Advertisement
E-Paper

বিতর্কের মধ্যেই দীর্ঘ ছুটি নিয়ে দেশ ছাড়লেন প্রধান বিচারপতি

বাংলাদেশের বর্তমান প্রধান বিচারপতির চাকরির মেয়াদ রয়েছে আরও সাড়ে তিন মাস।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৭ ০৯:২১
বিমানবন্দরের রওনা দেওয়ার আগে বাসভবনের সামনে প্রধান বিচারপতি সিন্‌হা। ছবি সৌজন্যে ফোকাস বাংলা।

বিমানবন্দরের রওনা দেওয়ার আগে বাসভবনের সামনে প্রধান বিচারপতি সিন্‌হা। ছবি সৌজন্যে ফোকাস বাংলা।

শুক্রবার রাত ১১টা ৫৭ মিনিটে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি এস কে সিন্‌হা। ছুটি নিয়ে বিমানবন্দরের পথে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের কাছে দেওয়া এক লিখিত বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, “প্রধান বিচারপতির প্রশাসনে হস্তক্ষেপ করলে এটি সহজেই অনুমেয় যে, সরকার উচ্চ আদালতে হস্তক্ষেপ করছে এবং এর দ্বারা বিচার বিভাগ ও সরকারের মধ্যে সম্পর্কের আরও অবনতি হবে। এটি রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না।” বাংলাদেশের বর্তমান প্রধান বিচারপতির চাকরির মেয়াদ রয়েছে আরও সাড়ে তিন মাস।

বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করে বিচারপতি সিন্‌হার দেওয়া চিঠির উল্লেখ করে বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “প্রধান বিচারপতি অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ‌আমেরিকা এবং ব্রিটেন— এই চারটি দেশে যেতে চান। আগামিকাল ১৩ অক্টোবর দেশ ত্যাগ করতে চান এবং ১০ নভেম্বর দেশে ফিরে আসবেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।”

প্রধান বিচারপতির স্বাক্ষরিত চিঠি। ছবি সৌজন্যে দৈনিক যুগান্তর।

বাংলাদেশের আইন মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, বর্ধিত ছুটিতে প্রধান বিচারপতির বিদেশে অবস্থানের সময়ে, অর্থাৎ ২ নভেম্বর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত, অথবা তিনি দায়িত্বে না ফেরা পর্যন্ত বিচারপতি মহম্মদ আব্দুল ওয়াহাব মিঞা প্রধান বিচারপতির কার্যভার সামলাবেন।

চলতি বছর অগস্ট মাসে বাংলাদেশের সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর থেকেই সরকারে থাকা আওয়ামি লিগের তীব্র আক্রমণের মুখে পড়েন বিচারপতি এস কে সিনহা।

আরও পড়ুন: বিশ্ব ডিম দিবসে ৩ টাকায় ডিম না পেয়ে বিক্ষোভ, ঢাকায় পুলিশের লাঠিচার্জের অভিযোগ

বাংলাদেশের বিচারপতিদের পদ থেকে অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফেরাতে আনা হয়েছিল সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীতে। সেই সংশোধনী বাতিল করে জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনকালে প্রতিষ্ঠিত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ফিরিয়ে আনে সুপ্রিম কোর্ট। সাত বিচারপতির ঐকমত্যের ৭৯৯ পৃষ্ঠার এই রায়ে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা নিজের পর্যবেক্ষণের অংশে দেশের বিভিন্ন বিষয়ের সমালোচনা করেন।

আদালতের রায় ও পর্যবেক্ষণ নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামি লিগের বিভিন্ন স্তর থেকে প্রধান বিচারপতির তীব্র সমালোচনা করা হয়। পর্যবেক্ষণে বঙ্গবন্ধুকে ‘খাটো করা হয়েছে’ অভিযোগে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিও এসেছিল। তখন বিএনপি এ রায়কে ‘ঐতিহাসিক’ বলে স্বাগত জানিয়েছিল।

সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রধান বিচারপতির বক্তব্য প্রসঙ্গে আওয়ামি লিগের আইন সম্পাদক রেজাউল করিম বলেন, “প্রধান বিচারপতি বিদেশ যাওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেছেন। সেখানে তিনি অসুস্থতার কথা বলেছেন। কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নয়, তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই ছুটি মঞ্জুর করা হয়েছে।” তিনি বলেন, “প্রধান বিচারপতি আইসিডিডিআরবিতে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন। এর থেকেই বোঝা যায় তিনি অসুস্থ। তিনি তাঁর লিখিত আবেদনেও বলেছেন, তিনি অসুস্থ। তাঁর ছুটি চাওয়ার পেছনে আওয়ামি লিগ বা সরকারের কোনও চাপ ছিল না।”

বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মতামত জানাতে আজ, শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করার কথা জানিয়েছে বিএনপি।

Bangladesh CJI বাংলাদেশ Surendra Kumar Sinha বিচারপতি এস কে সিন্‌হা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy