ব্যারাকপুর নোনাচন্দনপুকুরে বাড়ি ও দোকানে ভাঙচুর, মারধরের ঘটনায় তদন্ত শুরু করল সেনা বিভাগ। ঘটনার দু’দিন পরে বৃহস্পতিবার সকালে এক সেনা আধিকারিক ভাঙচুর হওয়া দোকানে যান। ভাঙচুরের ছবিও তুলে তোলেন তিনি। সেনার পক্ষ থেকে ভাঙচুরের ক্ষতিপূরণ এবং জখমদের চিকিৎসার খরচ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দোকানের মালিকেরা তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে যাঁরা দোকানে হামলা চালিয়েছিলেন, তাঁদের কয়েক জনের নাম জানা গিয়েছে। পুলিশ তদন্তে নেমে এ দিন ব্যারাকপুর সেনা ছাউনিতেও যায়। তাদের জানানো হয়, সেনার তরফেও বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশের তদন্তে সেনা সব রকম সাহায্য করবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
দোকানের সামনে একটি গাড়ি রাখা নিয়ে মঙ্গলবার গোলমাল শুরু হয়। গাড়িটি ছিল এক সেনা কর্তার। অভিযোগ, পরে এক দল সেনা জওয়ান পাশাপাশি তিন ভাইয়ের তিনটি দোকানে হামলা চালান। ভাঙচুর করা হয় তিনটি দোকানই। মারধর করা হয় মালিকদের। এক জনের মাথা ফাটে। পরে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।
বিষয়টি জানাজানি হতেই তোলপাড় হয় শহরে। সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়াতেও সেনার বিরুদ্ধে নিন্দা শুরু হয়। ক্ষোভ আঁচ করতে পেরে বৃহস্পতিবার উদ্যোগী হন সেনা কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ জানায়, এ দিন সকালে কর্নেল পদমর্যাদার এক আধিকারিক প্রহৃত রাজীব দত্তের দোকানে আসেন। তাঁর দোকানেই সব থেকে বেশি ভাঙচুর হয়েছিল। তিনি মোবাইল ফোনে দোকানের ছবি তোলেন। রাজীবের দুই দাদা চিরঞ্জিত এবং সঞ্জীব দত্তের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। দু’জনকেই জওয়ানেরা মারধর করেছিলেন বলে অভিযোগ। ওই কর্নেল রাজীব এবং তাঁর দাদাদের চিকিৎসার খরচ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। দোকান ভাঙচুরের জন্যও ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রস্তাব দেন তিনি। তা প্রত্যাখ্যান করেছেন তিন জনেই।
সেই সময়ে সেখানে ছিলেন ব্যারাকপুরের পুর প্রধান উত্তম দাস। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই কর্নেল তাঁকেও আলোচনায় ডাকেন। পরে তিনি সেনা ছাউনিতেও যান। তখন সেখানে যায় ব্যারাকপুর থানার পুলিশও। তাঁদেরও আলোচনায় ডাকা হয়। সেখানেই পুলিশ অভিযুক্ত জওয়ানদের নাম জানায়। পুলিশ জানিয়েছে, কর্নেল তাঁদের বলেন, ‘‘পুলিশ যেমন তদন্ত করছে করুক। কিন্তু আমাদের তরফ থেকেও তদন্ত শুরু হয়েছে। কারা সে দিন বিনা অনুমতিতে ছাউনির বাইরে বেরিয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে। যথাযথ পদক্ষেপও করা হবে।’’