Advertisement
E-Paper

নব্য জেএমবি নিষিদ্ধ হচ্ছে বাংলাদেশে

জঙ্গি সংগঠন ‘নব্য জেএমবি’ (জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ)-কে নিষিদ্ধ করতে চলেছে বাংলাদেশ সরকার। পুলিশের জঙ্গি-দমন শাখা এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি দিচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, পুলিশের তরফে প্রস্তাব পেলেই দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে।

কুদ্দুস আফ্রাদ

শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:২৬
আলাপ: ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের সম্মেলনে ঢাকায় গিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করলেন লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

আলাপ: ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের সম্মেলনে ঢাকায় গিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করলেন লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

জঙ্গি সংগঠন ‘নব্য জেএমবি’ (জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ)-কে নিষিদ্ধ করতে চলেছে বাংলাদেশ সরকার। পুলিশের জঙ্গি-দমন শাখা এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি দিচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন, পুলিশের তরফে প্রস্তাব পেলেই দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত এই জঙ্গি সংগঠনটির বিরুদ্ধে বিদেশি নাগরিক, ধর্মযাজক, ব্লগার, পুলিশ হত্যা ছাড়া ঘাঁটি গেড়ে বড়সড় হামলার চক্রান্ত করার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ মিলেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে দেওয়া চিঠিতে নব্য জেএমবি-কে নিষিদ্ধ করার পক্ষে যুক্তিতে এই কারণগুলিই উল্লেখ করছে পুলিশের জঙ্গি-দমন শাখা।

২০০৫-এ বাংলাদেশের ৬৩টি জেলায় একযোগে ছোট মাপের বোমা ফাটানোর পরে ইস্তাহার দিয়ে বাংলাদেশের সর্বত্র নিজেদের অস্তিত্ব জাহির করে জেএমবি। আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল কায়দা-র বাংলাদেশি শাখা হিসেবে নিজেদের দাবি করে জেএমবি জানায়, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মুলোচ্ছেদ করে দেশে তালিবান ধাঁচের ইসলামি শাসন ব্যবস্থা কায়েমই তাদের লক্ষ্য। এর পর তাদের নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও তখনকার খালেদা জিয়া সরকার দাবি করে, বাংলাদেশে জেএমবি-র কোনও অস্তিত্ব নেই। বোমা বিস্ফোরণ ‘ভারতের গুপ্তচরদের’ কাজ। এর পরে সেনা সমর্থিত তত্ত্ববধায়ক সরকার বাংলা ভাই, শায়খ আব্দুর রহমান-সহ জেএমবি-র ৬ শীর্ষ নেতাকে ফাঁসি দিলে বড় ধাক্কা খায় এই জঙ্গি সংগঠন।

এর পরে শেখ হাসিনা ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে একের পর এক অভিযানে জেএমবি-র সংগঠন কার্যত ছারখার হয়ে যায়। সমস্ত মাথা হয় মারা পড়ে, না হয় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। এই পরিস্থিতিতে জেএমবি-র কিছু কর্মী ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে ঘাঁটি গেড়ে বিস্ফোরক বানানো ও কর্মী নিয়োগ শুরু করে। কিন্তু বর্ধমানের খাগড়াগড়ে তাদের একটি বোমা কারখানায় বিস্ফোরণের পরে ভারতের জাতীয় তদন্তকারী দল (এনআইএ) সে দেশের তিনটি রাজ্যজুড়ে জেএমবি-র কাজকর্ম খুঁড়ে বার করে সেগুলি বন্ধ করে দেয়। ভারতে ধরা পড়া জেএমবি-র বেশ কিছু নেতাকে জেরা করে বাংলাদেশেও এই সংগঠনের বহু নেতা-কর্মীকে ধরা হয়। পুলিশ সূত্র খবর, এর পরে ২০১৫-য় তামিম আহমেদ নামে কানাডা ফেরত এক জিহাদি এবং মেজর জাহিদ নামে পলাতক এক সেনা অফিসারের নেতৃত্বে নব্য জেএমবি-র উদ্ভব হয়। আল কায়দার বদলে ইরাক ও সিরিয়ার ইসলামিক স্টেটস (আইএস)-এর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে এই নতুন সংগঠন। এখনও পর্যন্ত ঢাকার গুলশনের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলাই সব চেয়ে বড় সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ নব্য জেএমবি-র।

পুলিশ সূত্র খবর, পশ্চিমবঙ্গেও এই নেতারা একাধিক বার যাতায়াত করেছে। তবে সেখানে ঘাঁটি করার চক্রান্ত কতটা ফলপ্রসূ হয়েছে, সে বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশের হাতে এখনও বিশেষ তথ্য নেই। জঙ্গি-দমন শাখার এক কর্তার কথায়, এ বিষয়ে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বোঝাপড়া করেই তাঁরা কাজ করছেন। জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ে নিয়মিত তথ্য আদানপ্রদান করে দু’দেশের নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা বিভাগ।

গত কয়েক মাসে পর পর অভিযানে একশোরও বেশি জঙ্গি নিকেশ করে বাংলাদেশ পুলিশ। তামিম, মেজর জাহিদ, মারজান ও সারোয়ার নামে নব্য জেএমবি-র প্রথম সারির নেতারা নিহত। তার পরে সিলেট, চট্টগ্রাম, মৌলভিবাজার ও কুমিল্লায় একের পর এক জঙ্গি ডেরা চিহ্নিত করে অভিযান চালাচ্ছে জঙ্গি-দমন শাখা। পুলিশের দাবি, নব্য জেএমবি-র মাঝারি স্তরের কিছু নেতা এখনও হাতের বাইরে রয়েছে। সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ সহজ হবে।

Sheikh Hasina Sumitra Mahajan Bangladesh Government New JMB
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy