গৌতম পাল।
দুর্গন্ধে টিকতে পারছিলেন না পড়শিরা। খবর যায় থানায়। পুলিশ গিয়ে বন্ধ ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে বছর পঞ্চান্নের এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করে। রবিবার সকালে দমদম শেঠবাগানের এই ঘটনায় প্রতিবেশীদের থেকেই পুলিশ জেনেছে, মৃতের নাম গৌতম পাল। তিনি আর জি কর হাসপাতালের চিকিৎসক। আপাত ভাবে হৃদ্রোগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করলেও মৃত্যুর অন্যান্য সম্ভাব্য কারণও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। মৃত্যুর বিষয়ে বিশদে কিছু বলতে চায়নি গৌতমবাবুর পরিবারও।
পুলিশ জানায়, এ দিন সকাল থেকেই ওই বাড়ির চারতলার একটি ফ্ল্যাট থেকে উৎকট গন্ধ বেরোচ্ছিল। তাতে সন্দেহ হওয়ায় ফ্ল্যাটের অন্য বাসিন্দারাই পুলিশে খবর দেন। তাঁদের কাছ থেকে মৃতের পরিচয় জানার পরে আর জি কর কর্তৃপক্ষের সাহায্যে তাঁর পরিবারকে খবর দেয় দমদম থানা।
এ দিন হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কর্তৃপক্ষ জানান, গৌতম পাল হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন। হাসপাতালের রিউম্যাটোলজি বিভাগের দায়িত্বও ছিল তাঁর উপরে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করে বিজয়ার শুভেচ্ছাও জানান ওই চিকিৎসক। পরদিন অর্থাৎ শুক্রবার থেকে তিনি হাসপাতালে আসছিলেন না। শনিবার তাঁর আউটডোরে রোগী দেখার কথা ছিল। তিনি না আসায় হাসপাতাল থেকে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাঁর মোবাইল বন্ধ ছিল বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, গৌতমবাবু পড়াতেন, রোগী দেখতেন। তার বাইরে সহকর্মী এবং ছাত্রদের সঙ্গে খুব একটা বেশি কথা বলতেন না। অন্য দিকে, প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, ওই ফ্ল্যাটে ছ’মাস আগে ভাড়া এসেছিলেন ওই চিকিৎসক। ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন তিনি। সকালে বেরিয়ে যেতেন, ফিরতেন রাতে। প্রতিবেশীদের কারও সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল না। অন্তর্মুখী গৌতমবাবুকে বৃহস্পতিবারের পর থেকে আর বাইরে বেরোতে দেখা যায়নি বলেই জানা গিয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গৌতমবাবু বিবাহিত এবং তাঁর স্ত্রী-ও চিকিৎসক। তাঁদের সন্তান রয়েছে কি না, সে বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারেননি। প্রতিবেশীরা অবশ্য তাঁর পরিবারের কথা জানেন না। এ দিন গৌতমবাবুর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বাড়ির লোকেরা তাঁর বিষয়ে বিশদে কিছু বলতে চাননি। যদিও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এই মৃত্যু কি না এই নিয়ে নিশ্চিত নয় পুলিশ। গৌতমবাবুর গলায় একটা কাটা দাগ পাওয়া গিয়েছে। মৃত্যুর সঠিক কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই দমদম থানার পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা রুজু করেছে। মৃতদেহটি আর জি কর হাসপাতালেই ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy