উত্তরাখণ্ডকে বলা হয় দেবভূমি। পুরাণে পাওয়া যায়, দেবতাদের বসবাসের জায়গা ছিল উত্তরাখন্ড। মুন্সিয়ারিও সেই পবিত্র দেবভূমির এক অংশ। স্বয়ং মহাকাব্য মহাভারতের যোগ রয়েছে মুন্সিয়ারির সঙ্গে। কথিত আছে, কুরুক্ষেত্র জয়ের পর শেষমেশ তাঁদের বংশধরদের হাতে রাজত্বের দায়িত্বভার তুলে দিয়ে পাণ্ডবেরা স্বর্গযাত্রার পথে রওনা হয়েছিলেন মুন্সিয়ারি থেকেই। তার আগে মর্ত্যে তাঁদের শেষ রান্না পান্ডবেরা করেছিলেন এখানকার পঞ্চচুল্লিতে। পাঁচ শৃঙ্গের জন্য এই হিমালয়ান রেঞ্জের নাম পঞ্চচুল্লি। খেয়াল করুন, চুল্লি-র অর্থ কিন্তু উনুন!
মুন্সিয়ারি এমন এক আশ্চর্য জায়গা যে, এই একটা গ্রাম থেকেই দেখা যায় পঞ্চচুল্লি ছাড়াও নন্দাদেবী, নন্দাকোট, রাজারম্ভার শৃঙ্গ। আরও তাৎপর্যপূর্ণ ভৌগলিক অবস্থান মুন্সিয়ারির। তিব্বতের প্রাচীন ‘সল্ট রুট’ গিয়েছে এই গ্রামকে ছুঁয়ে। আবার এখানে পৌঁছতে কালামুনি পাস পেরোতে হয়। যার উচ্চতা ৯০০০ মিটারেরও বেশি হওয়ায় দেবভূমি উত্তরাখন্ডের আরেক অসাধারণ রূপের দৃশ্যসুখ চেটেপুটে উপভোগ করা যায়। এর মাত্র ৩৫ কিলোমিটার আগে আছে বিরথি জলপ্রপাত। ১২০ মিটার উচ্চতা থেকে আছড়ে পড়া এই জলপ্রপাতের ভয়াল অথচ রোম্যান্টিক রূপ পর্যটকদের কাছে অতিপ্রিয়।
কীভাবে যাবেন: মুন্সিয়ারি পৌঁছনো একটু কঠিন। কারণ, দেশের কোনও বড় শহরের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত নয় এই পর্যটন কেন্দ্র। আবার মুন্সিয়ারির নিকটতম রেল স্টেশন এবং বিমানবন্দরের দূরত্ব ২০০ কিলোমিটারেরও বেশি। এ সবের জন্য যাত্রাপথে এক-আধ দিন অন্যত্র থাকতে হয়। বিমানবন্দরের ভেতর মুন্সিয়ারির নিকটতম হল দেরাদুন বিমানবন্দর (২১৪ কিমি) এবং পন্তনগর বিমানবন্দর (২৪৯ কিমি)।
সবচেয়ে কাছাকাছি রেল স্টেশন দেরাদুন (২১৪ কিমি), কাঠগোদাম (২৭৫ কিমি) এবং টনাকপুর (২৮৬ কিমি)। সড়কপথে প্রধানত দিল্লি থেকে রাষ্ট্রীয় পরিবহনের বাস এবং প্রাইভেট বাস ছাড়ে। এছাড়া, অনেক ট্যাক্সি এবং জিপ ভাড়া পাওয়া যায়। সবের ভাড়া ঋতু, বৃষ্টি, ধস, তুষারপাতের উপর কম-বেশি নির্ভর করে। তবে অত চাপ নেই। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy