সাংবাদিক বৈঠকে শেখ হাসিনা।
তিস্তার বদলে তোর্সার জল— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রস্তাব যে গ্রহণযোগ্য নয়, দেশে ফিরে প্রথম মুখ খুলে সরাসরিই তা জানিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এমনকী, এই প্রস্তাব দেওয়া মাত্র মমতাকেও তিনি তা জানিয়ে দিয়েছেন বলে এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করেছেন হাসিনা। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে হাসিনা বলেন, ‘‘আমিও তাঁকে বলেছি, অন্য নদীতে পানি থাকলে তাঁরা তা নিন। শুধু তিস্তার পানিই আমাদের দিন। এই নদীর পানি নিয়েই আলোচনা চলবে।’’
তবে হাসিনার সাংবাদিক সম্মেলনের কয়েক ঘণ্টা পরেই দিল্লি থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে নেমে মমতা বলেন, ‘‘তিস্তা নিয়ে কিছু সমস্যা রয়েছে। অন্য নদীগুলির জল দেওয়া যায় কি না, ভারত ও বাংলাদেশ তা স্টাডি করে দেখছে।’’
মমতার ভারত সফরে স্বাভাবিক ভাবে কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু ছিল তিস্তা চুক্তি। তিন দিনের সফর শেষ করে সোমবার দেশে ফিরে মঙ্গলবারই নিজের সরকারি আবাস ‘গণভবন’-এ সাংবাদিক বৈঠক করেন শেখ হাসিনা। তার শুরুতে তিনি যে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, তাতে মমতার দেওয়া বিকল্প প্রস্তাবের উল্লেখটুকুও ছিল না। এর পরে সাংবাদিকরা তিস্তা নিয়ে প্রশ্ন করলে বেশ চড়া সুরেই তার জবাব দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
এক সাংবাদিক জানতে চান, তিস্তার জল মিলবে না বলে কি মমতা তাঁকে জানিয়ে দিয়েছেন? এর জবাবে হাসিনা বলেন, ‘‘তিস্তার পানি আসবেই। পানি কেউ আটকে রাখতে পারবে না!’’
আরও পড়ুন...
মৌলবাদীদের সুরেই হাসিনা
মমতা তাঁকে তিস্তার বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন কি না, এই প্রশ্নের জবাবে হাসিনা বলেন, ‘‘তিনি দিয়েছেন। আমিও তাঁকে বিকল্প প্রস্তাব দিয়ে দিয়েছি। বলে দিয়েছি— তিস্তার বিকল্প হয় না। এটা নিয়েই কথা চলবে।’’
এর পরে হাসিনা বলেন, ‘‘তিস্তা চুক্তি নিয়ে কিন্তু মমতা একেবারে না বলে দেননি। জল পাওয়া যাবে না, এ কথা বলেননি। আশপাশের নদীগুলির সংযোগ করে এটা করার কথা তিনি বলেছেন।’’ তাঁর কথায়— ‘‘তা ছাড়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী তো বলেই দিয়েছেন, তিস্তা চুক্তি হবেই। তিনি ও আমি ক্ষমতায় থাকতেই হবে!’’
তিস্তা নিয়ে ভারত সফরে শুকনো প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছু মেলেনি দাবি করে হাসিনার সমালোচনায় সরব হয়েছে বিএনপি। তাদের অভিযোগ— তিস্তা নিয়ে দর কষাকষি এই সফরে সম্ভব ছিল না, কারণ হাসিনা গিয়েছিলেন প্রতিরক্ষা চুক্তি সই করে দেশের সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিতে। জবাবে হাসিনা বলেন, ‘‘ভারত যখন গজলডোবায় বাঁধ দিল, তখন যারা ক্ষমতায় ছিল, একটা কথা বলেনি।’’ প্রতিরক্ষা চুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধুর কন্যা আমি। আমি থাকতে দেশের স্বার্থ-বিরোধী কিছু হবে না। চিনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি করেছিল বিএনপি। তখন তো এ প্রশ্ন ওঠেনি!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy