Advertisement
E-Paper

চাঁপদানিতে তৃণমূল কর্মীকে কুপিয়ে খুন

ভদ্রেশ্বরের চাঁপদানির এক তৃণমূল কর্মীর ক্ষতবিক্ষত দেহ মিলল শুক্রবার সকালে, এলাকার ডিভিসি খালের ধার থেকে। নিহত হাসিব আসলাম (২৭) নর্থব্রুক চটকলে কাজ করতেন। থাকতেন ওই চটকলের শ্রমিক মহল্লায়। বৃহস্পতিবার রাত থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৫ ০১:২৬
নিহত হাসিব আসলাম।

নিহত হাসিব আসলাম।

ভদ্রেশ্বরের চাঁপদানির এক তৃণমূল কর্মীর ক্ষতবিক্ষত দেহ মিলল শুক্রবার সকালে, এলাকার ডিভিসি খালের ধার থেকে। নিহত হাসিব আসলাম (২৭) নর্থব্রুক চটকলে কাজ করতেন। থাকতেন ওই চটকলের শ্রমিক মহল্লায়। বৃহস্পতিবার রাত থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। নিহতের গলার দাগ দেখে পুলিশের অনুমান, প্রথমে ধারাল অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কুপিয়ে, পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে তার জাতীয় কিছু দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়।

তবে, খুনের কারণ নিয়ে পুলিশ এবং নিহতের পরিবারের লোকজন অন্ধকারে। হাসিবের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করা হলেও তা কারও নামে করা হয়নি। হাসিবের বাবা, তৃণমূল নেতা মহম্মদ আসলাম বলেন, ‘‘ছেলের কোনও শত্রু ছিল না। কেন ওকে খুন করা হল, বুঝতে পারছি না।’’ দলগত ভাবে তৃণমূলের পক্ষ থেকেও কোনও অভিযোগ তোলা হয়নি। দলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন,‘‘ হাসিব আমাদের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। ওঁর কেউ শত্রু হতে পারে, ভাবতে পারছি না। দোষীদের গ্রেফতার করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’

হুগলির পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠী জানান, খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। খুনের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। সব দিক খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খুনের ঘটনায় জড়িতদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, কাজ থেকে বাড়ি ফিরে বৃহস্পতিবার রাত ৯টা নাগাদ মোটরবাইক নিয়ে বেরিয়ে যান হাসিব। পথে চাঁপদানি পুরসভার ভাইস-চেয়ারম্যান বিনয় কুমারের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। বিনয়বাবুর প্রস্তাবমতো তাঁর বাড়িতে গিয়ে কিছুক্ষণ গল্পগুজবও করেন হাসিব। রান ৯টা নাগাদ সেখান থেকে বের হন। কিন্তু আর বাড়ি ফেরেননি। ঘণ্টাখানেক পরে বাড়ি থেকে ফোন করা হলে হাসিব কিছুক্ষণ পরে ফেরার কথা জানান। কিন্তু রাত ১১টার পরেও না ফেরায় ফের পরিবারের লোকেরা একাধিকবার তাঁকে ফোন করেন। প্রথম দিকে বার কয়েক বেজে গেলেও পরে ফোনটি বন্ধ দেখে সকলে চিন্তায় পড়ে যান। শুরু হয় খোঁজ। হাসিবের নিখোঁজ হওয়ার কথা কানে যেতে পুরসভার ভাইস-চেয়ারম্যান বিনয়বাবুও বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। বাড়ির সামনে তিনি হাসিবের মোটরবাইকটি দেখতে পান। বিনয়বাবু পুলিশকে জানান, তাঁর বাড়ি থেকে বেরোনোর পরেই হাসিবের মোবাইলে ফোন আসে এবং তিনি মোটরবাইকটি তাঁর বাড়ির সামনে রেখে হেঁটেই কিছুটা এগিয়ে যান বলে স্থানীয় এক বাসিন্দার থেকে জানতে পেরেছেন।

সারারাত খোঁজাখুঁজির পরেও হাসিবের সন্ধান না মেলায় শুক্রবার সকালে যখন পরিবারের লোকজন থানায় গিয়ে নিখোঁজ ডায়েরি করার তোড়জোড় করছেন, তখনই স্থানীয় কিছু বাসিন্দার কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ডিভিসি খালের ধার থেকে হাসিবের দেহটি উদ্ধার করে। মুখ, মাথা-সহ হাসিবের সারা দেহেই ধারাল অস্ত্রের কোপ ছিল। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠানো হয়।

হাসিবকে খুনের কথা চাউর হতেই শ্রমিক মহল্লায় ভিড় করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। বিবাহিত হাসিবের ১১ মাসের একটি মেয়ে রয়েছে। তাঁর স্ত্রী এ দিন কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না। হাসিবের বাবা বলেন, ‘‘রাতে ছেলে বেরনোর সময়ে একটু পরেই ফিরে আসার কথা বলেছিল। কিন্তু আর ফিরল না। রাত দেড়টার আগে পর্যন্ত ওর ফোন বেজেছে। তারপরেই দেখি, ফোন বন্ধ। কী যে হল, বুঝতে পারলাম না।’’ হাসিবের মা নুরজাহান বিবি-সহ সকলে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছেন। চাঁপদানির ভাইস-চেয়ারম্যান বিনয়বাবু বলেন, ‘‘রাতে হাসিবের বাড়ি থেকেই ওঁর নিখোঁজ হওয়ার কথা জানতে পারি। সকালে শুনি ওই ঘটনা।’’

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy