Advertisement
E-Paper

আবার বসল ‘জাস্টিসিয়া’, তবে আড়ালে

সুপ্রিম কোর্টের সামনে ডিসেম্বরে ভাস্কর্যটি বসানো হয় প্রধান বিচারপতি সি্নহার নির্দেশে। হেফাজতে ইসলামি ও অন্য মৌলবাদীরা জানায়, সুপ্রিম কোর্টের পাশের ঈদগা থাকায় রমজান মাস শুরুর আগেই দাঁড়িপাল্লা ও তলোয়ার হাতে নারীর ভাস্কর্যটি ওখান থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে।

কুদ্দুস আফ্রাদ

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৭ ০৫:২৪

শেষ পর্যন্ত ‘জাস্টিসিয়া’ ভাস্কর্য সুপ্রিম কোর্ট চত্বরেই বসল। তবে সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনের সামনে নয়, পিছনে। ভাস্কর মৃণাল হক নিজেই অ্যানেক্স ভবনের মুখে তাঁর সৃষ্টি পুনঃস্থাপনের তদারকি করেন। তবে সন্তুষ্ট হতে পারেননি তিনি। বলেন, ‘‘মূল ভবনের পিছনে বাইরের লোকজন তেমন আসেন না। ভাস্কর্যটি এখানে বসানো আর না-বসানো একই কথা। কেউ দেখবে না, জানবে না, শুধু কোর্টের লোকেরাই দেখবে।’’

মৌলবাদীদের দাবি মেনে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ভাস্কর্যটি সরিয়ে ফেলার পরে ছাত্র ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। শুক্রবার সকালে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠি, কাঁদানে গ্যাস ও জল কামান ব্যবহার করে। যে তিন জন ছাত্র নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, রবিবার তাদের জামিন দেওয়া হয়। বিশিষ্ট জনেরাও মৌলবাদীদের দাবির কাছে মাথা নুইয়ে ভাস্কর্যটি সরানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হন। তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন— এর পর মৌলবাদীরা মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কর্যগুলি-সহ যে সব ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার দাবি জানিয়ে আসছে, সেগুলিকেও আর রাখা যাবে না। শনিবারও ঢাকায় বড় প্রতিবাদ সভা করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। তবে, শাসক দল আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়েদুল কাদের জানিয়ে দেন, ‘মূর্তিটি’ সরানোর সিদ্ধান্ত সরকারের নয়, প্রধান বিচারপতির। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানান, বিতর্ক ওঠায় অন্য আইনজীবী ও বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্রকুমার সি্নহাই ভাস্কর্যটি সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ‘জাস্টিসিয়া’ ভাস্কর্যটি সরানোর জন্য বিএনপি নেতৃত্বও প্রধান বিচারপতিকে ধন্যবাদ জানান।

সুপ্রিম কোর্টের সামনে ডিসেম্বরে ভাস্কর্যটি বসানো হয় প্রধান বিচারপতি সি্নহার নির্দেশে। হেফাজতে ইসলামি ও অন্য মৌলবাদীরা জানায়, সুপ্রিম কোর্টের পাশের ঈদগা থাকায় রমজান মাস শুরুর আগেই দাঁড়িপাল্লা ও তলোয়ার হাতে নারীর ভাস্কর্যটি ওখান থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। এর পরে একটি অনুষ্ঠানে হেফাজতের প্রধান আল্লামা শফির উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও জানান— তিনিও চান মূর্তিটি ওখান থেকে সরানো হোক। প্রধান বিচারপতির সঙ্গে তিনি এ বিষয়ে কথা বলার আশ্বাসও দেন।


বিক্ষোভ: ভাস্কর্য ফের বসানোর প্রতিবাদে। ঢাকায়। ছবি: পিটিআই।

শনিবার বেশি রাতে প্রায় ৩০ জন শ্রমিক গাঁইতি কোদাল নিয়ে ভাস্কর্যটি সুপ্রিম কোর্টের মূল ভবনের পিছনে নতুন করে বসাতে যান। রাতের মধ্যেই সে কাজ শেষ করা হয়। খবর পেয়ে মৌলবাদীদের কয়েকটি সংগঠন বিক্ষোভ মিছিলও বার করে। তবে সে বিক্ষোভ বড় আকার নেয়নি। এর আগে বিমানবন্দরের কাছে ‘লালন’ ভাস্কর্যটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয় মৌলবাদীরা।

শুক্রবার হেফাজতে ইসলামি তাদের দাবি মেনে ‘জাস্টিসিয়া’ ভাস্কর্যটি সরানোয় প্রধানমন্ত্রীকে সাধুবাদ জানিয়েছিল। একই সঙ্গে ঢাকা-সহ দেশের সর্বত্র সব ধরনের ভাস্কর্য ও মূর্তি ভেঙে ফেলার দাবিও জানায় তারা। তবে আওয়ামি লিগের নেতৃত্ব শনিবার আশ্বাস দিয়েছেন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত কোনও ভাস্কর্য সরানো বা ভাঙার প্রশ্নই নেই।

Lady Justice Statue of Lady Justice বাংলাদেশ Supreme Court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy