শুভব্রত মজুমদার।
তিন বছর ধরে মায়ের দেহ ফ্রিজারে বন্ধ করে রেখে তাঁর পেনশন তোলার অভিযোগ উঠেছে ছেলের বিরুদ্ধে। বেহালার এই ঘটনায় প্রথম থেকেই প্রশ্ন উঠছিল ব্যাঙ্কের ভূমিকা নিয়ে।
কী ভাবে এত বছর তিনি পেনশন তুলতে পেরেছেন, তা জানতে ব্যাঙ্কের বক্তব্য চেয়ে পাঠিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু নিউ আলিপুরের ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক তদন্তে সহযোগিতা করেনি বলে অভিযোগ উঠল।
বেহালা থানা সূত্রে খবর, কিছু তথ্য জানতে দু’বার ওই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে নোটিস পাঠালেও সদুত্তর আসেনি। ব্যাঙ্ক থেকে আসা তথ্যে সন্তষ্ট না হওয়ায় সোমবার ফের কর্তৃপক্ষকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। লালবাজারের এক কর্তার কথায়, ‘‘সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে। এর পরেও সহযোগিতা না পেলে ওই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
বেহালার জেমস্ লং সরণির বাসিন্দা শুভব্রত মজুমদার তাঁর মা বীণা মজুমদারের দেহ তিন বছর ধরে বাড়িতে ফ্রিজারে সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন। সপ্তাহ দুই আগে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। ফুড কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার প্রাক্তন কর্মী ছিলেন বীণাদেবী। পুলিশ সূত্রের খবর, গত বছরের নভেম্বরে ওই ব্যাঙ্কের নিউ আলিপুর শাখায় মায়ের ‘লাইফ সার্টিফিকেট’ জমা দিয়েছিলেন শুভব্রত। পুলিশ জানায়, তাতে বীণাদেবীর স্বাক্ষরও ছিল। কিন্তু এই ঘটনা কী ভাবে ব্যাঙ্কের চোখ এড়াল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ নিয়মমতো, কারও লাইফ সার্টিফিকেট জমা নেওয়া হয় শুধুমাত্র তাঁর উপস্থিতিতেই।
তদন্তকারীদের জানানো হয়েছে, বীণাদেবী জীবিত কি না, সে বিষয়ে খোঁজ নিতে ব্যাঙ্ক থেকে গত বছরের ২৫ নভেম্বর লোক পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও ঘটনাটি কেন ধরা পড়েনি, তার সদুত্তর মেলেনি। এই ঘটনায় ব্যাঙ্কের কোনও ভূমিকা আছে কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
তদন্তকারীদের বক্তব্য, মানসিক সমস্যা থাকলেও অত্যন্ত সচেতনতার সঙ্গেই ব্যাঙ্ক থেকে মায়ের পেনশনের টাকা তুলতেন শুভব্রতবাবু। তিনি এখন পাভলভ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পেনশনের টাকা তোলার বিষয়ে আরও জানতে প্রয়োজনে আদালতের অনুমতি নিয়ে পাভলভে গিয়ে শুভব্রতকেও জেরা করতে চায় পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy