ঘটকালি: এ ভাবেই ছবি দিয়ে অনলাইনে খোঁজ চলছে পোষ্যের সঙ্গীর।
সঙ্গী চাই ফ্রুটির। ফেসবুক পেজ-এ ফ্রুটির ছবিও দেওয়া হয়েছে— অনেকটা বিয়ের বিজ্ঞাপনের সাইটের কায়দায়।
ফ্রুটির ছবি দেখে পছন্দ হলে যোগাযোগ করতে পারবেন সঙ্গীর অভিভাবক। দুই পক্ষের অভিভাবকেরা সম্মত হলে তবেই হবে মিলন। তবে বিয়ে-টিয়ে করে পাকাপাকি বন্ধনে জড়ানোর ব্যাপার নেই, এ মিলন চিরকালীন নয়। শুধুই কয়েক দিনের।
ফেসবুক পেজে ফ্রুটির ছবি দিয়ে এমনই সঙ্গী চাওয়া হয়েছে। এক বছর সাত মাসের এই পমেরেনিয়ানের পাশাপাশি সঙ্গীর খোঁজ চলছে এক বছর এগারো মাসের ল্যাব্রাডর, ক্যান্ডিরও। ছবি দেওয়া হয়েছে তাদেরও।
বছর খানেক আগে কলকাতায় চালু হওয়া পোষ্যদের জন্য রেস্তোরাঁর দুই মালিক শ্রুতি সিংহ এবং অঙ্কুশ বাট্টুরের এটা নতুন উদ্যোগ। তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন পশুপ্রেমী, সমমনস্ক আরও কিছু যুবক-যুবতী।
শহরে অনেক পরিবারেই এখন পোষ্য থাকে। বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির সারমেয়রা এখন ভিড় জমায় রকমারি ‘ডগ শো’-এ। কিন্তু পোষ্যের মিলনের জন্য এখনও খুব হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়ান মানানসই সঙ্গী। পশু চিকিৎসক সুবীর ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘কুকুরদের ক্ষেত্রে সঙ্গীর সঙ্গে মিলনটা জরুরি। বিশেষ করে মেয়ে কুকুরদের ক্ষেত্রে। তাতে জরায়ুর রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।’’
শ্রুতি ও অঙ্কুশ দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন প্রজাতির কুকুরের দেখাশোনা করেন। তাঁদের অভিজ্ঞতা, কুকুরদের মিলনের সময় এলে বা অভিভাবকেরা চাইলে মনমতো সঙ্গী পাওয়া দুষ্কর হয়ে ওঠে। শ্রুতির কথায়, ‘‘এক শ্রেণির মানুষ, যাঁরা কুকুর নিয়ে ব্যবসা করেন, তাঁরা এই বাজারটা নিয়ন্ত্রণ করেন। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ, তাঁদের পছন্দ মতো কুকুরের সঙ্গে মিলন করাতে বাধ্য হয়ে যান অনেকেই। আমরা কুকুরদের অভিভাবকদের একটা প্ল্যাটফর্ম দিতে চাইছি।’’ সেই প্ল্যাটফর্মটাই তৈরি হয়েছে জুলাই মাসের গোড়ায়।
পোষ্যদের রেস্তোরাঁয় কিছু দিন ধরেই ভিড় জমাচ্ছেন কমবয়সিদের দল। এমন অনেকেই আছেন যাঁরা পোষ্য
ভালোবাসেন কিন্তু বাড়িতে রাখা সমস্যা। যেমন দেবস্মিতা দাস বন্ধুদের নিয়ে এসেছিলেন রেস্তোরাঁয়। কুকুর ভালবাসেন, কিন্তু বাড়িতে নেই। তাই রেস্তোরাঁয় শ্রুতি-অঙ্কুশদের পোষ্যদের সঙ্গে খানিকটা সময় কাটিয়ে গেলেন। অয়ন গুহ ও ত্রিপর্ণা সেনও একাধিক বার এসেছেন পোষ্যদের ভালবাসার এই ঘরে। এ ভাবে পোষ্যদের নিয়ে আসার সুযোগ, শ্রুতিদের পোষ্যদের উপস্থিতি— সব মিলিয়ে পরিবেশটা পছন্দ হয়ে গিয়েছে অয়নদেরও।
সেই রেস্তোরাঁয় পোষ্য ‘চিনি’-কে নিয়ে খেতে এসেছিলেন মনীষা ভট্টাচার্য। শুধু তাঁর পরিবারের জন্য মুখরোচক ইতালীয় খাবারই নয়, চিনির জন্যও রয়েছে বিশেষ মেনু। চিকেন, নিরামিষ এমনকী, পছন্দের আইসক্রিমও। সেখানে পৌঁছে বিয়ের বিজ্ঞানের মতো ফেসবুক পেজ-এ ছবি দিয়ে পোষ্যদের সঙ্গী খোঁজার খবর শুনে বেজায় খুশি মনীষা। তিনি বলেন,
‘‘দারুণ। আমি তো চিনির সঙ্গী খুঁজে বেড়াই। ভেট-এর উপরে নির্ভর করতে হয়। নিজে থেকে এ ভাবে চিনির সঙ্গী খুঁজতে পারলে তো খুবই ভাল!’’
পশু চিকিৎসক সুভাষ সরকারের কথায়, ‘‘এখন ছেলে কুকুর পোষার প্রবণতা বেশি। মেয়ে কুকুর পেতে হন্যে হয়ে ঘুরতে হয়। ফলে এই উদ্যোগ
ভাল।’’ তবে চিকিৎসক সুবীরবাবুর পরামর্শ— সোশ্যাল সাইটে পাওয়া সঙ্গীর সঙ্গে মিলনের আগে এক বার চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে ভাল হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy