বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী এলাকায় ভারতীয় সামরিক ঘাঁটিগুলির উপর নজরদারি এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দখলদারি রাখতে মরিয়া বেজিং। এই পরিকল্পনা রূপায়ণে ঢাকাকে পাশে পেতে বাংলাদেশে ক্রমশ প্রভাব বাড়াচ্ছে চিন।
কূটনৈতিক সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে এমনিতেই রক্তচাপ বাড়ছিল সাউথ ব্লকের। এ বার পাল্টা পরিকল্পনা করেছে ভারত। এপ্রিল মাসে শেখ হাসিনার প্রস্তাবিত ভারত সফরে একটি সামগ্রিক প্রতিরক্ষা চুক্তি করতে চলেছে মোদী সরকার। স্থির হয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সামরিক সহযোগিতায় ৫০ কোটি ডলার ঋণ দেওয়া হবে ঢাকাকে।
ঘটনা হল, গত কয়েক মাসে বেশ কিছু ঘটনায় টনক নড়েছে নয়াদিল্লির কর্তাদের। প্রথমত, তিন মাস আগে চিনের কাছ থেকে দু’টি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন ডুবোজাহাজ কিনেছে বেজিং, যদিও ঢাকার দাবি— এগুলির বরাত দেওয়া হয়েছিল বেশ কয়েক বছর আগে। দ্বিতীয়ত, ৩০ বছরে প্রথম কোনও চিনা প্রেসিডেন্ট হিসাবে শি চিনফিং-এর ঢাকা সফর। তৃতীয়ত, বেজিং সম্প্রতি ২৫০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে বাংলাদেশে, যার একটা বড় অংশ প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে। বাংলাদেশে সামরিক হার্ডওয়ার রফতানিতে চিনই এখন এক নম্বরে।
দিল্লির অস্বস্তি আরও বাড়ার কারণ, ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মাধুর্যে কিছুটা তিক্ততা তৈরি হয়েছে। দু’ বছর আগে স্থলসীমান্ত চুক্তির সফল রূপায়ণ দু’দেশের সম্পর্কে যে খোলা হাওয়া এনে দিয়েছিল, তা এখন অনেকটাই দমবন্ধ। ঢাকার অনুযোগ, তিস্তা চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের আবেগের বিষয়টি ভারত কার্যত উপেক্ষাই করে এসেছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মোদী সরকারের সম্পর্ক এখন যে পর্যায়ে, তাতে খুব শীঘ্র এই চুক্তি হবার আশাও নেই। পশ্চিমবঙ্গের সম্মতি ছাড়া এই জলচুক্তি হওয়া সম্ভবও নয়।
সব কূল রক্ষা করতে দু’দেশের সম্পর্কের একটি নতুন মাইল ফলক হিসাবে এই সামরিক চুক্তিটিকে সামনে আনতে চাইছে ভারত। যে খসড়াটি তৈরি করা হয়েছে তাতে সামরিক সহযোগিতার জন্য বড়সড় ঋণ দেওয়া ছাড়াও প্রশিক্ষণ, নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য সমন্বয়-সহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থাকতে চলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy