানকার এক গ্রাম আয়ামানমে বসেই নাকি তিনি তাঁর বহু পুরস্কৃত উপন্যাস 'দ্য গড অফ স্মল থিঙ্কস' লিখেছিলেন।

১৫ ১৫
কীভাবে যাবেন - ট্রেনে বা বিমানে কোচি পৌঁছে সেখান থেকে সড়কপথে। কোট্টায়াম পৌঁছেও সেখান থেকে কুমারাকোমে আসা যায়। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

কীভাবে যাবেন - ট্রেনে বা বিমানে কোচি পৌঁছে সেখান থেকে সড়কপথে। কোট্টায়াম পৌঁছেও সেখান থেকে কুমারাকোমে আসা যায়। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE