মেডিক্যাল কলেজে আগুন লাগার ফলে পাঁচ কোটির ওষুধ নষ্ট হয়েছে।
যেমন অসুখ তেমন দাওয়াই। রেহাই নেই কোনও রোগের। জালে পড়বেই। ঠিকঠাক ওষুধটা মিললেই হল। সেটাই যে অমিল। বাজারে থাকলেও নাগালের বাইরে। এতটাই দুর্মূল্য, বহুল প্রয়াসে অধরা। সামর্থের বাইরে। কিনতে হলে পকেটে আটকাবে। কোনও একটি দেশে নয়, সব দেশেই এক অবস্থা। ব্যতিক্রম বাংলাদেশ। সেখানেই হতাশার সমাধান। সব দেশ ছুটছে সে দেশে ওষুধ কিনতে। জলের দামে ওষুধ পেয়ে, দমে যাওয়া মনে আশ্বাস। দাম এতটাই কম, অবিশ্বাস্য। ৪২৫ ডলারের ওষুধ ৩২ ডলারে। বিস্মিত আমেরিকা, ইউরোপও। এ যে ম্যাজিক। আমেরিকা, ব্রিটেনের আবিষ্কার করা ওষুধ বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে নামমাত্র মূল্যে। মিশন পরিষ্কার, বিনা ওষুধে কেউ যেন না মরে। ১১৩ দেশ বাংলাদেশের মুখাপেক্ষী। রোগী বাঁচাচ্ছে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা ওষুধে। অনেক দেশ চাইছে বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানি তাদের দেশে গিয়ে ওষুধ তৈরি করুক। তাদের সব রকম সুবিধা দেওয়া হবে। কারখানার জমি, কাঁচামাল, বিনিয়োগের অভাব হবে না। আপত্তি বাংলাদেশ সরকারের। ওষুধ শিল্পের সমৃদ্ধিতে দেশের লাভ। কর্মসংস্থান প্রচুর। বিদেশি মুদ্রার আয় বৃদ্ধি। স্বদেশে সস্তায় ওষুধ পাওয়ার সুযোগ।
২৭৮টি কোম্পানির ওষুধ বাংলাদেশ থেকে বিদেশে যাচ্ছে। বছরে তৈরি করছে ১৫ হাজার ৬১৯ কোটি টাকার ওষুধ। শুধু অ্যালোপ্যাথিক ওষুধে আটকে নেই। রয়েছে ২৬৬ ইউনানি, ২০৫টি আয়ুর্বেদিক, ৭৯টি হোমিওপ্যাথিক আর ৩২টি হারবাল ওষুধ তৈরির প্রতিষ্ঠান। তাদের উৎপাদন বছরে ৮৫০ কোটি টাকার।
সব কাঁচামাল দেশেই তৈরি হলে উৎপাদন খরচ আরও কমবে। মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় তৈরি হচ্ছে পার্ক। ওষুধের সব কাঁচামাল সেখানেই হবে। দু’বছরেই কাজ শুরু। দামের সঙ্গে গুণগত মান যাতে বজায় থাকে সেদিকে নজর। বাংলাদেশের ওষুধের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়াটা সহজ হয়নি। ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট জানিয়েছেন, আমেরিকায় ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এফডিএ-র ছাড়পত্র পাওয়া দুরূহ, সময়সাপেক্ষ। বাংলাদেশের ওষুধ তাদের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। গুণ প্রশ্নাতীত না হলে সেটা হত না। প্রয়োজনের ৯৮ শতাংশ ওষুধ বাংলাদেশ তৈরি করছে সব মান বজায় রেখেই।
ক্যান্সারের ওষুধের সঙ্গে বাংলাদেশ তৈরি করছে হেপাটাইটিস সি-র ওষুধ। বিশ্ববাজারে চাহিদা একচেটিয়া। ৮৪ ডোজের চিকিৎসায় এক ডোজের খরচ এক হাজার ডলার। পুরো কোর্সে খরচ ৮৪ হাজার ডলার। বাংলাদেশে তৈরি তার এক ডোজের দাম মাত্র ৮০০ টাকা। ওষুধের সঙ্গে গোটা চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি বাংলাদেশে। আগে দুরারোগ্য ব্যাধি নিরাময়ে বাংলাদেশের রোগীরা ছুটত ভারত, তাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, আমেরিকা, ব্রিটেনে। দিন বদলেছে। এখন বিদেশিরাই পাড়ি জমাচ্ছে বাংলাদেশে চিকিৎসা করাতে। তাতে সুবিধে দু’দিকে। সস্তায় ওষুধ, ভাল চিকিৎসা। একমাত্র পাকিস্তানের রোগীরাই বাংলাদেশ বিমুখ।
আরও পড়ুন- এসটিএফ-এর বড় সাফল্য, জালে ৬ জেএমবি জঙ্গি
আরও পড়ুন- এ বার দুর্গা মা নতুন রূপে আনন্দ উৎসবে
আরও পড়ুন- ‘দরজা খোলা আছে, যদি কেউ আহ্বান জানান তা হলে আমিও আছি’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy