Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সাইবার-সন্ত্রাস ঠেকাতে নয়া প্রযুক্তি পুলিশের

শুধু আগ্নেয়াস্ত্র নয়, জঙ্গি কার্যকলাপ দমনে এ বার ‘মগজাস্ত্রেও’ শান দিতে চাইছে লালবাজার! পুলিশ সূত্রে খবর, সাইবার দুনিয়ায় জঙ্গি কার্যকলাপ দমনে এ বার উন্নত তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করতে চাইছে লালবাজারের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। ওই প্রযুক্তি কিনতে ইতিমধ্যেই নবান্নের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

শিবাজী দে সরকার ও কুন্তক চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৩৫
Share: Save:

শুধু আগ্নেয়াস্ত্র নয়, জঙ্গি কার্যকলাপ দমনে এ বার ‘মগজাস্ত্রেও’ শান দিতে চাইছে লালবাজার!

পুলিশ সূত্রে খবর, সাইবার দুনিয়ায় জঙ্গি কার্যকলাপ দমনে এ বার উন্নত তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করতে চাইছে লালবাজারের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। ওই প্রযুক্তি কিনতে ইতিমধ্যেই নবান্নের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, এতে প্রায় আড়াই কোটি টাকা খরচ হবে।

গোয়েন্দারা বলছেন, নিজেদের প্রচার তো বটেই, প্রশাসনকে বিপাকে ফেলতে সরাসরি বোমা-বন্দুকের বদলে সাইবার জগতেও হানাদারি শুরু করেছে জঙ্গি সংগঠনগুলি। ইসলামিক স্টেট বা আইএস জঙ্গিদের এ ব্যাপারে সক্রিয়তা সুবিদিত। ধৃত আইএস জঙ্গি মুসার ক্ষেত্রে সে কথা টের পেয়েছেন গোয়েন্দারা। তাঁরা বলছেন, মুসা ফেসবুকের মতো সাইট ব্যবহার করে এ রাজ্যে সংগঠন তৈরির চেষ্টা করছিল। রাজ্যের নানা ওয়েবসাইটে মাঝেমধ্যেই পাকিস্তানি হ্যাকারেরা হানা দেয়। এই পরিস্থিতিতে সাইবার জগতে জঙ্গি মোকাবিলা ও তদন্তে সক্ষমতা না বাড়ালে দেশের নিরাপত্তা জোরদার হবে না।

লালবাজার সূত্রের খবর, সাইবার জগতে জঙ্গি মোকাবিলা ও তদন্তের ক্ষেত্রে ‘ল্যাবরেটরি ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম্‌স’ (এলআইএমএস বা লিমস) কেনার কথা ভাবা হয়েছে। এ জন্য ১ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা প্রয়োজন। উন্নত তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য প্রায় ৯২ লক্ষ টাকা খরচ করে সফ্‌টওয়্যার এবং কম্পিউটার হার্ডওয়্যার সামগ্রী কেনার প্রস্তাবও পাঠানো হয়েছে। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘সাইবার অপরাধ দমনের জন্য একমাত্র আমাদের কাছেই ল্যাবরেটরি রয়েছে। কিন্তু তা দিয়ে এসটিএফের কাজ পুরোপুরি হবে না। তাই আলাদা ভাবে এই ল্যাবরেটরি তৈরি করতে হবে।’’

আরও পড়ুন: দেহ নেবে কে, লাশকাটা ঘরেও একা শুয়ে পার্থ

সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানান, লিমস একটি কম্পিউটার সিস্টেম। বিভিন্ন তথ্য জোগাড়, সঞ্চয় ও বিশ্লেষণের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বর্তমানে সাইবার মাধ্যমে জঙ্গি ও আন্তর্জাতিক অপরাধ চক্রের সক্রিয়তা অনেক বেড়েছে। ফলে ভুরি ভুরি তথ্য রোজ তৈরি হচ্ছে। জঙ্গি মতবাদ প্রচার, সাইবার হানা, আর্থিক দুর্নীতি-সহ নানা অপরাধের তথ্য গোয়েন্দাদের কাছে আসছে। সে সব ঠিক মতো গুছিয়ে রাখা ও বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে ‘লিমস’ উপযোগী। ‘‘অন্য তদন্তেও এখন সাইবার প্রযুক্তির প্রয়োজন পড়ে। লিমস ব্যবহারে সেই তদন্তেও উপকার মিলবে,’’ বলছেন লালবাজারের এক গোয়েন্দা-কর্তা। তবে বিভাসবাবু এ-ও জানাচ্ছেন, ‘‘আদালতে কিন্তু পুলিশ নিজেদের এই বিশ্লেষণের নথি পেশ করতে পারবে না। নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে সে ক্ষেত্রে ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির তথ্যই অগ্রাধিকার পাবে।’’

পুলিশ সূত্রে দাবি, শুধু তথ্য বিশ্লেষণই নয়, সাইবার ও টেলিকম নজরদারি চালাতেও বিশেষ সফ্‌টওয়্যার কেনা হবে। ইদানীং জঙ্গি সংগঠনের সদস্য ও অন্ধকার জগতের চাঁইরা বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপ অর্থাৎ ইন্টারনেট ব্যবহার করে ফোন করা হচ্ছে। ফলে জঙ্গিদের ফোনের হদিস পেতে সমস্যা হচ্ছে। উন্নত সফ্‌টওয়্যারের মাধ্যমে সন্দেহভাজনদের ফোনে আড়ি পাতা এবং কী ভাবে নির্দিষ্ট নজরদারি চালানো যায়, তার উপায় খোঁজা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cyber Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE