Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কাপড় ধরে টানতেই বেরিয়ে এল জেঠুর পা

জেঠুকে পরিবারের সদস্য বলেই মনে করি। রাত দেড়টা নাগাদ তাই আর চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে উদ্ধারকাজ দেখতে পারলাম না। ক্লাবের অন্য সদস্য ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্তাদের বললাম, জলে নামতে চাই।

ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছেন উদ্ধারকারী শুভঙ্কর দাস। নিজস্ব চিত্র।

ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছেন উদ্ধারকারী শুভঙ্কর দাস। নিজস্ব চিত্র।

শুভঙ্কর দাস
শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

সকালে খবর পেয়েই চলে এসেছিলাম। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী যখন কলেজ স্কোয়ারের পুলে কাজল জেঠুকে তন্নতন্ন করে খুঁজছে, আমার ধৈর্যের বাঁধ ভাঙছিল। মনে হচ্ছিল, মানুষটা হয়তো আটকে রয়েছে। যে করেই হোক উদ্ধার করতে হবে।

আমি বহু বছর বৌবাজার ব্যায়াম সমিতির এই সুইমিং ক্লাবের সদস্য। জেঠুকে পরিবারের সদস্য বলেই মনে করি। রাত দেড়টা নাগাদ তাই আর চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকে উদ্ধারকাজ দেখতে পারলাম না। ক্লাবের অন্য সদস্য ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্তাদের বললাম, জলে নামতে চাই। ওঁরা বাধা দিলেন না। পুকুরের বিভিন্ন দিকে সাঁতার কাটছি, কিন্তু কিছুই পাচ্ছি না। রাত আড়াইটে নাগাদ জোরালো ড্রাগন সার্চ লাইটে লাল রঙের কাপড়ের টুকরো দেখে প্রথমে ভেবেছিলাম, কোনও শিক্ষানবীশ সাঁতারুর টুপি। বিপর্যয় মোকাবিলা দলের বাকি দুই সদস্যকে তা জানিয়ে কলেজ স্ট্রিটের দিকের পাড়ে ফের খুঁজতে গিয়েছিলাম।

আরও পড়ুন: বেকায়দায় আটকেই মৃত্যু, উদ্ধার দেহ

হঠাৎ মনে হল, ভাল করে ওই জায়গাটা দেখা জরুরি। বিপর্যয় দলের দু’জনকে নিয়ে ফের সাঁতরে গেলাম সে দিকে। কংক্রিটের স্ল্যাব আর কাঠের পাটাতনের ফাঁকে হাত ঢুকিয়ে কাপড়ের টুকরো ধরে টানতেই বেরিয়ে এল আস্ত একটা পা। শিউরে উঠলাম। সার্চ লাইট পাটাতনের ফাঁকে ফেলতেই দেখলাম, জেঠুর শরীরের অংশ। সব শেষ। জল কমেছিল বলেই হয়তো কিছুটা ভেসে উঠেছিল দেহ। পাটাতন আর বাঁশের খাঁজে এমন ভাবে জেঠু আটকে ছিলেন যে, নাইলনের দড়ি দিয়ে পা বেঁধে টেনে বার করতে হয়। জলই যে মানুষটার ধ্যানজ্ঞান, তাঁর এই পরিণতি মানতে পারছি না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE