Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Bangaladesh News

চিনের জোড়া সাবমেরিনে শক্তিশালী হল বাংলাদেশ নৌবাহিনী

তাইওয়ানের প্রথম মহিলা রাষ্ট্রপতি সাই ইংওয়েন ক্ষমতা পেয়েই নতুন পথের দিশারী। বিরোধের পাঁচিল ভেঙে আমেরিকার সঙ্গে সুসম্পর্ক চান। কাজটা সহজ নয়। তাইওয়ানের সঙ্গে আমেরিকার কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। রাষ্ট্রপুঞ্জের সদস্যও নয় তারা। একমাত্র যোগ অস্ত্র বেচাকেনায়।

অমিত বসু
শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৭ ১৫:২৩
Share: Save:

তাইওয়ানের প্রথম মহিলা রাষ্ট্রপতি সাই ইংওয়েন ক্ষমতা পেয়েই নতুন পথের দিশারী। বিরোধের পাঁচিল ভেঙে আমেরিকার সঙ্গে সুসম্পর্ক চান। কাজটা সহজ নয়। তাইওয়ানের সঙ্গে আমেরিকার কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। রাষ্ট্রপুঞ্জের সদস্যও নয় তারা। একমাত্র যোগ অস্ত্র বেচাকেনায়। আমেরিকা প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র বিক্রি করে তাইওয়ানকে। চিন তাইওয়ানকে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র মনে করে না। দেশটাকে তারা নিজেদের ২৩তম প্রদেশ ভাবে। সাই ইংওয়েনের সরকারকে স্বীকারও করে না। আমেরিকার নতুন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইচ্ছেটা অন্য। এক কোণে পড়ে থাকা তাইওয়ানকে প্রশ্রয় দিয়ে চিনকে শিক্ষা দেওয়া। ইংওয়েনের সঙ্গে তিনি ফোনে কথা বলেছেন। তাই নিয়ে ঝড় আমেরিকাতেই। ট্রাম্পের যুক্তি, যাদের কাঁড়ি কাঁড়ি ডলারের অস্ত্র বেচতে পারি, তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারব না কেন।

আরও পড়ুন: সিলেটের ডেরা দখল, অভিযান তবু চলছেই

বিষয়টা উল্টো হচ্ছে। সম্পর্ক থাকলে দেওয়া নেওয়া। এখানে অস্ত্রের খাতিরে সম্পর্কের সূচনা। ব্যবসাটা বড়। তাতেই কাউকে কাছে টানা বা দূরে ঠেলা। ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক খুব ভাল। ভারত রাশিয়া থেকে অস্ত্র নেয় নির্দ্ধিধায়। ২০১৬-র ১৬ অক্টোবর গোয়ায় ব্রিকস বৈঠকে ভারত-রাশিয়া চুক্তিতে ঠিক হয়, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে রাশিয়া ভারতে ৯ এম-৪০০ ট্রিয়াম্ফ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম তৈরি করবে। যাতে আকাশপথে ৪০০ কিলোমিটার দূরত্বে বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র এমনকী ড্রোন হানা রোখা যাবে। চুক্তির পরিমাণ ৫০০ কোটি ডলারেরও বেশি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর 'মেক ইন ইন্ডিয়া' প্রকল্পে ভারতে ২০০টি কামভ হেলিকপ্টার বানাবে রাশিয়া। ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার গ্রিগোরোভিচ শ্রেণির চারটে রণতরী রাশিয়ার থেকে কিনবে ভারত।

রাশিয়ার সঙ্গে মৈত্রীতে ভারতের সামরিক সমৃদ্ধির সুযোগ। বাংলাদেশও চিনের কাছ থেকে সামরিক সাহায্য পাচ্ছে। চিন বাংলাদেশের দিকে সর্বস্তরে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে। যেটা আগে পাকিস্তানেই সীমাবদ্ধ ছিল। চিনের লম্বা হাত বাংলাদেশকে ছুঁত না। এখন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। বাংলাদেশের সিংহভাগ উন্নয়ন প্রকল্পে চিন। পদ্মা সেতু নির্মাণে চিনের সাহায্য অকল্পনীয়। এ বার সামরিক সহযোগিতাতেও এগিয়ে এসেছে চিন। চট্টগ্রামের ঈশা খাঁ নৌঘাঁটিতে মাস চারেক আগেই এসে দাঁড়িয়েছিল চিনের দুটি সাবমেরিন, 'বানৌজা নবযাত্রা', আর 'বানৌজা-জয়যাত্রা'। স্বাধীনতা দিবসের আগে তা আনুষ্ঠানিক ভাবে জুড়ল বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দুটির উদ্বোধন করে বলেন, সাবমেরিন দুটি আত্মরক্ষার্থে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। বিশ্বে গুটিকয়েক দেশ সাবমেরিনে অভ্যস্ত। সেই সংক্ষিপ্ত তালিকায় বাংলাদেশের নাম উঠল। গর্বের বিষয়। ১৯৭১-এ বাংলাদেশ নৌবাহিনী গঠিত হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেছিলেন, নৌবাহিনীকে তিনি সর্ব্বোচ্চ আধুনিক মানে উন্নীত করবেন। তাঁর অঙ্গীকারই রূপ পাচ্ছে। হাসিনার কথা, বাংলাদেশ একটি শান্তিপ্রিয় দেশ, কিন্তু তার মানে এই নয় যে অন্যায়, অবিচারকেও বাঙালি মেনে নেবে।

ভারতের উত্তরে চিনের সিন কিয়াং প্রদেশ। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অরুণাচল প্রদেশ রাজ্যটির অধিকার নিয়ে ভারত-চিন বিরোধ। ভারতকে বাগে রাখতে পাকিস্তানকে ব্যবহার করেছে চিন। এ বার কি নতুন রাস্তা খুঁজছে। চিন যেন মনে রাখে, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অভিন্ন মৈত্রীর। কোনও অবস্থাতেই তাদের মাঝখানে পাঁচিল তোলা যাবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE