বিজেপি রাজ্য দফতরে টিএমসিপি বিক্ষোভ।— নিজস্ব চিত্র।
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি নিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের সংঘর্ষে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিল। পরে পুলিশ এসে সাময়িক ভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও, মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এলাকা স্বাভাবিক হয়নি। গোটা এলাকা জুড়ে একটা চাপা উত্তেজনা রয়েছে। ঘটনার পর থেকেই সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছে তৃণমূল।
এ দিন বিকেলে সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হন লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা তথা উত্তর কলকাতা কেন্দ্রের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তারই প্রতিবাদ জানাতে বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর জনা পঁচিশেক সদস্য বিজেপি-র কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখাতে যান। মধ্য কলকাতায় সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ লাগোয়া মুরলীধর সেন লেনে প্রদেশ বিজেপি-র কার্যালয়। টিএমসিপি-র জনা কুড়ি সদস্য যখন মুরলীধর সেন লেনে স্লোগান দিতে দিতে ঢুকছেন, তখন বিজেপি কার্যালয়ের সামনে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা চার জন পুলিশ কর্মী তাঁদের আটকায়। কিন্তু, তাঁদের ঠেলে এগিয়ে যান টিএমসিপি কর্মীরা। বিজেপি-র সদর দফতরের মূল গেটে সবে পৌঁছেছেন তাঁরা, হঠাত্ই ভিতর থেকে জনা তিরিশেক কর্মী-সমর্থক লাঠি নিয়ে তাঁদের তাড়া করে। ধাওয়া খেয়ে টিএমসিপি কর্মীরা দৌড়ে পালিয়ে যান।
সেই সময় মহম্মদ আলি পার্কের দিক থেকে ধর্মতলার দিকে তৃণমূলের একটি মিছিল আসছিল। পালিয়ে যাওয়া টিএমসিপি কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রায় শ’দুয়েক তৃণমূল কর্মী ফের মুরলীধর সেন লেনের দিকে মারমুখী ভাবে এগিয়ে যান। রাস্তায় বৈদ্যুতিক কাজের জন্য পড়ে থাকা ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করেন। প্রায় মিনিট কুড়ি ধরে বিজেপি-র সদর দফতরে ইটবৃষ্টি চলে। ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি গাড়ি। বিজেপি কর্মীরাও পাল্টা আক্রমণ করেন। দু’পক্ষের এই লড়াইয়ে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ তখন কার্যত রণক্ষেত্র। পুলিশেরও দেখা মেলেনি। যে চার জন পুলিশ কর্মী ছিলেন, তাঁরাও এলাকা ছাড়েন।সংঘর্ষে আহত বিজেপি কর্মী। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
পরে বিকেল পাঁচটা নাগাদ প্রায় কুড়ি জন পুলিশ কর্মী ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ গার্ড রেল দিয়ে আটকে দেওয়া হয়। তৃণমূলের কর্মী সমর্থকেরা সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতে বসে পড়েন। নরেন্দ্র মোদীর নামে স্লোগান দিতে থাকেন। মোদী এবং অমিত শাহের গ্রেফতারির দাবিও জানানো হয়। বিজেপি কর্মীরা সদর দফতরের ভিতরে আটকে রয়েছেন বলে অভিযোগ। মাঝে পুলিশ এবং গার্ড রেল।
বিজেপি-র অভিযোগ, টানা ইটবৃষ্টিতে তাদের বেশ কয়েক জন কর্মী সমর্থক আহত হয়েছেন। তৃণমূলের অভিযোগ, তাঁদের কর্মী সমর্থকেরাও আহত হয়েছেন। এই প্রসঙ্গে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের পার্টি অফিসে যদি কেউ হামলা করে, আমরা কি তাদের ডেকে মোয়া খাওয়াবো? তৃণমূল আমাদের পার্টি অফিসে ধ্বংসাত্মক আক্রমণ চালিয়েছে। কিন্তু, এতে কি ওদের দল বাঁচবে? বাংলার মানুষ সব জানে। আমাদের বেশ কয়েক জন কর্মী গুরুতর জখম হয়েছেন।’’
আরও পড়ুন- এ বার গ্রেফতার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy