Advertisement
E-Paper

গয়না বেচে চিকিৎসা কর, অনুরোধ বৃদ্ধার

হাবরার উঁচু আমতলা এলাকায় রাস্তার পাশে শুয়ে থাকা অপরিচিতার এই আবেদন শুনে আঁতকে ওঠেন দুই মহিলা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৫৭
অসহায়: হাসপাতালে শুয়ে বৃদ্ধা। নিজস্ব সংবাদদাতা 

অসহায়: হাসপাতালে শুয়ে বৃদ্ধা। নিজস্ব সংবাদদাতা 

এ দিকে এক বার শুনবে না— প্রথমটায় কানে ঢোকেনি এই আর্তি। দু’চার বার ডাকার পরে থমকে দাঁড়ান পথচলতি দুই মহিলা। দেখেন, রাস্তার পাশে আধশোয়া এক বৃদ্ধা। সম্ভবত অসুস্থ। মলিন পোশাক। কোলের কাছে রাখা ময়লা একটা পুঁটুলি।

দুই পথচারিনীকে ডেকে বৃদ্ধা পুঁটুলিটা দেখিয়ে বলেন, ‘‘এর মধ্যে কিছু সোনার গয়না আছে। সে সব আমার আর পরার বয়স নেই। ওগুলো বেচে ক’টা টাকার ব্যবস্থা করতে পার?’’

হাবরার উঁচু আমতলা এলাকায় রাস্তার পাশে শুয়ে থাকা অপরিচিতার এই আবেদন শুনে আঁতকে ওঠেন দুই মহিলা। গয়না বেচে কী করবে দিদা? প্রশ্ন শুনে বৃদ্ধা বলেন, ‘‘শরীর খুব খারাপ। আমাকে চিকিৎসার জন্য কোথাও একটু ভর্তি করে দিতে পার? যা খরচ হবে, ওই টাকায় মনে হয় হয়ে যাবে।’’

দুই মহিলা পুঁটুলি খোলেননি। বরং বৃদ্ধাকে নিয়ে সোজা হাজির হন হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। ভর্তি করা হয় তাঁকে।

দিন পনেরো আগের ঘটনা। বৃদ্ধা এখনও চিকিৎসাধীন। সুস্থ হওয়ার তেমন কোনও লক্ষণ নেই। হাসপাতাল সুপার শঙ্করলাল ঘোষ বলেন, ‘‘ওঁর পেটে জল জমেছে। শরীরের বিভিন্ন অংশে ঘা। উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন।’’ সে ক্ষেত্রে বৃদ্ধাকে কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো দরকার বলে মনে করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বহুবার বৃদ্ধার নাম-পরিচয় জানতে চেয়েছেন। বৃদ্ধা নিজের নাম বলেছেন, ‘দীপু’। কিন্তু ওই পর্যন্তই। ঠিকানা বলতে পারেননি। কোনও কারণে বলতে চাইছেন না, এমনটাও হতে পারে বলে মনে করছেন হাসপাতালের কেউ কেউ।

সঙ্গে থাকা পুঁটুলিতে মিলেছে সোনার হার, আংটি, কানের দুল। সে সব রাখা হয়েছে হাবরা থানার ‘সেফ কাস্টডি’তে। বৃদ্ধার কাছ থেকে পাওয়া একটি ডায়েরিতে একটি ফোন নম্বর ছিল। হাসপাতালের পক্ষ থেকে সেই ফোন নম্বরে ফোন করা হলে ফোন ধরেছেন কেউ। উত্তর মিলেছে, ‘‘এমন কোনও বৃদ্ধার সম্পর্কে আমরা কিছু জানি না। ওঁর সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই।’’ পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বৃদ্ধার বাড়ি বা পরিচিতদের খোঁজ করছে।যে দুই মহিলা বৃদ্ধাকে উদ্ধার করেছিলেন, তাঁরা জানিয়েছেন, বৃদ্ধা তাঁদের বলেছিলেন, পরিচারিকার কাজ করতেন এক বাড়িতে। অসুস্থ হওয়ার পরে তাঁকে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

সুপার বলেন, ‘‘আমাদের সাধ্য মতো চেষ্টা করছি, যাঁতে ওঁকে সুস্থ করে গয়নাগুলো ফিরিয়ে দিতে পারি।’’

ওটুকুটুই যে শেষ সম্বল!

treatment elederly Vagabond
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy