Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
International

উন্নয়নের বিদ্যুৎ-ঝলক বাংলাদেশের ২৫ লাখ ঘরে

হ্যারিকেন, লম্ফর আলোয় অন্ধকার তাড়াতে হবে না গ্রামে। ঘরে ঘরে বিজলি আলো জ্বলবে। রাত ফুরনোর প্রতীক্ষায় আর প্রহর গোনা নয়। রাত হবে দিন। উন্নয়নের বন্যায় ভাসবে গ্রামের পর গ্রাম। শহরে যখন রমরমা, গ্রাম মরে থাকবে কেন।

বাংলাদেশে গ্রামীণ বিদ্যুদয়নের জোয়ার।

বাংলাদেশে গ্রামীণ বিদ্যুদয়নের জোয়ার।

অমিত বসু
শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৬ ১৬:২৩
Share: Save:

হ্যারিকেন, লম্ফর আলোয় অন্ধকার তাড়াতে হবে না গ্রামে। ঘরে ঘরে বিজলি আলো জ্বলবে। রাত ফুরনোর প্রতীক্ষায় আর প্রহর গোনা নয়। রাত হবে দিন। উন্নয়নের বন্যায় ভাসবে গ্রামের পর গ্রাম। শহরে যখন রমরমা, গ্রাম মরে থাকবে কেন। পরিকল্পনাটা প্রথম থেকেই বাংলাদেশ সরকারের মাথায় ছিল। চিন্তা ছিল টাকার। সেটা আসবে কোত্থেকে! কে দেবে! কেন দেবে! সরকারের পকেটে এত টাকা থাকলে কথাই ছিল না। কাজ শুরু হয়ে যেত কবে। অযাচিত ভাবে অর্থের সঙ্কুলান। টাকা দিচ্ছে এশিয়ান ইনফ্রাকস্টাচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক বা এআইআইবি। ঋণ সহজ শর্তে। পরিশোধে বেগ পেতে হবে না। ঋণের পরিমাণ ১৬৫০ কোটি ডলার। বাংলাদেশি টাকায় ১৩০০০ কোটি। ব্যাঙ্কটির বয়স মাত্র ছ’মাস। এটাই তাদের বড় অঙ্কের প্রথম ঋণ অনুমোদন। ব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট জিন লিকুন বাংলাদেশকে সাহায্য করতে পেরে খুশি। তিনি জানিয়েছেন, বাজে বিনিয়োগে কোনও ব্যাঙ্কই রাজি হয় না। আমরাও হইনি। বাংলাদেশের প্রগতি আমাদের মুগ্ধ করেছে। তাদের উন্নয়নে আরও গতি আসুক। লিকুন আবেগে ভাসেননি। বাস্তবের যথার্থতা বিচার করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এটাই বাংলাদেশের উন্নয়নের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।

এআইআইবি পাকিস্তানকেও বঞ্চিত করেনি। তাদেরও দিয়েছে। তবে অঙ্কটা বাংলাদেশের চেয়ে কম। এক হাজার কোটি ডলার। জাতীয় হাইওয়ের উন্নয়নে টাকাটা দেওয়া হচ্ছে। বস্তি উন্নয়নে ইন্দোনেশিয়া পাচ্ছে ২১৬০ কোটি ডলার। দুশানিবে-উজবেকিস্তান সীমান্ত সড়ক উন্নয়নে তাজিকিস্তানকে দেওয়া হচ্ছে ২৭৫ কোটি ডলার। এশিয়ার যে সব দেশে উন্নয়ন আটকে তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে এআইআইবি। বিশ্বব্যাঙ্ক, এশীয় ব্যাঙ্কের জায়গাটা নিয়েছে। তাতেই উন্নয়নশীল দেশের সুবিধে। না চাইতেই মেঘ-বৃষ্টির মতো টাকাটা পেয়ে বাংলাদেশের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে।

এ টাকায় গ্রামের ২৫ লাখ ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছবে। এক কোটি ২৫ লাখ মানুষ উপকৃত হবেন। গ্রামের আর্থ-সামাজিক চিত্রটা পাল্টাবে। ঢাকার উত্তরে ৮৫ কিলোমিটার সার্কিটে বিদ্যুৎ বিতরণে ওভার লোডেড লাইনও বসানো যাবে। অন্য জায়গাতেও যেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহের অসুবিধে আছে সেখানে উপযুক্ত প্রকল্পের ব্যবস্থা। বিদ্যুতের আকাল থাকবে না কোনও অঞ্চলে।

জোর এখন এই বিদ্যুৎ উৎপাদনেই। সেটাই যে উন্নয়নের চাবিকাঠি। আপাতত বিদ্যুতের ঘাটতি মেটাচ্ছে গ্যাস। শিল্পে গ্যাসই প্রধান জ্বালানি। বাড়তি বিদ্যুৎ পেলে গ্যাস বাঁচান যাবে। শহরে লোডশেডিং কমলেও এখনও আছে। অনেক জায়গায় দিনে তিন-চারবার বিদ্যুৎ যাচ্ছে। স্থায়িত্ব বেশি না হলেও অসুবিধে হচ্ছে। একবারও যাতে পাওয়ার-কাট না হয় সেদিকে লক্ষ্য।

বিদ্যুৎ উৎপাদন আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। দিনে পাওয়া যাচ্ছে ৯ হাজার মেগাওয়াট। আগে সাত থেকে আট হাজার মেগাওয়াটে আটকে থাকত। উৎপাদন কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহের মাত্রা বেড়েছে। দৈনিক ৮০র জায়গায় ১১১ কোটি ঘনফুট গ্যাস পাচ্ছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো। এবার গ্যাসের জায়গায় বিকল্প জ্বালানি। কয়লা লাগবেই। সেই সঙ্গে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পরিকল্পনা। বিদ্যুৎ গতিতে এগোতে আর কোনও বাধা থাকবে না।

আরও পড়ুন:
সার্কে ভারতের পরেই বাংলাদেশ, রিজার্ভে পিছিয়ে পড়ল পাকিস্তান

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rural Electricity Bangladesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE