ঋতুরাজ দাস। ফাইল চিত্র
তিনতলার চিলেকোঠায় কুকুর বাঁধার বেল্ট গলায় জড়িয়ে ঝুলছিল ছেলেটার নিথর দেহ।
মোটে বারো বছর বয়স। পড়ত ক্লাস সেভেনে। নাম ঋতুরাজ দাস (১২)। বাড়ি জিয়াগঞ্জ পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বেগমগঞ্জে।
পুলিশ প্রাথমিক ভাবে আত্মহত্যার মামলা রুজু করেছে। কিন্তু কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল, এ কী নিছকই আত্মহত্যা নাকি পিছনে ‘ব্লু হোয়েল’ জাতীয় কোনও নিষিদ্ধ অনলাইন গেমের হাতছানি ছিল, সোমবার রাত পর্যন্ত তা স্পষ্ট হয়নি।
ঋতুরাজের মা হৈমন্তী সরকার রঘুনাথগঞ্জ পূর্ব চক্রের দিঘির পাহাড় প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। ফি রবিবার সকালের ট্রেনে তিনি গান শিখতে কলকাতায় যান, ফেরেন সন্ধ্যায়। এই রবিবারও গিয়েছিলেন। জিয়াগঞ্জে স্টেশনে তাঁকে আনতে গিয়েছিলেন স্বামী সজল দাস। বাড়ি ফিরে সিঁড়ি থেকে প্রস্রাবের গন্ধ পেয়ে উপরে উঠে হৈমন্তী দেখেন, ছেলে ঝুলছে। তড়িঘড়ি নামিয়ে জিয়াগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে ‘মৃত’ ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন:সুচ-কাণ্ডের শিক্ষায় কন্যাশ্রী রক্ষার উদ্যোগ
বাবা-মা বাড়িতে না থাকলেও ছিলেন ঋতুরাজের ঠাকুমা। তিনি জানিয়েছেন, অন্য দিন ফুটবল মাঠে অন্তত এক ঘণ্টা কাটালেও সে দিন মিনিট বিশেক বাদে ফিরে এসেছিল ঋতুরাজ। ঠাকুমাকে টিভি চালিয়ে দিয়ে, তাঁর কাছ থেকে বিস্কুট নিয়ে সে নিজের ঘরের দিকে চলে যায়। তার পরে কখন সে এ ঘটনা ঘটাল, কেউ জানে না।
হৈমন্তী বলেন, ‘‘ওর কোনও ফোন ছিল না। কিন্তু আমার মোবাইল নিয়ে সর্বক্ষণ অনলাইন গেম খেলত। চাপা স্বভাবের ছেলে। অস্বাভাবিকতা চোখে পড়েনি কখনও। মানসিক অবসাদে ভুগছে বলেও মনে হয়নি।’’
ঋতুরাজ পড়ত জিয়াগঞ্জেরই একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে। সেটির শিক্ষক-শিক্ষিকারাও তার আচরণে কোনও অসংলগ্নতা দেখেননি। তাঁরাও অনেকে সন্দেহ করছেন অনলাইন গেমকে। হৈমন্তীও বলছেন, ‘‘ওই সব গেমের মোহে কোনও কায়দা করতে গিয়ে সিঁড়ির রেলিংয়ে পা রাখতে না পেরে ঝুলে গেল কি না কে জানে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy