Advertisement
২৮ এপ্রিল ২০২৪

কী ভাবে ফুটবলারদের সঙ্গে খেলতে হয় জানা আছে, বললেন অহলুওয়ালিয়া

পাহাড়ের ভোটে তৃণমূল প্রার্থী ভাইচুং ভুটিয়াকে পরাস্ত করে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ এসএস অহলুওয়ালিয়া। বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রে প্রচারে এসে সেই প্রসঙ্গ তুললেন তিনি। এই কেন্দ্রেও তৃণমূলের ফুটবলার প্রার্থী দীপেন্দু বিশ্বাস প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

তৃণমূলের রোড-শো।

তৃণমূলের রোড-শো।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:৪২
Share: Save:

পাহাড়ের ভোটে তৃণমূল প্রার্থী ভাইচুং ভুটিয়াকে পরাস্ত করে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ এসএস অহলুওয়ালিয়া। বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রে প্রচারে এসে সেই প্রসঙ্গ তুললেন তিনি। এই কেন্দ্রেও তৃণমূলের ফুটবলার প্রার্থী দীপেন্দু বিশ্বাস প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিজেপি সাংসদ শুক্রবার বলেন, “দার্জিলিঙে ভাইচুংকে ২ লক্ষেরও বেশি ভোটে হারিয়ে সাংসদ হয়েছি। তাই কী ভাবে ফুটবলারদের সঙ্গে খেলতে হয়, আমার জানা আছে।” বসিরহাট দক্ষিণে বিজেপি টিকিট দিয়েছে শমীক ভট্টাচার্যকে। অহলুওয়ালিয়া বলেন, “যখন শুনেছি বসিরহাটে একজন ফুটবলার প্রার্থী হয়েছে, তখনই ঠিক করি, শমীকের প্রচার সভায় যাব।”

এ দিন প্রান্তিক ময়দানের এক পাশে সভা করে বিজেপি। এ দিনই বসিরহাটে বিশাল মিছিল করেছে তৃণমূল। তা নিয়ে বিজেপি সাংসদের কটাক্ষ, “এত দিন জানতাম, সার্কাসে বহুরূপী থাকে। এখানে এসে দেখলাম, তৃণমূল জোকারদের নিয়ে বেরিয়েছে।” তৃণমূলের ফুটবলার প্রার্থীকে নিয়ে বিজেপি নেতার বক্তব্য, “লোকসভা-বিধানসভায় কোনও ফুটবল খেলার মাঠ কিংবা নাটকের মঞ্চ নেই। মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য যাঁরা লড়বেন, তাঁদের না পাঠিয়ে নায়ক-নায়িকা বা ফুটবলারদের পাঠানো মানে ওঁরা কেবল নীরব দর্শক হয়ে বসে থাকবেন।” দিল্লিতে ‘বাপের বেটা নরেন্দ্র মোদী’র সরকার যা বলে, তা-ই করে দেখাবে বলেও আশার কথা শুনিয়ে গিয়েছেন বিজেপি সাংসদ। তাঁর মতে, গত ৩৪ বছরে বাম সরকারের আমলে বাংলার যত না লোকসান হয়েছে, গত বছরে তৃণমূলের সরকার তার থেকে বেশি ক্ষতি করেছে বাংলার। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অহলুওয়ালিয়া বলেন, “মুকুলবাবু (তৃণমূল নেতা মুকুল রায়) বলেছেন তাঁর আমলে রেলের সঙ্গে সারদার নাম জড়ায়নি। তা হলে তো মমতাদিদির আমলে তেমনটা হয়েছে। সিবিআই তদন্ত শুরু করেছে। এরপরেও কারও সম্মানবোধ থাকলে তিনি চেয়ার ছেড়ে দেবেন।”

বক্তৃতা করছেন বিজেপি সাংসদ।

অন্য দিকে, এ দিন ভোটের প্রচারে বসিরহাট টাউনহল থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করেছিল তৃণূমল। সেখানে হাজির ছিলেন তৃণমূল নেতা মুকুল রায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, ইদ্রিস আলি, সুজিত বস, এটিএম আব্দুল্লা রনি, ছাত্রনেতা শঙ্কুদেব পন্ডা প্রমুখ। দলের প্রার্থী দীপেন্দুর বড় বড় কাটআউটও ছিল। ইটিন্ডা রাস্তার দু’পাশে বহু মানুষ ভিড় করে দাঁড়িয়ে শোভাযাত্রা দেখেছেন। অনেককে ফুল ছুঁড়তে দেখা গেল। কেউ আবার দীপেন্দু-সহ তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের উত্তরীয় পরিয়ে দেন। মিছিল ত্রিমোহণী পৌঁছলে দূর থেকে দেখা যায়, বিজেপি সাংসদ অহলুওয়ালিয়া আসছেন। তাঁকে সম্মান জানাতে এবং বিজেপি নেতার কনভয়কে জায়গা ছেড়ে দিতে হুডখোলা জিপ থেকে নেমে আসেন মুকুল-জ্যোতিপ্রিয়রা। তাঁরা জানতে পারেন, কাছেই প্রান্তিক ময়দানে বিজেপির সভা হচ্ছে। তাই ত্রিমোহণীতেই মিছিল শেষ করে দেয় তৃণমূল।

শোভাযাত্রার আগে টাউনহলে এক সভায় জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “বৃত্ত সমাপ্ত করতে আর একটা গোল চাই। রাজ্য থেকে বসিরহাটের সাংসদ তৃণমূলের, বসিরহাট এবং টাকি পুরসভা-সহ পঞ্চায়েতগুলির অধিকাংশই তৃণমূলের। শুধু বিধায়ক আসনটাই বাকি।” জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের গায়ে কিছু মানুষ কালি ছড়ানোর চেষ্টা করলেও তারা সফল হবে না। এই কেন্দ্রে আমরা সজাগ এবং সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে লড়াই করছি।” ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে হাসনাবাদে সেতুর কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান জ্যোতিপ্রিয়। সেই সঙ্গে বসিরহাট শহরের রাস্তা, নিকাশি, পানীয় জল প্রকল্পের অনুমোদন মিলেছে বলেও জানান। ভোটারদের কাছে তাঁর আহ্বান, “মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন বসিরহাটকে ঢেলে সাজতে। দীপেন্দুকে জয়ী করে আপনারা তার শরিক হোন।” বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রের উপনির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় নেতা মুকুল রায় বলেন, “মমতার বাংলা মমতারই থাকবে। মমতার কোন বিকল্প হবে না।” তিনি বলেন, “বিরোধীরা মূর্খের স্বর্গে বাস করছে বলেই এখানে জয়ের স্বপ্ন দেখছে।”

ছবি: নির্মল বসু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE