Advertisement
০৫ মে ২০২৪

জিএসটি-র ক্ষতে মলমের খোঁজ

বিভিন্ন বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র যে সব দাবি তুলেছেন, তার অধিকাংশও মেনে নেওয়া হতে চলেছে বলেই খবর।

চিন্তিত: বৃহস্পতিবার জেটলি। ছবি: পিটিআই।

চিন্তিত: বৃহস্পতিবার জেটলি। ছবি: পিটিআই।

প্রেমাংশু চৌধুরী
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৭ ০২:২১
Share: Save:

জিএসটি চালুর পরে প্রথম তিন মাসে ছোট-মাঝারি শিল্প আর ব্যবসায়ীদের এক বড় অংশ যে নানা অসুবিধার মুখে পড়েছে, বুধবারই তা স্বীকার করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, শুক্রবার জিএসটি পরিষদের বৈঠকে সেই সমস্ত বিষয়গুলি আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়ার। নোটবন্দির পরে তড়িঘড়ি জিএসটি চালু করায় যে ছোট শিল্প ধাক্কা খেয়েছে, তা বলছে বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে শুরু করে বিরোধী দল পর্যন্ত সকলে। এমনকী যে ব্যবসায়ীরা বিজেপির বরাবরের ভোটব্যাঙ্ক, তাঁদের একটা বড় অংশও এ বিষয়ে খড়্গহস্ত। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, এই প্রবল চাপের মুখে শুক্রবার ছোট-মাঝারি শিল্প, রফতানিকারী ও অসংগঠিত ক্ষেত্রের জন্য সুরাহার বন্দোবস্ত করতে চলেছে পরিষদ। বিভিন্ন বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র যে সব দাবি তুলেছেন, তার অধিকাংশও মেনে নেওয়া হতে চলেছে বলেই খবর।

কী কী বিষয়ে কিছুটা সুবিধা দেওয়া হতে পারে, তা নিয়ে জল্পনা বিস্তর। সূত্রের খবর, যাঁদের ব্যবসা বছরে দেড় কোটি টাকা পর্যন্ত, তাঁদের প্রতি মাসের বদলে তিন মাসে একবার রিটার্ন দাখিলের সুযোগ দেওয়া হতে পারে। রফতানির সময়ে সম্মিলিত জিএসটি-র (আইজিএসটি) ক্ষেত্রে নগদ টাকা না-মিটিয়ে লিখিত প্রতিশ্রুতি বা ‘লেটার অব ক্রেডিট’ দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হতে পারে। যাতে পুঁজি আটকে না থাকে। সম্প্রতি অমিতবাবু যে দাবি তুলেছিলেন।

জিএসটি-র আওতার বাইরে থাকা কোনও ছোট সংস্থা থেকে বড় সংস্থা পণ্য কিনলে, বড়টিকেই কর মিটিয়ে তার হিসেব রাখতে হয়। ফলে ছোটগুলির ব্যবসা মার খাচ্ছে। কারণ, তাদের সঙ্গে লেনদেন এড়িয়ে যাচ্ছে অনেকে। তাই এই ব্যবস্থা আপাতত স্থগিত রাখা হতে পারে।

বৃহস্পতিবারই অমিতবাবু কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন, জিএসটি-র প্রক্রিয়ায় যে খামতি রয়েছে, তার বড় প্রমাণ, তা চালুর পরে জুলাইয়ের (৫২.০২ লক্ষ) তুলনায় অগস্টে (৪১.৫০ লক্ষ) রিটার্ন দাখিল করা করদাতার সংখ্যা কমা। তাঁর অভিযোগ, প্রক্রিয়াগত ত্রুটির ফলেই ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পে ধাক্কা লাগছে। ব্যবসায়ীদের আস্থা ফেরাতে দ্রুত সংশোধন জরুরি। তাঁর দাবি, রফতানিকারীদের পুঁজি আটকে ব্যবসা মার খাওয়ায় চর্ম, গয়না, হস্তশিল্পে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। ১০ নভেম্বরের মধ্যে তাঁদের জুলাই-অগস্টের কর রিফান্ডের ব্যবস্থা হোক।

অমিতবাবু চান, ইমিটেশনের গয়নার জব ওয়ার্কে কর ১৮ থেকে কমে ৫% হোক। প্যাকেটবন্দি চাপাটি-রুটির উপরেও জিএসটি ১২ থেকে কমে হোক ৫%। হস্তশিল্পকে যে ছাড় দেওয়া হয়েছে, সেখানে শোলার তৈরি পণ্যও অন্তর্ভুক্ত করা হোক।

মোদী-জেটলি জিএসটি-র ক্ষত নিরাময়ের রাস্তাই এখন খুঁজছেন। সামনেই গুজরাতে ভোট। সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত ছোট ব্যবসায়ীদের হয়ে কেন্দ্রের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ছোট ব্যবসায়ী, রফতানিকারী, অসংগঠিত ক্ষেত্রকে সুরাহার কথা বলেছে মোদীও। গুজরাতের কথা ভেবে পোশাকে জিএসটি কমানো হতে পারে। এখন ৭৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ব্যবসায় কম্পোজিট প্রকল্পের সুযোগ মেলে। বিহারের উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদীর দাবি, ‘‘এই সুবিধা ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যবসায় দেওয়া হোক।’’

অমিতবাবু নিজে অবশ্য পরিষদের বৈঠকে আসছেন না। তবে আলোচ্যসূচির বিষয়গুলিতে মতামত জানিয়েছেন।

সম্ভাব্য

• ব্যবসা দেড় কোটি পর্যন্ত হলে, তিন মাসে এক বার রিটার্ন

• রফতানির সময়ে নগদে আইজিএসটি মেটানোর বদলে করের লিখিত প্রতিশ্রুতি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arun Jaitley GST Goods and Services Tax
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE