Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ঢোল যারই ফাঁসুক, সুর ভেঁজে তৈরি ব্যান্ড পার্টি

বাদ্যকর পাড়ায় এখন চলছে জোর প্র্যাকটিস। জেতা পার্টির চাহিদা আগেভাগে আন্দাজ করে একটা সুরের উপরেই জোর দিচ্ছেন ব্যান্ড পার্টির বাজনাদারেরা। ফেঁসে গেল ফেঁসে গেল কালীরামের ঢোলপ্রবল উৎসাহে বাজিয়ে চলেছেন তাঁরা। শুধু ভোটের ফল বেরোনোর পরে কালীরামের জায়গায় কার নাম বসাতে হবে, যে পার্টি ভাড়া করবে তারাই বলে দেয়, বলছেন বাজনাদারেরা।

মজুত আবির। আসানসোলে শৈলেন সরকারের তোলা ছবি।

মজুত আবির। আসানসোলে শৈলেন সরকারের তোলা ছবি।

সুশান্ত বণিক
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৪ ০১:৩২
Share: Save:

বাদ্যকর পাড়ায় এখন চলছে জোর প্র্যাকটিস। জেতা পার্টির চাহিদা আগেভাগে আন্দাজ করে একটা সুরের উপরেই জোর দিচ্ছেন ব্যান্ড পার্টির বাজনাদারেরা। ফেঁসে গেল ফেঁসে গেল কালীরামের ঢোলপ্রবল উৎসাহে বাজিয়ে চলেছেন তাঁরা। শুধু ভোটের ফল বেরোনোর পরে কালীরামের জায়গায় কার নাম বসাতে হবে, যে পার্টি ভাড়া করবে তারাই বলে দেয়, বলছেন বাজনাদারেরা।

মাঝে শুধু আর আজ, বৃহস্পতিবারের দিনটি। রাত পোহালেই বেরোবে ভোটের ফল। তার পরেই ডাক পড়বে এই ব্যান্ড পার্টির। দলের বাছবিচার তাদের নেই। যে-ই জিতুক, তাদের ডাক পড়বে বলে নিশ্চিত ব্যান্ড পার্টিগুলি। আসানসোল ও নিয়ামতপুরের বাদ্যকর পাড়া তাই এখন মহড়ায় সরগরম। ইতিমধ্যে নানা দলের তরফে তৈরি থাকার কথা তাদের বলে যাওয়া হয়েছে বলেও দাবি বাজনাদারদের। এক ব্যান্ড পার্টির সর্দার নারায়ণ বাদ্যকর বলেন, “বিজেপি-র বাবুল সুপ্রিয়র প্রচারে বার তিনেক দলবল নিয়ে বাজিয়ে এসেছি। দিন কয়েক আগে তাঁদের দলের লোকজন তৈরি থাকার জন্যও বলে গিয়েছেন।” ভোটের পরে তাঁদের প্রতি বারই ডাক পড়ে বলে জানিয়েছেন আসানসোলের বাদ্যকর পাড়ার প্রদীপ বাদ্যকর। তিনি বলেন, “আমাদের তাসা পার্টিও ভাড়ায় যায়। অন্তত সাত দিনের বায়না পাই।” প্রদীপ জানান, এ বারও অনেকেই ভাড়ায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে।

ভোটযুদ্ধে কে জিতবেন, কে হারবেন সে নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে আসানসোল বাজারে আবিরের আড়তদার বিজয় কুমার মজুত করেছেন প্রচুর আবির। তিনি জানান, সবুজ, লাল, গেরুয়াতিন রঙের আবিরই মজুত করেছেন। তিনি বলেন, “সবুজ রেখেছি প্রায় ৩ কুইন্ট্যাল। গেরুয়া ও লাল রেখেছি ২ কুইন্ট্যাল করে।” মিষ্টিমুখ ছাড়া তো আর বিজয়োৎসব হবে না। তাই হাত গুটিয়ে বসে নেই মিষ্টি ব্যবসায়ীরাও। আসানসোলের মিষ্টি বিক্রেতা মহেশচন্দ্র শর্মা বলেন, “এখন ভোটও একটা উৎসব। তাই এই উৎসবেও মিষ্টি থাকবে, এটা অবধারিত।” তিনি জানান, ভোটের দিন প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ মিষ্টি বিক্রি হয়েছে। ফল ঘোষণার দিনেও বেশি বিক্রি হয়। এ বারও তাই বেশি করেই মিষ্টি গড়বেন তিনি।

আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে জেতার বিষয়ে কমবেশি প্রত্যয়ী সিপিএম, বিজেপি, তৃণমূলতিন পক্ষই। জেতার আনন্দ কী ভাবে উদ্যাপন করবেন, এখনই বলতে না চাইলেও প্রাথমিক প্রস্তুতি সেরে রাখছে সব পক্ষই। তাঁরা ন্যূনতম ৫০ হাজার ভোটে জিতবেন দাবি করে তৃণমূলের বর্ধমান জেলা (শিল্পাঞ্চল) কমিটির কার্যকরী সভাপতি ভি শিবদাসন জানান, জয়ের পরে বিজয়োৎসবও হবে। বিজয় মিছিল করা যাবে না বলে প্রশাসনের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে জয় উদ্যাপনের জন্য আবির মজুত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

বিজেপি-র আসানসোল জেলা সভাপতি নির্মল কর্মকার আরও এক ধাপ এগিয়ে দাবি করেন, এ বার তাঁরা অন্তত ৬৫ হাজার ভোটে জিতবেন। তাঁর কথায়, “আমরা শুধু কুলটি থেকেই ৪০ হাজার ভোটে এগিয়ে থাকব।” তাঁর দাবি, এত বড় জয়ের পরে উৎসব করা থেকে সমর্থকদের বিরত করা কঠিন হবে। সিপিএমের আসানসোল জোনাল সম্পাদক পার্থ মুখোপাধ্যায় আবার বলেন, “আমরা ৩৫ হাজার ভোটে জিতব বলে মনে করছি।” তবে বিজয়োৎসব নিয়ে এখনই তাঁরা মাথা ঘামাতে চান না। কারণ, ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি ফল ঘোষণার পরেও হতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের। তাই কর্মীদের রক্ষা করাটাই এখন প্রথম কাজ, দাবি করেন পার্থবাবু।

জয়-পরাজয় নিয়ে এখন কোনও মন্তব্যেই যেতে নারাজ কংগ্রেসের বর্ধমান জেলা সহ-সভাপতি সুভাষ রায়। তিনি শুধু, “ফল আগের তুলনায় অনেক ভাল হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sushanta banik asansol band party
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE