Advertisement
E-Paper

ভাড়া ঘরে বিএমডব্লিউ, জালে পলাশ

ধরিয়ে দিল বিএমডব্লিউ! লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। কিন্তু, বারবার ঠিকানা বদলে দু’বছর ধরে মহারাষ্ট্র পুলিশের চোখে দিব্যি ধুলো দিয়ে বেড়াচ্ছিলেন তিনি। তবে, বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত ব্লক ছাতনার তস্য প্রত্যন্ত ঝাঁটিপাহাড়ির ভাড়া বাড়িতে বিএমডব্লিউ গাড়ি নিয়ে থাকতে এসেই বিপদ ডেকে আনলেন!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৩৮
ধৃত: বাঁকুড়া আদালতে পলাশ দেওঘরিয়া। নিজস্ব চিত্র

ধৃত: বাঁকুড়া আদালতে পলাশ দেওঘরিয়া। নিজস্ব চিত্র

ধরিয়ে দিল বিএমডব্লিউ!

লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। কিন্তু, বারবার ঠিকানা বদলে দু’বছর ধরে মহারাষ্ট্র পুলিশের চোখে দিব্যি ধুলো দিয়ে বেড়াচ্ছিলেন তিনি। তবে, বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত ব্লক ছাতনার তস্য প্রত্যন্ত ঝাঁটিপাহাড়ির ভাড়া বাড়িতে বিএমডব্লিউ গাড়ি নিয়ে থাকতে এসেই বিপদ ডেকে আনলেন! গাড়ির মালিকের পরিচয় অনুসন্ধান করতে নেমেই পুলিশের কাছে ফাঁস হয়ে গেল তাঁর যাবতীয় কীর্তি। ৪৭ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে যাঁর নামে, সেই কীর্তিমান পলাশ দেওঘরিয়াকে গ্রেফতার করল মহারাষ্ট্রের ঠানে সিটি কমিশনারেটের ডোম্বিভ্যালি থানার পুলিশ। সোমবার পলাশকে বাঁকুড়া আদালত থেকে ছ’দিনের ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে ঠানে রওনা দিয়েছে পুলিশ।

ডোম্বিভ্যালি থানার সাব ইনস্পেক্টর নীতিন মুদগুন জানান, পুরুলিয়ার কাশীপুর থানার তালাজুড়ির বাসিন্দা, বছর ছত্রিশের পলাশ ২০১১ সাল থেকে ডোম্বিভ্যালিতে নিজের ফ্ল্যাটে সস্ত্রীক থাকেন। সেখানেই ২০১৪ সালের মাঝামাঝি থেকে একটি ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থা খুলে পলাশ স্থানীয় বাসিন্দাদের ছ’মাসের মধ্যে দ্বিগুণ মুনাফার লোভ দেখিয়ে টাকা তুলতে থাকেন। নগদ হাতে পেতেই তার দ্বিগুণ অঙ্কের একটি করে চেক আমানতকারীদের হাতে তুলে দিতেন তিনি। এ ভাবেই প্রায় ৪৭ লক্ষ টাকা তোলেন পলাশ।

থানায়: এই সেই বিএমডব্লিউ গাড়ি। নিজস্ব চিত্র

পুলিশ সূত্রের খবর, ছ’মাস পার হওয়ার পরে আমানতকারীরা ব্যাঙ্কে ওই চেক ভাঙাতে গেলে সেটি ভুয়ো বলে জানতে পারেন। এই ঘটনার জেরে এলাকায় পলাশের বিরুদ্ধে জনরোষ শুরু হয়। স্ত্রী স্মৃতি অগ্রবালকে নিয়ে চম্পট দেন ওই যুবক। ডোম্বিভ্যালি থানায় প্রতারণার একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে ওই দম্পতির বিরুদ্ধে। বছর দুয়েক ধরে ডোম্বিভ্যালি থানার পুলিশ অন্তত বার পনেরো পুরুলিয়া-সহ এ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পলাশের খোঁজে তল্লাশি চালিয়েছে। কিন্তু, তিনি ছিলেন নাগালের বাইরেই।

তা হলে জালে এলেন কী করে পলাশ?

দিন দশেক আগে ঝাঁটিপাহাড়িতে এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাড়াটে হিসাবে উঠেছিলেন ওই দম্পতি। সঙ্গে এনেছিলেন একটি বিএমডব্লিউ গাড়ি। ওই গাড়ি দেখেই তাক লেগে যায় ঝাঁটিপাহাড়ির বাসিন্দাদের। মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে বিলাসবহুল গাড়ির খবর। খবর পেয়ে ছাতনা থানার ওসি সলিল পাল পলাশ সম্পর্কে জানতে কাশীপুর থানার ওসি পার্থ ভুঁইয়াকে ফোন করেন। পলাশের কীর্তির কথা জানাছিল কাশীপুর থানার। সব শুনে চমকে ওঠেন ছাতনার ওসি। পলাশকে থানায় আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়। সলিলবাবু ডোম্বিভ্যালি থানার যোগাযোগ করে জানতে পারেন স্মৃতিও প্রতারণায় অভিযুক্ত। তবে ততক্ষণে ভাড়া বাড়িতে বিএমডব্লিউ ফেলেই চম্পট দিয়েছেন ওই মহিলা! রবিবার ডোম্বিভ্যালি থানার পুলিশ এসে পলাশকে গ্রেফতার করে।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, ঠানে ছাড়াও কলকাতা ও আসানসোলে প্রতারনা চক্র ফেঁদেছিলেন পলাশ। সেগুলি সবই তদন্ত হবে। তবে পলাশ সম্পর্কে অনেক কিছুই এখনও ধোঁয়াশায় ঢাকা পুলিশের কাছে। নীতিন মুদগুন বলেন, “পলাশকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে আমরা সব বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারব।’’ নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে এ দিন আদালত চত্বরে পলাশ কিছু বলতে চাননি। তবে পুলিশকর্মীরা আড়ালে বলাবলি করছিলেন, দরকার কী ছিল বাপু ঝাঁটিপাহাড়ির মতো জায়গায় বিএডব্লিউ নিয়ে যাওয়ার! সেটাই তো কাল হল।

আপাতত সেই গাড়ি পড়ে ছাতনা থানা চত্বরে।

BMW Fraud
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy