মলয় দাশগুপ্ত
ডেঙ্গিতে মৃত্যু এ বার খোদ পুর চেয়ারম্যানের ওয়ার্ডে!
মঙ্গলবার রাত দেড়টা নাগাদ বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে মলয় দাশগুপ্ত (৭০) নামে ওই বৃদ্ধের। তাঁর ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেঙ্গি লেখা রয়েছে। মলয়বাবু দক্ষিণ দমদম পুরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে থাকতেন।
মৃতের স্ত্রী রমা দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার তাঁর স্বামীর জ্বর আসে। রবিবার সকালে সেই জ্বর ছেড়ে গেলেও রাত থেকেই মলয়বাবুর বমি ও ডায়রিয়া শুরু হয়। বারবার বমি হতে থাকায় সোমবার তাঁকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মঙ্গলবার অবস্থার আরও অবনতি ঘটায় মলয়বাবুকে আইসিইউ-তে রাখা হয়েছিল। রমাদেবী বলেন, ‘‘আমার স্বামীকে বেশ কয়েক ইউনিট রক্ত দেওয়া হয়। তা-ও তাঁর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। রাত দেড়টা নাগাদ মৃত্যু হয়।’’ রমাদেবী জানান, মলয়বাবুর জ্বর দিন দুয়েকের মধ্যেই ছেড়ে যাওয়ায় তাঁরা রক্ত পরীক্ষা করাননি।
নাগেরবাজার মোড়ের কাছে কাজিপাড়া মোড় থেকে একটু এগিয়েই চিটাগাং কলোনি। সেখানেই ছোট একটি বাড়িতে থাকতেন মলয়বাবু। পেশায় দুধের ব্যবসায়ী ওই বৃদ্ধের এক ছেলে রয়েছে। এলাকার সক্রিয় তৃণমূল কর্মী বলেও পরিচিতি ছিল মলয়বাবুর। দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘উনি প্রথম দিকের তৃণমূল কর্মী ছিলেন। আমার খুব পুরনো বন্ধু। কাল বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ওঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে। রাতের দিকে প্লেটলেট খুবই নেমে যায়। সেই সঙ্গে রক্তচাপ অস্বাভাবিক রকমের বেড়ে যায়।’’ চেয়ারম্যান জানান, এলাকায় সাধারণ মানুষের বিপদে-আপদে ঝাঁপিয়ে পড়তেন মলয়বাবু। এই বয়সেও ডেঙ্গি-বিরোধী নানা অভিযানে সামিল হয়েছিলেন। চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘এমন এক বন্ধু ও সক্রিয় তৃণমূল কর্মীকে হারানোয় আমরা খুবই দুঃখিত।’’
শীতের মুখে এলাকায় ডেঙ্গি ও জ্বরের প্রকোপ কমেছে বলেই পুরসভার দাবি। কিন্তু ফের ডেঙ্গিতে মৃত্যু পুরকর্তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। দক্ষিণ দমদম পুরসভা বারবার দাবি করেছে যে, তারা ডেঙ্গি দমনে খুবই সক্রিয়। সব ক’টি ওয়ার্ডেই নাকি নিয়মিত মশার মারার তেল ও ব্লিচিং ছড়ানো হচ্ছে। বিনামূল্যে রক্ত পরীক্ষার শিবিরও করা হচ্ছে। তবে ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের অভিযোগ, এত সব সত্ত্বেও মশার উপদ্রব কিন্তু কমেনি। জ্বর সামান্য কমলেও এখনও আতঙ্ক রয়েছে। এলাকাবাসীর বক্তব্য, পুরসভা যা করছে, ডেঙ্গি মোকাবিলায় তা যথেষ্ট নয়। আরও বেশি করে তাদের সক্রিয় হতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy