রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বিপুল অনাদায়ী ঋণের বোঝা কমাতে কড়া ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। দেউলিয়া আইন প্রয়োগ করে টাকা উদ্ধারের জন্য খণ-খেলাপিদের তালিকা তৈরির কাজ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক প্রায় শেষ করে ফেলেছে বলে সোমবারই ব্যাঙ্ককর্তাদেরও আশ্বাস দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তার ঠিক এক দিনের মাথায় এ ধরনের ১২টি অ্যাকাউন্টকে চিহ্নিত করল শীর্ষ ব্যাঙ্কের কমিটি।
প্রতিটি অ্যাকাউন্টেই খেলাপি ঋণের অঙ্ক ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। তাদের হাতেই রয়েছে ব্যাঙ্কগুলির ঘাড়ে চাপা মোট অনুৎপাদক সম্পদের ২৫ শতাংশ। এ বার দেউলিয়া আইনের আওতায় সংস্থা বেচে ঋণের টাকা আদায় করার হাতিয়ার ব্যাঙ্কের হাতে তুলে দিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
শীর্ষ ব্যাঙ্কের চিফ জেনারেল ম্যানেজার জোস জে কাট্টুর মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, দেউলিয়া আইনে মামলা দায়ের করার ব্যাপারে ব্যাঙ্কগুলিকে শীঘ্রই নির্দেশিকা পাঠাবেন তাঁরা। জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইব্যুনালকেও এ ধরনের মামলায় বাড়তি গুরুত্ব দিতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ব্যাঙ্কের পাহাড়প্রমাণ ঋণ উদ্ধার হওয়ার আশা নেই বলেই তা এখন অনুৎপাদক সম্পদের খাতায়। পরিমাণ ইতিমধ্যেই ৮ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে, যার মধ্যে ৬ লক্ষ কোটিই রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ঘাড়ে। এই বোঝা ঝে়ড়ে ফেলে তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর পথ দেখাতেই তৈরি হয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অভ্যন্তরীণ উপদেষ্টা কমিটি (আইএসি)। সোমবারই প্রথম বৈঠকে বসে তারা এ ধরনের মোট ৫০০টি অ্যাকাউন্টের মধ্যে ১২টির দিকে আঙুল তোলে, যেগুলির প্রতিটিতে বকেয়া ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। ২০১৬-র ৩১ মার্চ পর্যন্ত হিসেবে, এই ধরনের খেলাপি ঋণের ৬০ শতাংশ বা তার বেশিই অনুৎপাদক সম্পদ হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক।
অনুৎপাদক সম্পদের বাদবাকি অ্যাকাউন্টগুলির ক্ষেত্রে কমিটির সুপারিশ হল, ব্যাঙ্কগুলিকে আগামী ছ’মাসের মধ্যে সেগুলির উপর রাশ টানার পরিকল্পনা নিতে হবে। তা সম্ভব না-হলে ব্যাঙ্কগুলি দেউলিয়া আইনের সাহায্যে তা উদ্ধার করতে পারবে।
অনুৎপাদক সম্পদ নিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির কর্তাদের সঙ্গে সোমবারই আলোচনায় বসেন জেটলি। সেখানেই তিনি জানান, দেউলিয়া আইনে কী ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তার তালিকা তৈরির কাজ প্রায় শেষ করে ফেলেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।’’ সম্প্রতি কেন্দ্র ব্যাঙ্কিং আইন সংশোধন করে অর্ডিন্যান্স এনে অনুৎপাদক সম্পদ মোকাবিলায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে বিশেষ ক্ষমতা দিয়েছে। তা প্রয়োগ করেই ঋণ-খেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানাল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy