ফরহাদ মজহার। ফাইল চিত্র।
সারা দিন নিখোঁজ থাকার পর সোমবার রাতে যশোরের নওয়াপাড়া থেকে বাংলাদেশের কবি ও প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহারকে উদ্ধার করে র্যাব। তিনি শারীরিক ভাবে সুস্থ আছেন বলেই র্যাব সূত্রে খবর।
এ দিন ভোর পাঁচটায় ঢাকার শ্যামলী এলাকার আদাবরে নিজের বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরই নিখোঁজ হয়ে যান ফরহাদ। তাঁর নিখোঁজ হওয়ার পরই পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে সংবাদমাধ্যমকে জানানো হয়, রাত তিনটে থেকে সাড়ে তিনটেয় ঘুম থেকে উঠেছিলেন কবি। কম্পিউটারে কিছু লেখালেখি করছিলেন। সে সময়ে তাঁর মোবাইলে একটি ফোন আসে। তার পরই তিনি ‘হক গার্ডেন’ নামের বাড়ি থেকে বাইরে বের হন।
এর পরই ভোর ৫টা ২৯ মিনিটে স্ত্রীকে ফোন করে বলেন, “ওরা আমাকে নিয়ে যাচ্ছে। আমাকে মেরে ফেলবে ওরা।” সকাল ৬টা ২১ মিনিটে আবার একটা ফোন আসে। সে সময় ফোনের অপর পার থেকে ৩৫ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়।
বাংলাদেশ পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার আনন্দবাজারকে জানান, আমরা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখেছি। ফরহাদ মজহার সাহেব স্বেচ্ছায়, স্বাভাবিক পোশাকে বাড়ি থেকে হেঁটে বেরিয়ে যাচ্ছেন। বিপ্লব কুমার আরও বলেন, “ফরহাদ মজহার তাঁর যে মোবাইল ফোনটি সব সময়ে ব্যবহার করেন সেটা এ দিন নিয়ে বের হন নি। তার অন্য মোবাইল ফোন যেটা সচরাচর কম ব্যবহার করেন এ দিন সেটা নিয়ে বের হন।” বিপ্লব আরও জানান, খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে ফরহাদ মজহার কখনওই এত ভোরে বাড়ির বাইরে যান না। কিন্তু এ দিন বৃষ্টির মধ্যেই বের হয়েছিলেন। সে সময়ের ভিডিও ফুটেজে কোন অস্বাভাবিকতা চোখে পড়েনি। বিপ্লব কুমার সরকার আনন্দবাজারকে জানিয়েছিলেন, ৩৫ লক্ষ টাকা চাওয়ার বিষয়টির গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, ফরহাদ মজহার ফোনে বলেছেন টাকা জোগাড় করে বাড়িতে রাখতে, কোথাও পাঠানোর কথা বলেননি। সব বিষয় খতিয়ে দেখে নিখোঁজ ফরহাদ মজহারের খোঁজের চেষ্টা চলছে।
ফরহাদ মজহারের খোঁজে এ দিন সন্ধ্যা থেকে খুলনার শিববাড়ি এলাকায় অভিযান চালায় র্যাবের একটি দল। র্যাব-৬ এর পরিচালক খন্দকার রফিকুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমাদের কাছে তথ্য এসেছে, ফরহাদ মজহারকে অপহরণ করে খুলনায় নিয়ে আসা হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে খুলনার কেডিএ অ্যাপ্রোচ রোড এলাকাটি ঘিরে ফেলে কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালানো হচ্ছে।”
বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী এ দিন বিকালে দলীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, ফরহাদ মজহারের পরিবারের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যে তথ্যটুকু পেয়েছি, তা হৃদয়বিদারক, অমানবিক এবং সারা জাতির জন্য ভীতি ও শঙ্কার। আমরা যেটা মনে করি, সরকারের অজান্তে এই ঘটনা ঘটেনি। সরকারের কোনও এজেন্সি বা কোনো টিম এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত।'
ফরহাদ মজহার বাংলাদেশে কবি, গবেষক, কলাম লেখক ও কৃষি আন্দোলনের সংগঠক হিসেবে পরিচিত। এক সময়ে বামপন্থী দর্শনের অনুসারী ছিলেন, বাংলাদেশে হেফাজতে ইসলাম সংগঠনের উত্থানকালে ও পরবর্তীতে তার দার্শনিক সমর্থনের কারণে তিনি আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy