Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সাজছে রবীন্দ্র সরোবর

রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতরের উদ্যোগে রবীন্দ্র সরোবরের পূর্ব দিকে সার্বিক সংস্কারের কাজ চলছে। ৭৩ একর জায়গা জোড়া ঢাকুরিয়া লেকটির ‘রবীন্দ্র সরোবর’ নামকরণ হয় ১৯৫৮-এ। ২০০৩-এ জাতীয় লেক সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় আসে এটি। অভিযোগ, তার পরেও এই সরোবরটি অবহেলিত অবস্থায় পড়েছিল। এ বার ১০ কোটি টাকা খরচ করে চলছে সংস্কারের কাজ।

চলছে সংস্কারের কাজ।

চলছে সংস্কারের কাজ।

জয়তী রাহা
শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০১৪ ০০:০১
Share: Save:

রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতরের উদ্যোগে রবীন্দ্র সরোবরের পূর্ব দিকে সার্বিক সংস্কারের কাজ চলছে। ৭৩ একর জায়গা জোড়া ঢাকুরিয়া লেকটির ‘রবীন্দ্র সরোবর’ নামকরণ হয় ১৯৫৮-এ। ২০০৩-এ জাতীয় লেক সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় আসে এটি। অভিযোগ, তার পরেও এই সরোবরটি অবহেলিত অবস্থায় পড়েছিল। এ বার ১০ কোটি টাকা খরচ করে চলছে সংস্কারের কাজ।

নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, প্রায় দশ ফুট গ্রিলের ফেন্সিংয়ের কাজ চলছে। ইন্ডিয়ান লাইফ সেভিং সোসাইটির (আইএলএসএস) দেওয়াল নানা ভারতীয় কার্টুন চরিত্রে চিত্রিত হবে। রবীন্দ্রসরোবরের ছোট প্রবেশ পথগুলি বন্ধ করে গোলপার্ক, নজরুল মঞ্চ, ক্যালকাটা রোয়িং ক্লাব (সিআরসি), বেঙ্গল রোয়িং ক্লাব এবং লায়নস সাফারি পার্কের কাছে ৫.৫ মিটার উঁচু এবং ৬ মিটার প্রস্থের মোট পাঁচটি প্রবেশপথ হচ্ছে। প্রবেশপথে টেরাকোটার টাইলসে রবীন্দ্রনাথের লেখনী থাকবে। সরোবরের পাড় রঙিন টাইলসে সাজছে। আইএলএসএস থেকে সিআরসি পর্যন্ত সরোবর নিচু রেলিং ও বোলার্ড চেনে ঘেরা হচ্ছে। বোলার্ডে লাগানো হয়েছে অল্প আলো।

দফতর সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই আইএলএসএস ক্লাবের উল্টো দিকে তৈরি হয়েছে কুঞ্জবন। সংস্কার হবে সরোবরের পদ্মপুকুর লেক এবং সুইমিং পুলটিরও। আগে সরোবরের পশ্চিমে বোটিংয়ের ব্যবস্থা ছিল। এখন পূর্ব দিকেও তা চালু করতে মূল লেকের দু’কোণে তৈরি হচ্ছে দু’টি জেটি। বিশেষ করে সরোবরে ঘুরতে আসা বয়স্কদের জন্যে সিআরসি ও নজরুল মঞ্চের কাছে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা হয়েছে। লেক ও স্টেডিয়ামের মাঝে বরোজ রোডে রবীন্দ্রনাথের মূর্তি বসানো হয়েছে। সাজিয়ে তোলা হয়েছে ‘রোটারি’। নিরাপত্তা ও সৌন্দর্যায়নের কথা ভেবে সরোবরে মৃদু আলোর ব্যবস্থা থাকছে। টালিগঞ্জের দিকের সরোবরের ভাঙা পাঁচিল নতুন করে তৈরি হবে। সব মিলিয়ে এই কাজে নগরোন্নয়ন দফতরের প্রায় ১০ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে।

১৯২০-এ বালিগঞ্জ ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় বসতি গড়তে নিচু জমি ভরাটের কাজ করে কেআইটি। এর জন্য খোঁড়াখুঁড়ির ফলে তৈরি হয় লেকটি। এখানেই একটি স্টেডিয়াম-সহ বেশ কয়েকটি ক্লাব রয়েছে। দীর্ঘ অবহেলায় লেকের জলও দূষিত হয়ে যায়। হাওড়া গণতান্ত্রিক নাগরিক সমিতি, রবীন্দ্রসরোবর বাঁচাও কমিটি ও পরিবেশ দূষণ রোধ কমিটি এক সঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টের গ্রিন বেঞ্চে পিটিশন দাখিল করে। সেই শুরু রবীন্দ্র সরোবর বাঁচাও আন্দোলনের। কেআইটি জানাচ্ছে, জাতীয় লেক সংরক্ষণ কমিটির উদ্যোগে ২০০২-’০৮-এ এই সরোবর সংস্কার হয়েছিল। খরচ হয়েছিল ছ’কোটি টাকা।

পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “পরিবেশের কথা মাথায় রেখে এই সংস্কার হচ্ছে। এই প্রথম এত বড় করে রবীন্দ্র সরোবরের সৌন্দর্যায়নের কাজ হচ্ছে। টাকার কারণে পুরো সরোবরের এক সঙ্গে সংস্কার করা না গেলেও ধাপে ধাপে হবে। ফের টাকা বরাদ্দ হলে সরোবরের পশ্চিম অংশেরও কাজ শুরু হবে। সরোবরের নিরাপত্তায় ১৬০টি সিসিটিভি বসানো হবে। এতে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা খরচ হবে।” দফতর সূত্রে খবর, কলকাতা পুলিশ এবং কেআইটি মিলিত ভাবে এর দায়িত্বে থাকবে। প্রযুক্তিগত এবং প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের পর্যায়ে রয়েছে এই প্রস্তাব।

ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

jayati raha rabindra sarobar beautification
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE