Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
দুই নিগমের ভোট

প্রস্তুতির অন্দরমহল ‘আলো’ করে বহিরাগতেরা

পুর-নির্বাচনের ২৪ ঘণ্টা আগেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে সেই বহিরাগতরাই। ভোট ঘোষণার শুরুতে বিরোধী দলগুলি সরব ছিল বহিরাগতদের নিয়ে। বৃহস্পতিবার প্রচারের শেষ দিনে শাসক দল তৃণমূলও অভিযোগ করেছিল, বিরোধীরা বহিরাগতদের এনে ভোট করানোর চেষ্টা করবে।

ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি। শুক্রবার সল্টলেকে। ছবি: শৌভিক দে।

ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি। শুক্রবার সল্টলেকে। ছবি: শৌভিক দে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৫ ০০:৪৯
Share: Save:

পুর-নির্বাচনের ২৪ ঘণ্টা আগেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে সেই বহিরাগতরাই।

ভোট ঘোষণার শুরুতে বিরোধী দলগুলি সরব ছিল বহিরাগতদের নিয়ে। বৃহস্পতিবার প্রচারের শেষ দিনে শাসক দল তৃণমূলও অভিযোগ করেছিল, বিরোধীরা বহিরাগতদের এনে ভোট করানোর চেষ্টা করবে। শুক্রবার দিনভরও সেই বহিরাগতদের সামলাতে রণকৌশল ঠিক করার খবরই মিলল বিভিন্ন দলের অন্দর থেকে। তবে মুখে অবশ্য কেউই তা স্বীকার করলেন না। বিধাননগর থেকে বালি— সর্বত্রই একই ছবি।

সল্টলেক থেকে শুরু করে ভিআইপি রোডের গেস্ট হাউস— এ দিন সর্বত্রই বহিরাগতদের নিয়ে উদ্বেগে থেকেছেন সকলে। রাজ্যের নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশকর্তারা, তৃণমূল থেকে শুরু করে সিপিএম, বিজেপি-সহ সব দলই। কোথাও বহিরাগতদের খিচুরি-ডিমভাজা খাওয়ানোর গল্প শোনা গেল, কোথাও আবার নেতারা বিরিয়ানি খাওয়ালেন বহিরাগতদের, কোথাও আবার রাজনৈতিক দলগুলিকে বহিরাগতদের খেদিয়ে দিতে লাঠি হাতে নামতে দেখার গুঞ্জনও উঠল। কোথাও আবার খবর পাওয়া গেল, রাতে লাইন দিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে সল্টলেকে বহিরাগতদের নিয়ে গাড়ি ঢুকছে। প্রকাশ্যে অবশ্য এ নিয়ে কেউ কিছু বলেননি। তবে দিনভর হাওয়ায় ভেসে বেরিয়েছে, যা রটে, তার কিছু তো বটে!

উত্তর ২৪ পরগনার বিজেপি সভাপতি গোপাল সরকারের অভিযোগ, পুলিশের নির্দেশ পেয়ে তাঁরা বৃহস্পতিবার প্রচারের পর থেকেই সল্টলেক বা পুর-নিগম এলাকার বাইরে রয়েছেন। কিন্তু শাসক দলের নেতারা সেই নিয়ম মানছেন না। সেই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেল যখন দমদমের বাসিন্দা তৃণমূল নেতা বরুণ নট্ট, অভিজিৎ (বাপি) মিত্র, মৃণাল সর্দাররা নিজেরাই স্বীকার করলেন, রাতে রাজারহাটে দলীয় বৈঠক করেছেন তাঁরা। ভোটের দিন ১ থেকে ৫ নম্বরে ভোট করানোর দায়িত্ব তাঁদের উপরেই দেওয়া হয়েছে।

তবে প্রার্থীরা কেউ বহিরাগতদের সঙ্গে যোগাযোগের কথা স্বীকার করেননি। পুরভোটের দুই হেভিওয়েট নেতা বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত জানান, দিনভর বিশ্রাম নেওয়ার পরে সন্ধ্যায় দলীয় কর্মীদের নিয়ে ভোটের প্রস্তুতি দেখতে বেরোন তিনি। প্রাক্তন চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী জানান, তিনিও দিনটা ছুটির মেজাজেই কাটিয়েছেন। তবে নিজের বাড়িতে বুথকর্মী ও পোলিং এজেন্টদের সঙ্গে বৈঠকও সেরেছেন। সিপিএমের মেয়র পদপ্রার্থী অসীম দাশগুপ্ত সকালে বিশ্রাম নেন। তবে পরে নির্বাচনের কাজেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন। রাজারহাটের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী তাপস চট্টোপাধ্যায় দিনের শুরুটা গীতাঞ্জলি পাঠে করলেও, দিনের শেষটা করেছেন দলীয় কর্মীদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে। খবরে থাকা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী দেবরাজ চক্রবর্তী জানান, পুলিশ তাঁর নির্বাচনী এজেন্টকে ডেকে পাঠানোয় সকালটা কেটেছে থানাতেই। বিকেলে অবশ্য তিনি সাধারণ লোকজনের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। তৃণমূলের ভোটের দায়িত্বে থাকা বিধায়ক সুজিত বসু ও খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও ভোট প্রস্তুতি পরিচালনায় ব্যস্ত ছিলেন।

শুক্রবার দিনভর ‘ছুটি’র মেজাজে কাটালেন বালির ভোটের সেনাপতি তৃণমূলের মন্ত্রী তথা জেলা সভাপতি অরূপ রায়ও। তবে মোবাইলে রাত পর্যন্ত যোগাযোগ রাখলেন বালির ১৬টি ওয়ার্ডের প্রার্থীদের সঙ্গে। মাঝে সকালে অংশ নেন হাওড়ার কয়েকটি অনুষ্ঠানে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার দিনভর জেলা অফিসে বসেই ভোট প্রস্তুতির খবর নিয়েছেন।

যদিও প্রস্তুতির পাশপাশি অন্য দলগুলি কী কৌশল নিচ্ছে, তার হদিসও করতে দেখা যায় সব দলের নেতা-কর্মীদের। সেই খবরের ভিত্তিতে একে অন্যের বিরুদ্ধে বহিরাগতদের এনে অশান্তি সৃষ্টির অভিযোগও করতে দেখা যায় সব দলকেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE