Advertisement
E-Paper

বেডে লাশ, দুর্গন্ধ, মাছি, পাশে চলছে চিকিৎসা!

গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পরিবারের লোকেরাই তাঁকে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করান। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় অনুপমার। তারপর থেকে তাঁর দেহ পড়ে থেকেছে জরুরি বিভাগের শয্যাতেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৩৭
অবশেষে: সকাল ১০টার পর দেহ নিেয় গেল পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

অবশেষে: সকাল ১০টার পর দেহ নিেয় গেল পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

থানায় মৃতদেহ সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই। হাসপাতালেও নেই মর্গ। তাই প্রায় ২১ ঘণ্টা দেহ পড়ে রইল হাসপাতালের বেডে। পাশেই চিকিৎসা চলল এক হৃদরোগাক্রান্তের। পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ঘটনা।

গত বছর ফেব্রুয়ারিতে চালু হয়েছে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো এখনও গড়ে ওঠেনি। দেড় বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও তৈরি করা যায়নি মর্গ।

বৃহস্পতিবার রানিহাটি এলাকায় শ্বশুরবাড়ি থেকে অনুপমা দাস (২৫) নামে এক যুবতীকে উদ্ধার করা হয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায়। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পরিবারের লোকেরাই তাঁকে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করান। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় অনুপমার। তারপর থেকে তাঁর দেহ পড়ে থেকেছে জরুরি বিভাগের শয্যাতেই।

অন্য রোগীর পরিবারের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার বেলা ১টা থেকে শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত অনুপমার দেহ পড়েছিল। কোনও ব্যবস্থা নেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে আসেন শেখ জহিরুদ্দিন। মৃতদেহের পাশের শয্যায় রেখেই তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। জহিরুদ্দিনের মেয়ে জাহেরা বিবির অভিযোগ, ‘‘মৃতদেহ থেকে দুর্গন্ধ উঠছিল। মাছি উড়ছিল। নার্স বা হাসপাতাল কর্মীকে বলেও কোনও উপকার হয়নি।’’

সকাল ১০টা নাগাদ পাঁশকুড়া থানার পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ সরিয়ে নিয়ে যায়। এ দিন পাঁশকুড়া থানার তরফে দাবি করা হয়েছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মৃতদেহ উদ্ধারের আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু সারারাত থানায় মৃতদেহ রাখার ছিল না বলেই তা সকালে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। শুক্রবার সকালেই অনুপমা দেহ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে তমলুক জেলা হাসপাতালে।

একজন রোগীর পাশে এ ভাব ঘণ্টার পর ঘণ্টা মৃতদেহ ফেলে রাখা যেমন অস্বাস্থ্যকর। তেমনই মৃতদেহ এ ভাবে অবহেলায় ফেলে রাখাও অমানবিক। তাই হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষের দিকে আঙুল তুলছেন। মৃতদেহ পড়ে থাকার ঘটনা স্বীকার করেলেও দায় এড়াতে চেয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সুপার শচীন্দ্রনাথ রজক বলেন, ‘‘মৃত্যুর পর নিয়মমেনে কিছু সময় অপেক্ষা করতে হয়। তাই বেলা ১টায় মৃত্যুর পর সন্ধ্যায় পুলিশকে জানিয়েছিলাম। পুলিশ আসেনি। আমাদের এই হাসপাতালে মর্গ নেই। বাধ্য হয়েই বেডে রাখা হয়েছিল দেহ।’’

বছর তিনেক আগে পাঁশকুড়া শহরের রানিহাটি এলাকার বাসিন্দা শান্তনু দাসের সঙ্গে বিয়ে হয় অনুপমার। হাসপাতালে পরিবারের লোকেরা দাবি করেছিলেন আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন অনুপমা। এ দিন বিকেল পর্যন্ত থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলেই জানিয়েছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই শুরু হবে তদন্ত।

Emergency Department Dead Body Super Speciality Hospital
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy