Advertisement
E-Paper

শিক্ষকের মতো মর্যাদা বা বেতন পান না, ক্ষোভ গ্রন্থাগারিকদের

রাজ্যে স্কুলে নানা বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন স্কুল গ্রন্থাগারিকেরা— এমনই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে রাজ্যের একমাত্র স্কুল গ্রন্থাগারিক সংগঠন অল বেঙ্গল স্কুল লাইব্রেরিয়ান্স অ্যাসোসিয়েশন।

অমিত কর মহাপাত্র

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:৩৩

রাজ্যে স্কুলে নানা বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন স্কুল গ্রন্থাগারিকেরা— এমনই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে রাজ্যের একমাত্র স্কুল গ্রন্থাগারিক সংগঠন অল বেঙ্গল স্কুল লাইব্রেরিয়ান্স অ্যাসোসিয়েশন।

তাঁদের অভিযোগ, স্যাম পিত্রোদার নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল নলেজ কমিশন ‘নো স্কুল উইদাউট লাইব্রেরি বাই ২০২০’-এর সুপারিশ করলেও এ রাজ্যে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার স্কুলের মধ্যে মাত্র হাজার দেড়েক স্কুলে রয়েছেন গ্রন্থাগারিক। এ দিক থেকে দেখলে, শিক্ষার অধিকার আইন থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে স্কুল পড়ুয়ারা। স্কুলে শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে গ্রন্থাগারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা সব মহলে স্বীকৃত হলেও এ রাজ্য সব থেকে বেশি বঞ্চিত। অথচ কেন্দ্রীয় সরকার ও দিল্লি রাজ্য সরকার পরিচালিত স্কুলগুলির ক্ষেত্রে এই সমস্যা না থাকায় গ্রন্থাগারিকেরা ছাত্রছাত্রীদের আধুনিক পরিষেবা দিতে সক্ষম। সে ক্ষেত্রে গ্রন্থাগারিকেরা শিক্ষকের মর্যাদা ভোগ করেন এবং সমান বেতনক্রম পান। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে গ্রন্থাগারিকদের অশিক্ষক কর্মী হিসাবে গণ্য করা হয়।

“পঞ্চম শ্রেণি থেকে গ্রন্থাগার ব্যবহারে অভ্যস্ত হলে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষতে্রে ব্যক্তিগত শিক্ষাসামগ্রী কেনার খরচ কমবে। তা ছাড়া,
গ্রন্থাগারগুলি যে ভাবে পাঠক হারাচ্ছে, সেই প্রবণতাও ভবিষ্যতে কমবে বলে আশা করা যেতে পারে।” শিবশঙ্কর মাইতি (গ্রন্থাগারিক সংগঠনের নেতা)

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত দাস বলেন, “পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদ আইনের ১৯৮৪ সালের সংশোধনে গ্রন্থাগারিককে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য করা হয়েছে। এই কাউন্সিলের সদস্য হন শিক্ষকেরাই। পর্ষদের আইন গ্রন্থাগারিককে শিক্ষকের মর্যাদা দিয়েছে। এমনকী, স্কুল সার্ভিস কমিশন নিয়োগের ক্ষেত্রে গ্রন্থাগারিক ও সহ শিক্ষকদের একই নম্বর বিভাজন ও নিয়োগ পদ্ধতি রাখা হয়েছে। কিন্তু গ্রন্থাগারিকদের অশিক্ষক বিভাগেই নিয়োগ করছে। এটি দুর্ভাগ্যজনক।” তাঁর আরও অভিযোগ, একই শিক্ষাগত যোগ্যতা ও পেশা সহায়ক বৃত্তিগত প্রশিক্ষণ তথা ডিগ্রি থাকলেও শিক্ষকদের বেতন কম দেওয়া হচ্ছে। অথচ পঞ্চম পে কমিশনে সমান বেতন দেওয়ার সুপারিশ করেছে।

সংগঠনের সম্পাদক জ্যোতির্ময় নাগ বলেন, “গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আমরা বিদ্যালয় গ্রন্থাগার পরিষেবা উন্নত করতে এবং আমাদের প্রতি সরকারের বৈষম্য দূর করতে রাজ্য শিক্ষা দফতর, স্কুল শিক্ষামন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একাধিকবার দাবিপত্র দিয়েছি।” এক গ্রন্থাগারিক সমীরণ মাইতি বলেন, “বহু স্কুল গ্রন্থাগারিকদের দিয়ে নিয়মিত ভাবে ক্লাসে পড়ানো হচ্ছে। আবার কোথাও করণিকের কাজও করানো হয়। অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করা সত্ত্বেও তাঁদের সম্মান ও অর্থ কোনওটাই দেওয়া হয় না।” সুব্রতবাবুর আবার দাবি, রাজ্যের বহু স্কুলে এই সমস্যা তৈরি হওয়ায় বর্ধমান, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনার মতো জেলায় স্কুল পরিদর্শককে দিয়ে এর বিরুদ্ধে নির্দেশ জারি করতে বাধ্য করা হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি শিবশঙ্কর মাইতি জানান, বিদ্যালয় গ্রন্থাগারগুলির পরিকাঠামোর যথাযথ উন্নয়ন-সহ নানা দাবি নিয়ে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। এ বিষয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) মৃন্ময় ঘোষ জানান, শিক্ষকের মর্যাদা ও বেতন বিষয়ে গ্রন্থাগারিকদের দাবি নিয়ে অনেক জটিলতা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে চলবে শিক্ষা প্রশাসন।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy