Advertisement
E-Paper

রাজ্য ছাড়ার প্রস্তুতি শুরু টেক মহীন্দ্রার

এক দিকে, এইচ-১বি ভিসা আর আউটসোর্সিং নিয়ে মার্কিন মুলুকে কড়াকড়ি। অন্য দিকে, নতুন প্রযুক্তির ঢেউ। এই জোড়া চ্যালেঞ্জে খোলনলচে বদলের রাস্তা খুঁজতে বাধ্য হচ্ছে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প।

গার্গী গুহঠাকুরতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৭ ০৩:০৫

নতুন প্রযুক্তির সুনামিতে কাজ খোয়ানোর যন্ত্রণা প্রায় প্রতিদিনই টের পাচ্ছেন এ দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের কর্মীরা। এ বার মূলত ওই কারণে এই প্রথম পশ্চিমবঙ্গে ব্যবসার ঝাঁপ বন্ধের পথে হাঁটতে চলেছে কোনও সংস্থা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, সব কিছু এখনকার পরিকল্পনা মতো চললে, ছ’মাসের মধ্যে রাজ্য থেকে ব্যবসার পাট গোটাতে চলেছে টেক মহীন্দ্রা।

সংশ্লিষ্ট শিল্পমহল সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু দিন ধরেই এই প্রক্রিয়া শুরু করেছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাটি। সম্প্রতি সংস্থার কর্তারা কলকাতায় এসে দফায়-দফায় কথা বলেছেন এখানকার কর্মীদের সঙ্গে। অনেকের কাছে জানতে চেয়েছেন, তাঁরা বেঙ্গালুরু কিংবা পুণে যেতে রাজি কি না। সব মিলিয়ে যা ইঙ্গিত, তাতে টেক মহীন্দ্রা দ্রুত রাজ্য ছাড়তে পারে বলেই ধারণা সংশ্লিষ্ট মহলের।

প্রায় এক দশক আগে বানতলায় বাজার দরে ১২ একর জমি কেনার পরেও সেখানে ক্যাম্পাস গড়তে পারেনি টেক মহীন্দ্রা। তা তৈরির কাজ শুরু করেও মাঝপথে বন্ধ করতে হয়েছিল দূষণ সমস্যার জেরে। এখন যে ভাড়া নেওয়া অফিসে তারা কাজ করে, সেখানে কর্মীসংখ্যা প্রায় ২,০০০। যার প্রায় অর্ধেকই রয়েছেন বিপিও পরিষেবায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তেমন কোনও উন্নত প্রকল্পের কাজ এখানকার অফিসে হয় না। মূলত সেই কারণেই এখানে ব্যবসা চালিয়ে যেতে আর আগ্রহী নয় তারা।

এক দিকে, এইচ-১বি ভিসা আর আউটসোর্সিং নিয়ে মার্কিন মুলুকে কড়াকড়ি। অন্য দিকে, নতুন প্রযুক্তির ঢেউ। এই জোড়া চ্যালেঞ্জে খোলনলচে বদলের রাস্তা খুঁজতে বাধ্য হচ্ছে দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প। তুলনায় কম খরচে দক্ষ কর্মী জুগিয়ে মোটা ব্যবসার যে মডেল এত দিন চলেছে, তা অকেজো হয়ে পড়ছে ক্রমশ। কারণ, সেই কম দক্ষতার কাজ করে ফেলছে মেশিনই। অটোমেশন, মেশিন লার্নিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মতো প্রযুক্তির ধাক্কায় এখন বেশি দক্ষতার নতুন কাজ খুঁজতে বাধ্য হচ্ছে তারা। ফলে কাজ খোয়াচ্ছেন বহু কর্মী।

বিশ্ব ব্যাঙ্কের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২১-এর মধ্যে শুধু যন্ত্রের কারণে ৬৯% চাকরি কমবে ভারতে। আন্তর্জাতিক সমীক্ষা সংস্থা হর্সেস ফর সোর্সেস রিসার্চের দাবি, চার বছরে ৬.৪ লক্ষ কাজের সুযোগ হারাবে। বিশেষত মার খাবে তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা ও বিপিও। যেখানে অনেক ক্ষেত্রে একই কাজ করতে হয় বারবার। কিছু কাজে দক্ষতাও লাগে কম। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, টেক মহীন্দ্রার এই সিদ্ধান্তের কারণও মূলত এটি।

একেই সেজ নিয়ে রাজ্যের অনড় অবস্থানের কারণে এখানে পা রাখেনি ইনফোসিস। দ্বিতীয় ক্যাম্পাস গড়তে পারেনি উইপ্রো। তার উপরে এ বার টেক মহীন্দ্রাও সরে গেলে, তা রাজ্যের ‘গর্বের’ তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের পক্ষে বড় ধাক্কা হবে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি।

Tech Mahindra West Bengal Technology টেক মহীন্দ্রা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy