পুলিশের লাঠি। ছবি: শৈলেন সরকার
দীর্ঘ দিন ধরে ভাঙা রাস্তা। পুজোর আগে অন্তত তা সারিয়ে দেওয়ার দাবিতে অবরোধের জন্য জড়ো হয়েছিলেন এলাকাবাসী। অবরোধ শুরুর আগেই আচমকা সেই জমায়েতে লাঠি চালাল পুলিশ। গ্রেফতারও করা হল এক জনকে। পুলিশ যদিও লাঠি চালানোর কথা মানতে চায়নি।
সোমবার আসানসোলের বার্নপুর রোডে বাসিন্দাদের উপরে এ ভাবে লাঠি চালানোর নিন্দা করেছে নানা মহল। আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়ের অভিযোগ, “এ ক্ষেত্রে আমি পুলিশকে সরাসরি দোষ দিতে চাই না। কারণ, শাসকদলের অঙ্গুলিহেলনে তারা এই কাজ করেছে।” তাঁর আরও বক্তব্য, “আসানসোলের রাস্তা নিয়ে যত কম বলা যায়, তত ভাল। কেন্দ্র ৬০টি বাস দিচ্ছে আসানসোলকে। কিন্তু মানুষই প্রশ্ন তুলেছেন, এই বাস চলবে কোন রাস্তায়?” আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ সিপিএমের বংশগোপাল চৌধুীরর দাবি, “পুলিশ এখন বড় অসহিষ্ণু। আন্দোলনরত ছাত্রনেতাকে পিটিয়ে মারা থেকে অবরোধে লাঠিসব ক্ষেত্রে এক ঘটনা।”
আসানসোলের ভগৎ সিংহ মোড় থেকে বার্নপুরের স্কব গেট পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তা গর্তে ভর্তি। বর্ষায় তা আরও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাস্তা সংস্কারের দাবিতে আসানসোল স্টেডিয়ামের কাছে এ দিন অবরোধ কর্মসূচি নেন তাঁরা। সকাল ১১টা নাগাদ বাসিন্দারা জড়ো হন। অবরোধ শুরুর আগেই গোলমাল বেধে যায়। জমায়েতের খবর পেয়ে হাজির হয় পুলিশ। প্রথমে বচসা, তার পরে লাঠি উঁচিয়ে বাসিন্দাদের তাড়া করে তারা। অভিযোগ, হাতের কাছে যাঁকে পেয়েছে, বেধড়ক লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। রাস্তায় গোলমাল পাকানোর অভিযোগে এক জনকে ধরা হয়। যদিও ধৃতের নাম পুলিশ জানাতে চায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা তথা চিকিৎসক প্রদীপকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিনা নোটিসে রাস্তা অবরোধ করা যেমন ঠিক নয়, তেমনই লাঠিপেটা করাও নিন্দনীয়। পুলিশ তো বুঝিয়েও অবরোধ তুলতে পারত!” এলাকার আর এক বাসিন্দা, প্রাক্তন কলেজ শিক্ষক অরুণাভ দাশগুপ্ত আবার বলেন, “এ রাজ্যে এখন যাঁরা প্রতিবাদ করছেন, তাঁরাই আক্রান্ত হচ্ছেন।”
তৃণমূলের বর্ধমানের জেলা (শিল্পাঞ্চল) কার্যকরী সভাপতি ভি শিবদাসনের দাবি, “প্রতিবাদ করার অধিকার প্রত্যেকের রয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে অবরোধ করা উচিত ছিল। শুনেছি, আচমকা এই আন্দোলন করতে গিয়ে কিছু লোক গোলমাল পাকিয়েছিল। তাই পুলিশ লাঠি চালিয়েছে।”
লাঠি চালানোর অভিযোগ উড়িয়ে আসানসোল-দুর্গাপুরের এডিসিপি (পশ্চিম) পঙ্কজ ত্রিবেদীর দাবি, “কিছু মানুষ মাইক বেঁধে বেআইনি জমায়েত করেছিলেন। এক মোটরবাইক আরোহীকে যেতে বাধা দেওয়া হলে পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে যায়। তখন ইট ছোড়ে জনতা। পুলিশ তাদের হঠিয়ে দিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy