Advertisement
E-Paper

বৃদ্ধি ঢিমে, সঙ্কুচিত শিল্প, ভরসা সেই সুদ ছাঁটাই!

বছর খানেক আগেও ক্রমাগত চোখ রাঙিয়ে গিয়েছে বেলাগাম মূল্যবৃদ্ধি। এখন দেখা যাচ্ছে যে, তা নিয়ন্ত্রণে। খুচরো মূল্যস্ফীতির হার থাকবে ৪ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যেই। কিন্তু তাতেও স্বস্তির জো নেই। কারণ সমীক্ষায় আশঙ্কা, জিনিস-পত্রের দাম কমছে আসলে চাহিদা না-থাকার কারণেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৭ ০২:৪৮
চিন্তিত: অর্থনীতির পালে হাওয়া কই? ছবি: পিটিআই।

চিন্তিত: অর্থনীতির পালে হাওয়া কই? ছবি: পিটিআই।

প্রচারে খামতি নেই। কিন্তু শুক্রবার মোদী সরকারের আর্থিক সমীক্ষাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল ‘অচ্ছে দিন’ এখনও দূর অস্ত্‌। অন্তত অর্থনীতির।

অর্থবর্ষের শুরুতে ৬.৭৫ থেকে ৭.৫ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। তখনই প্রশ্ন উঠেছিল, এই হার ৮ শতাংশের নীচে কেন? আর বছরের মাঝখানে এসে এ দিন সংসদে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির পেশ করা সমীক্ষায় সরকারই মেনে নিল যে যা পরিস্থিতি, তাতে ৭.৫ শতাংশের আশেপাশে পৌঁছনোও যথেষ্ট শক্ত!

বছর খানেক আগেও ক্রমাগত চোখ রাঙিয়ে গিয়েছে বেলাগাম মূল্যবৃদ্ধি। এখন দেখা যাচ্ছে যে, তা নিয়ন্ত্রণে। খুচরো মূল্যস্ফীতির হার থাকবে ৪ শতাংশের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যেই। কিন্তু তাতেও স্বস্তির জো নেই। কারণ সমীক্ষায় আশঙ্কা, জিনিস-পত্রের দাম কমছে আসলে চাহিদা না-থাকার কারণেই।

অর্থনীতির এই বিবর্ণ ছবি পেশের দিনে সরকারের চিন্তা আরও বাড়িয়েছে জুনে শিল্পের হাল। দেখা যাচ্ছে, ওই মাসে শিল্পোৎপাদন সরাসরি কমেছে ০.১%। কল-কারখানায় এবং মূলধনী পণ্যের উৎপাদন কমেছে তো বটেই। করুণ ছবি খনন, বিদ্যুৎ উৎপাদন, পরিকাঠামোর মতো ক্ষেত্রেও।

সব মিলিয়ে অবস্থা এতটাই সঙ্গিন, যে এখন অর্থনীতির হাল ফেরাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ ছাঁটাইয়ের দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে কেন্দ্রকে। ফের সওয়াল করতে হচ্ছে তার জন্য।

আরও পড়ুন: পহলাজ-রাজ শেষ, সেন্সরের দায়িত্বে প্রসূন

জিএসটি চালু করা, এয়ার ইন্ডিয়ার বেসরকারিকরণ, রাজকোষ ঘাটতিতে রাশ ইত্যাদি দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে বলে দাবি করা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু তেমনই সমীক্ষায় কার্যত কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে কৃষিঋণ মকুবের সিদ্ধান্তকে। উত্তরপ্রদেশ দিয়ে শুরু। পরে একই পথে হেঁটেছে মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব ইত্যাদি রাজ্য। মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যনের যুক্তি, ‘‘ধার মকুবের ঠেলা সামলাতে অন্য সরকারি খরচ কমাতে হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশেই পরিকাঠামো বরাদ্দ কমেছে ১৩%। এতে চাহিদা কমবে। ধাক্কা খাবে অর্থনীতি।’’ সমীক্ষায় স্পষ্ট, এমনিতেই বেসরকারি লগ্নিতে ভাটার টান। ঋণ নিচ্ছে না শিল্প। এই অবস্থায় সরকারি খরচেও রাশ টানতে হলে, তা অর্থনীতির পক্ষে সুখবর নয়।

স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লায় বক্তৃতার আগে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে এই সমীক্ষার তথ্য অবশ্যই অস্বস্তির। যেখানে উল্লেখ রইল কৃষিতে আয় কমা থেকে শুরু করে জিও আসার দৌলতে টেলি পরিষেবা শিল্পের খাবি খাওয়া-সহ নানা উদ্বেগের।

রংচটা ছবি

• চলতি অর্থবর্ষে বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছিল ৬.৭৫ থেকে ৭.৫%। কিন্তু ৭.৫% ছোঁয়া কঠিন, মানছে সমীক্ষাই

• জুনে শিল্পোৎপাদনও সরাসরি কমলো ০.১%

• বেসরকারি লগ্নিতে ভাটার টান

• মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু দাম সম্ভবত কমছে চাহিদার অভাবেই

• কৃষি ঋণ মকুবের জেরে ছাঁটাই হতে পারে অন্য সরকারি ব্যয়। শুধু তাতেই চাহিদা কমতে পারে ০.৭%

• লক্ষণ নেই অনুৎপাদক সম্পদের সমস্যা কমার

• নতুন কাজের সুযোগ তৈরি হচ্ছে না প্রত্যাশিত হারে। কাজে কোপ তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে। স্পষ্ট দক্ষতার অভাবও

• হাল ফেরাতে ভরসা সেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদের হার ছাঁটাই। ফের সওয়ালের সুর চড়ল তার জন্য

স্বস্তি যেখানে

• বেলাগাম মূল্যস্ফীতির চোখরাঙানি নেই

• কমতে পারে রাজকোষ ঘাটতি। চলতি খাতে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের ঘাটতিও ১ শতাংশের নীচে

• দীর্ঘ মেয়াদে ভাল ফল দেবে জিএসটি চালু, এয়ার ইন্ডিয়ার বেসরকারিকরণ এবং জ্বালানিতে ভর্তুকি ছাঁটাই

• বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডারের মাপ বিশ্বে দ্বিতীয়

• চাঙ্গা হওয়ার পথে রফতানিও

Economic Survey 2017 GDP Growth Narendra Modi নরেন্দ্র মোদী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy