Advertisement
E-Paper

উৎপাদন খরচ ২০% বাড়ার অভিযোগ

উৎপাদন খরচ বাড়ায় সঙ্কটে রাজ্যের ফেরো-অ্যালয় এবং মাঝারি মাপের ইস্পাত সংস্থা।এক দিকে বিদ্যুতের চড়া দাম, অন্য দিকে ইস্পাতজাত পণ্য তৈরির কাঁচামাল কোক আমদানির উপর কেন্দ্রের শাস্তিমূলক আমদানি শুল্ক চাপানো— এই সাঁড়াশি চাপেই নাভিশ্বাস উঠেছে ফেরো অ্যালয় ও মাঝারি মাপের ইস্পাত তৈরির সংস্থাগুলির।

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:৫৯

উৎপাদন খরচ বাড়ায় সঙ্কটে রাজ্যের ফেরো-অ্যালয় এবং মাঝারি মাপের ইস্পাত সংস্থা।

এক দিকে বিদ্যুতের চড়া দাম, অন্য দিকে ইস্পাতজাত পণ্য তৈরির কাঁচামাল কোক আমদানির উপর কেন্দ্রের শাস্তিমূলক আমদানি শুল্ক চাপানো— এই সাঁড়াশি চাপেই নাভিশ্বাস উঠেছে ফেরো অ্যালয় ও মাঝারি মাপের ইস্পাত তৈরির সংস্থাগুলির। রাজ্যে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু ফেরো অ্যালয় সংস্থা বন্ধ হয়েছে। কাজ হারিয়েছেন প্রায় ১০ হাজার কর্মী। এই পরিপ্রেক্ষিতে উৎপাদনকারীদের সংগঠন রাজ্যে বিদ্যুতের দামে ভর্তুকি চালুর পক্ষে সওয়াল করেছে।

প্রসঙ্গত, মেটালার্জিকাল কোক তৈরির দেশীয় সংস্থাগুলিকে সুরক্ষিত রাখতে আমদানি করা কোকের উপর কেন্দ্র গত নভেম্বরের শেষে শাস্তিমূলক শুল্ক বসিয়েছে। পাশাপাশি, তার বেশ কিছু দিন আগেই রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা বাড়িয়েছে বিদ্যুতের দাম। দুইয়ের জাঁতাকলে পড়ে হু হু করে বেড়েছে কোকের দর। যার বিরূপ প্রভাব পড়েছে ইস্পাত এবং ফেরো অ্যালয়ের উৎপাদন খরচে। দেশে ফেরো অ্যালয় ও মাঝারি ইস্পাত সংস্থাগুলিতে জরুরি কাঁচামালের ৬০ শতাংশই আমদানি করা কোক।

রোহিত ফেরো টেকের এমডি অঙ্কিত পাটনি বলেন, ‘‘উৎপাদন খরচ প্রায় ২০% বেড়েছে। আমদানি করা কোকের দাম আগেই অনেকটা বেড়েছিল। তার উপর শাস্তি-শুল্ক বসায় মড়ার উপর খাঁড়ার ঘায়ের অবস্থা।’’

বস্তুত, উৎপাদন খরচ বাড়ায় ফেরো অ্যালয় এবং ইস্পাত তৈরির ছোট ও মাঝারি সংস্থাগুলির অস্তিত্বই সঙ্কটে। ইন্ডিয়ান ফেরো অ্যালয় প্রোডিউসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল জে কে চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্যে ইতিমধ্যেই গোটা আটেক ফেরো অ্যালয় কারখানার ঝাঁপ বন্ধ। অনেকে বাধ্য হয়েছে উৎপাদন কমাতে। ফলে প্রায় হাজার দশেক কর্মী বেকার হয়েছেন। অধিকাংশই বাঁকুড়া এবং মেদিনীপুরের পিছিয়ে পড়া এলাকার।’’

পাটনি জানান, ‘‘হলদিয়া ও বিষ্ণুপুরে আমাদের দু’টি কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। ১,৭০০ জন কাজ হারিয়েছেন। রাজ্যে প্রায় ৭০টি ফেরো অ্যালয় কারখানায় উৎপাদন কমাতে হয়েছে। সেগুলিতেও ছাঁটাই হয়েছে।’’

বিশেষত সমস্যায় পড়েছে রফতানি ভিত্তিক ফেরো অ্যালয় এবং ইস্পাতজাত পণ্য তৈরির সংস্থাগুলি। পাটনি বলেন, ‘‘আমাদের সিলিকন কারখানাটি প্রধানত রফতানি ভিত্তিক। রফতানির জন্য বরাত জোগানোর চুক্তি আগেই সই করেছি। তাই এখন শাস্তি-শুল্ক বসায় উৎপাদন খরচ বাড়লেও পণ্যের দাম বাড়ানো সম্ভব নয়।’’

তবে পশ্চিমবঙ্গ না-দিলেও অন্য কিছু রাজ্যে ফেরো অ্যালয় সংস্থাগুলি বিদ্যুতের মাশুলে রাজ্য সরকারের দেওয়া ভর্তুকির সুবিধা পাচ্ছে। জে কে চট্টোপাধ্যায় জানান, ‘‘অন্ধ্রপ্রদেশে ৩০টি ফেরো অ্যালয় কারখানার মধ্যে ২৭টিই বন্ধ হয়েছিল। অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের থেকে বিদ্যুৎ খরচে ভর্তুকি পেয়ে তাদের অধিকাংশই পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। তেলঙ্গনাতেও ভর্তুকির সুবিধা রয়েছে। ওড়িশায় ভর্তুকি চালু নিয়ে কথা অনেকটাই এগিয়েছে।’’ পশ্চিমবঙ্গেও ওই ধরনের ভর্তুকি পাওয়া গেলে তা ফেরো অ্যালয় সংস্থাগুলিকে চাঙ্গা করে তুলতে বিশেষ সহায়ক হবে বলে মনে করছে উৎপাদনকারীদের ওই সংগঠন।

Ferro Alloy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy